আন্তর্জাতিক ডেস্ক: এও সম্ভব! রান্না হয় বাংলাদেশে, কিন্তু খেতে বসেন ভারতের মাটিতে! এক বাড়ির চুলা বাংলাদেশে আর অন্য অংশ ভারতে? শুনলে যে কেউ অবাক হবেন। কিন্তু, এটাই সত্যি। ঘটনাটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাগদা ব্লকের বয়রা গ্রামের। স্বাধীনতার এতবছর পরেও রেজাউল মণ্ডল ও তাঁর পরিবার সীমান্তের এপার-ওপারের এই ‘গোলকধাঁধার’ মধ্যেই বসবাস করছেন। রেজাউল ভারতের বাগদা ব্লকের বয়রা গ্রামের বাসিন্দা। আবার তিনি বাংলাদেশে যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার গদাধরপুরের বাসিন্দা হিসাবেও পরিচিত।
তবে, দু’পারের সীমান্তরক্ষীদের কাছে অবশ্য এই মণ্ডল পরিবারের পরিচিতি ৩৯/১১ পিলারের বাসিন্দা হিসেবে। দেশ ভাগের সময়ে বাড়ির উঠোনের মাঝখান দিয়েই চলে গিয়েছে ‘পার্টিশন রেখা’ (India Bangladesh Border)। ফলে বসতবাড়ি অর্ধেক পরে যায় ভারতে। বাকি অর্ধেক চলে যায় বাংলাদেশের মধ্যে। কাঁটাতারের বেড়া না থাকলেও, দিনরাত চলে বিএসএফ আর বিজিবি-র করা নজরদারি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মণ্ডল পরিবারকে দেশ ভাগের সময় বিস্তর বিষয় সম্পত্তি খোয়াতে হয়েছিল। এখন সম্বল বলতে সীমান্তের মধ্যবর্তী এলাকায় ১৬ বিঘা জমি। এর সাত বিঘার অবস্থান বাংলাদেশে, অপর নয় বিঘা ভারতের মধ্যে অবস্থিত।
অতীতে চাষের জন্য দু’দেশের অনুমতি নিয়ে সাড়ে দশ মন ধান ভারতে নিয়ে আসতে পারতেন তিনি। সীমান্তরক্ষীদের অনুমতির সেই কাগজপত্র আজও সযত্নে আগলে রেখেছেন রেজাউল। কিন্তু বর্তমান নিয়মে বাংলাদেশের ফসল বাংলাদেশের বাজারেই বিক্রি করে দিতে হয় তাঁকে। শুধু তাই নয়, স্থানীয় চৌগাছার নয় নম্বর স্বরূপদাহ ইউনিয়ন পরিষদে নিয়মিত ট্যাক্স জমা দিতে হয় তাঁকে।
ভারতেও ট্যাক্স দিতে হয় রেজাউলকে। উত্তর বয়রা গ্রামে প্রায় ৬০ পরিবারের বাস। সব বাড়িই সীমান্ত ঘেঁষা। কিন্তু অর্ধেক ভারতে, অর্ধেক বাংলাদেশের সীমারেখার এই গোলকধাঁধা কেবলমাত্র মণ্ডল পরিবারের। পারিবারিক দিক থেকেও সীমান্তের দুই দিকেই এই পরিবার রয়েছে। রেজউল মণ্ডল মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন যশোরে।
অন্যদিকে, এক ছেলে হাফিজুর কাজ করেন কলকাতা পুলিশে। বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠানে আর পাঁচটা পরিবারের মতোই একসঙ্গে কাটান তাঁরা। বাংলাদেশ ও ভারতের স্বাধীনতার দীর্ঘ কয়েক বছর অতিক্রান্ত। মণ্ডল পরিবার সীমান্তে সুখেই ঘর সংসার করছেন। এলাকায় শান্তিপ্রিয়-সুখী পরিবার হিসেবেই তাঁরা পরিচিত।-এই সময়
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।