জুমবাংলা ডেস্ক : শৃঙ্খলা বহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অপরাধে ছয়জনকে স্থায়ী বহিষ্কারসহ ৩২ শিক্ষার্থীকে শাস্তি দিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) কর্তৃপক্ষ। তাদের মধ্যে সাবেক ও বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগেরই ২৫ জন নেতা-কর্মী। বাকি সাত জন সাধারণ শিক্ষার্থী। তবে কোন অপরাধে তাদেরকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তা বিস্তারিত জানানো হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে অপরাধের ধরণ ও মাত্রাভেদে ৬ জনকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। ছাত্রত্ব না থাকলে তাদের সনদ বাতিল হবে। এ ছাড়া ৫ জনকে দুই বছর, চারজনকে ১ বছর, দুজনকে ৬ মাস, একজনকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, একজনকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং ১৩ জনের আবাসিকতা বাতিল করা হয়েছে।
শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, স্থায়ী বহিষ্কৃতদের ৬ জনই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। তারা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়া, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু, বর্তমান সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু, সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত কুমার রায় ও ছাত্রলীগ কর্মী মিশকাত হাসান।
দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে ৫ জনকে। তাদের মধ্যে চারজনই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। তারা হলেন- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম, নবাব আব্দুল লতিফ হলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম রেজা, ছাত্রলীগের কর্মী আব্দুল্লাহ আত তাসরিফ ও মুজাহিদ আল হাসান। এ ছাড়া আরবি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আরিফুল ইসলামকেও দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
এক বছরের জন্য বহিষ্কৃত চারজনের তিনজনই ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী। তারা হলেন- রোকেয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলফি শাহরিন আরিয়ানা, মাদার বখ্শ হলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কিশোর পাল ও ছাত্রলীগ কর্মী জারিফা আহনাফ ইলমা। অপর শিক্ষার্থী হলেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আহসানুল হক মিলন।
৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে ছাত্রলীগ কর্মী আনিকা আলম ঊষা ও মরিয়ম আক্তার শান্তাকে। এ ছাড়া ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অন্তর বিশ্বাসকে। একই বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল হোসেন নাবিলকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
অন্যদিকে ১৩ শিক্ষার্থীর হলের আবাসিকতা বাতিল করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১০ জনই ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী। তারা হলেন- বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হল ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তাজরীন আহমেদ খান মেধা, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশা খাতুন ও নবনীতা বিশ্বাস, সাংস্কৃতিক সম্পাদক নুসরাত জাহান পাপড়ি, মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা সম্পাদক নুর ই জান্নাত কথা, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ফারিনা জামান মিম, সহ-সম্পাদক লিমা খাতুন, উপ-প্রচার সম্পাদক বাবলি আক্তার, দপ্তর সম্পাদক জাফরিন খান প্রিয়া ও সাংগঠনিক সম্পাদক রাইতাহ ইসলাম। এ ছাড়া চারুকলা অনুষদের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বাবলী ইসলাম নিঝুম, সমাজকর্ম বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের কাজী উর্বি ইয়াসমিন রুপ এবং ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আফরিদা বিনতে ইকবালের আবাসিকতাও বাতিল করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের। তবে তাদের রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, বরং সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।