নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের একটি হাসপাতালে রক্তের ক্রস ম্যাচিংয়ের জন্য নেওয়া হয় ৫ হাজার টাকা। রক্তদাতা এর প্রতিবাদ করলে তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের ৫ হাজার টাকার একটি রসিদসহ এ-সংক্রান্ত একটি পোস্ট ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রথমে বেশি বিল করলেও পরে টাকা কম রাখা হয়েছে।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ফেসবুক পোস্ট ও রক্তদাতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাজীপুর সদরের বাঘের বাজার এলাকার কাজী হাসপাতালে গতকাল শুক্রবার দুপুরে হার্টের সমস্যা নিয়ে ভর্তি মাইনুদ্দিন নামের এক রোগীকে রক্ত দিতে যান শাহাদাত খান নাঈম নামের এক যুবক। রক্ত দিয়ে কাউন্টারে গিয়ে দেখেন রোগীর স্বজনেরা বিল দিচ্ছে। সেখানে রসিদে মোট বিল লেখা রয়েছে ৪ হাজার ৯৫০ টাকা। রোগীর স্বজনেরা বিষয়টি বুঝতে না পারলেও রক্তদাতা শাহাদাত খান নাঈম অভিজ্ঞ হওয়ায় এত বিল নেওয়ার কারণ জানতে চান। তখন হাসপাতালের লোকজন তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। পরে বিলের রসিদসহ এ বিষয়ে তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। যা দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে।
রক্তদাতা শাহাদাত খান নাঈম অভিযোগ করে বলেন, ‘এত টাকা নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে অন্য হাসপাতালে চলে যেতে বলে। বিষয়টি আমি ব্লাড ডোনার সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে এই হাসপাতালকে বয়কট করি। কোনো ব্লাড ডোনার এই হাসপাতালে রক্ত দিতে যাবে না। আমরা বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছি।’
তাঁর দেখাদেখি পরে আরও কয়েকজন এই হাসপাতালের বিষয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে ফেসবুকে পোস্ট করেন। কামরুল হাসান জীবন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘বাঘের বাজারে কাজী হাসপাতালে এক রোগীকে রক্ত দিতে গেছিলাম আজকে। তাদের ক্রস ম্যাচিংয়ের বিল ভাউচার দেখে আমি রীতিমতো অবাক। রক্ত টানার জন্যও ৬০০ টাকা চার্জ। আবার বেড ভাড়া নাকি ১৮০০ টাকা। ভাবা যায় এগুলো? আবার কিডনি পরীক্ষাও দিছিল। পরে আমি এটা লাগবে না বলে এটা বাদ দিছি।’
সাফিন মাহমুদ রিফাত লিখেছেন, ‘বাঘের বাজারে কাজী হাসপাতালে এক রোগীকে রক্ত দিতে গেছিল আমার এক ভাই আজকে। তাদের ক্রস ম্যাচিংয়ের বিল ভাউচার দেখে আমি রীতিমতো অবাক। কী একটা অবস্থা, এরা ডাকাতের চেয়ে বড় ডাকাত!’
রুহুল আমিন নামের একজন তাঁর টাইমলাইনে লিখেছেন, ‘ডাকাতের কাণ্ড! বাঘের বাজারে কাজী হাসপাতালে এক রোগীকে রক্ত দিতে গেছিল আমার এক ভাই আজকে। তাদের ক্রস ম্যাচিংয়ের বিল-ভাউচার দেখে আমি রীতিমতো অবাক। শাহাদাতের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা!’
কাজী হাসপাতাল কমপ্লেক্সের মালিক কাজী লতিফ বলেন, ‘৪৯৫০ টাকা বিল ভাউচার করলেও রোগীর অবস্থা বুঝে ২৬০০ টাকা নেওয়া হয়েছে। এটা নিয়ে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. এরশাদ বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এমন হয়ে থাকলে খোঁজখবর নিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।