জুমবাংলা ডেস্ক: রাজারবাগের পীর দিল্লুর রহমান ও তার প্রতিষ্ঠানের সম্পদ নির্ণয়, সম্পদের উৎস এবং তার পৃষ্ঠপোষকতায় কোনো জঙ্গি সংগঠন আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছেন সর্বোচ্চ আদালত।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতের জন্য যে আবেদন হয়েছিল, মঙ্গলবার তা খারিজ করে দিয়েছেন বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের ভার্চুয়াল আপিল বেঞ্চ।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না। আর হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মুরাদ রেজা।
পরে জেড আই খান পান্না বলেন, আবেদন খারিজ মানে হাইকোর্টের আদেশ বহাল। ওই দরবার শরিফের পীরের বিরুদ্ধে দুদক আর পুলিশের তদন্ত চলবে।
দেশের ছয়টি জেলায় ৩৪টি মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ এনে রাজারবাগের পীর দিল্লুর ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে আট ব্যক্তি গত মাসে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল ছাড়াও পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট, অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) তিনটি নির্দেশনা দেন : ১. পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটকে নির্দেশ দেওয়া হয়, কথিত পীর দিল্লুর রহমান ও তার পৃষ্ঠপোষকতায় কোনো জঙ্গি সংগঠন আছে কিনা সে বিষয়ে আগামী ৩০ নভেম্বরের আগে আদালতে প্রতিবেদন দিতে হবে।
২. দুদককে নির্দেশ দেওয়া হয়, পীর দিল্লুর ও তার প্রতিষ্ঠানের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে যেসব সম্পদ রয়েছে তা নির্ণয়ের পাশাপাশি সম্পদের উৎস খতিয়ে দেখে ৩০ নভেম্বরের আগে আদালতে প্রতিবেদন দিতে হবে।
৩. আর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেওয়া হয় রিট আবেদনকারীদের বিরুদ্ধে যারা হয়রানিমূলক মামলা করেছেন তাদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে হবে।
হাইকোর্টের এসব আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন মফিজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি, যিনি রিট আবেদনকারীদের বিরুদ্ধে করা এক মামলার বাদী। ২৩ সেপ্টেম্বর আবেদনটি চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন আদালত হাইকোর্টের আদেশে হস্তক্ষেপ না করে আবেদনটি ২৪ অক্টোবর আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠায়।
রবিবার আপিল বিভাগে আবেদনটির ওপর শুনানি শেষে মঙ্গলবার আদেশ হলো।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাজারবাগ পীর ও তার চক্র কর্তৃক দেশব্যাপী দায়ের করা গায়েবি মামলার তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করে ভুক্তভোগী আট পরিবার। ৭ বছরের শিশু, নারী, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, মাদরাসার শিক্ষক, ব্যবসায়ীসহ আটজন ভুক্তভোগী আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী শিশির মনির এ রিট দায়ের করেন। রিট আবেদনকারীরা হলেন মো. আবদুল কাদের, মাহবুবুর রহমান, জয়নাল আবেদীন, মো. আলা উদ্দিন, জিন্নাত আলী, আইয়ুবুর হাসান সিয়াম, নাজমা আক্তার ও নার্গিস আক্তার।
আবেদনে রাজারবাগ পীর ও তার চক্র দ্বারা দেশব্যাপী আবেদনকারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও মানহানিকর মামলা দায়েরের বিরুদ্ধে কেন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, এই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়। এছাড়া রাজারবাগ শরীফ ও পীর দিল্লুর রহমানের সম্পত্তি এবং ব্যাংক হিসাব তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে দুদক চেয়ারম্যানের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়। আবেদনকারীদের বিরুদ্ধে সারা দেশে করা মামলার বিষয়ে একটি তদন্ত চাওয়া হয়। রিট আবেদনে স্বরাষ্ট্র সচিব ও আইজিপিসহ ২০ জনকে বিবাদী করা হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।