জুমবাংলা ডেস্ক : কাল সোমবার সারাদেশে পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। সরকারি হিসেবে এ বছর এক কোটির উপরে পশু কুরবানি হতে পারে। এত বেশি গরু-ছাগল কুরবানি এবং তা পরিষ্কার করতে হলে দরকার হবে প্রচুর পানির। এদিকে আবার দেশে চলছে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব। ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণু বহনকারী এডিস মশা জন্ম নেয় পানিতে। তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসতে পারে তাতে করে কি এডিস মশা বাড়তে পারে? ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বাড়তি চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে?
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ-নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক ডা. মেহেরজাদী সাবরিনা ফ্লোরা বিবিসি বাংলাকে বলেন, পশু কুরবানির পর ব্যবহৃত পানি যদি কোথাও জমে থাকে তাহলে তা নিয়ে উদ্বেগের কারণ রয়েছে। যদি ধোয়ার পর পানিটা ড্রেনেজ সিস্টেমে চলে যায় তাহলে কিন্তু কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু যদি কোথাও জমে থাকে তাহলে আশঙ্কা থাকবে। তাই মানুষজনকে সতর্ক করার যে মেসেজটা আমরা বারবার দিচ্ছি সেটা হলো কোথাও যেন পানি জমতে না পারে। জমে থাকা পানিতে যেকোনো ধরনের মশা বংশ বৃদ্ধি করতে পারে।
এবারের ঈদুল আজহার উৎসব কিছুটা হলেও ম্লান হয়ে যাচ্ছে এডিস মশা বাহিত ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপে। বাংলাদেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার হিসেবে গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে নতুন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন দুই হাজার তিনশ ৩৮ জন।
রাজধানী ভাটারা এলাকার বাসিন্দা আক্তার জাহান। তিনি সেখানকার একটি আবাসিক এলাকার ফ্ল্যাট মালিক সমিতির সদস্য। তিনি বলেন, ডেঙ্গুর কথা মাথায় রেখে এবার তারা পশু কুরবানির সময় বর্জ্য অপসারণে বিশেষ মনোযোগী হচ্ছেন।
তবে নিরাপদ উপায়ে পশুর বর্জ্য অপসারণে নগরের বাসিন্দারা সবাই কতটা দায়িত্ব নেবেন, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ঢাকা উত্তরের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মমিনুর রহমান বলেন, কুরবানির পশুর বর্জ্য সরিয়ে ফেলতে ব্যাপক পরিকল্পনা করেছি। পশুর হাট থেকে শুরু করে আমরা মশা নিধনের কাজ জোরদার করেছি। এখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষজন আসবে। সেখানে পানি থাকতে পারে। গরুর খাবারের জন্য, বা যারা আসছেন তাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের পাত্র ওখানে ব্যবহৃত হয়। ওই সমস্ত জায়গায় যাতে এডিস মশা বিস্তার না হতে পারে- সেজন্য শুরু থেকেই আমরা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সাথে সাথে মশক নিধনের কার্যক্রমও করছি।
ঢাকা দক্ষিণের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডোর মো. জাহিদ হোসেন জানান, তারা বর্জ্য সংক্রান্ত কয়েকটি দায়িত্ব সম্পর্কে নগরবাসীদের পরামর্শ দিচ্ছেন। তিনি বলেন, আমরা বলছি সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত স্থানে পশু জবাই করবেন। যত্রতত্র তা করবেন না। গোবরসহ কোন বর্জ্য ড্রেনে ফেলবেন না। জবাই করার পর গোবর বা অন্যান্য উচ্ছিষ্ট ব্যাগে ভরে ডাস্টবিনে ফেলুন। পাকা স্থানে জবাই করলে, পশুর রক্ত ডেটল দিয়ে ধুয়ে দিতে হবে। পরে আমরা সেখানে ব্লিচিং ছিটিয়ে দেবো।
এবারের ঈদের ছুটিতে যারা বাড়ি যাবেন তাদের জন্যে কয়েকটি পরামর্শ দিচ্ছেনমো. জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, বাসা তালাবন্ধ করে যাওয়ার আগে নিশ্চিত হোন যে কোথাও কোনো পাত্রে পানি না থাকে। কমোড বা টয়লেটের প্যানে যে পানিটা আছে, যাবার আগে সেখানে একটু জীবাণু নাশক বা কেরোসিন ছিটিয়ে যাবেন। একটু এরোসল স্প্রে করে যাবেন। বালতি ও অন্যান্য পাত্রকে উপুড় করে রাখবেন। তাহলে সেখানে মশা ডিম পাড়তে পারবে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।