জুমবাংলা ডেস্ক : একদিকে পুকুরে টলমল করছে পানি অন্যদিকে মাচায় ঝুলে আছে ডগায় ডগায় ছোট বড় হাজার হাজার লাউ। দেখলে মনে হবে যেন এ এক লাউয়ের রাজ্য। এমনি দৃশ্যের দেখা মেলে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেংরা গ্রামে।
এ গ্রামেরই আক্তার-মর্জিনা দম্পতি খোলা জমি এবং পুকুরপাড়ে বিষমুক্ত হাইব্রিড ডায়না লাউ চাষ করে মাসে লাখ টাকা আয় করেছেন। এ দম্পতি এখন লাউয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করে এলাকায় আদর্শ লাউ এবং সবজি চাষি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
সরেজমিন উপজেলার টেংরা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ৫ বিঘা জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে বিশাল এক পুকুর। পুকুরপাড় এবং খোলা জমিতে ডায়না হাইব্রিড (লালতীর) চাষ করেছেন আক্তার মর্জিনা দম্পতি। হাজার হাজার লাউ ঝুলছে গাছে ডগায় ডগায়। তার পুকুরপাড় যেন এক লাউ এবং সবুজের সমারোহ।
স্থানীয়রা জানান, আক্তার-মর্জিনা দম্পতি লাউ চাষ করে তাদের সুদিন ফিরিয়ে এনেছে এবং অনেকেই তাদের কাছে লাউ চাষের পরামর্শের জন্য যাচ্ছেন। তাদের লাউ ক্ষেতেও বেশ ভালো।
লাউচাষি মর্জিনা জানান, দুই বছর আগেও তাদের সংসারে টানাপোড়েন ছিল। কিন্তু বর্তমানে লাউ চাষ করে ভালো টাকা আয় হচ্ছে। বর্তমানে জৈবসার ব্যবহার করে ভালো লাউ এবং শাকসবজি উৎপাদন হচ্ছে। যার ফলে সংসারও ভালো চলছে।এখন আর সংসারে কোন অভাব নেই।
সফল লাউচাষি আক্তারুজ্জামান জানান, দীর্ঘদিন থেকে গরুর খামারের পাশাপাশি নিজ জমির পুকুরপাড় এবং পাশের খোলা জমিতে আধুনিক পদ্ধতিতে জৈব সর ব্যবহার করে মাচা (ঝাঙ্গি) করে লাউ চাষ করেছেন। গত বছরও তিনি লাউ চাষ করে প্রায় ১০ লাখ টাকা আয় করেছেন। এ বছর জমির মাচা করতে বাঁশ, তার, সুতা, বীজ, কামলা বাবদ প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তিনি এ পর্যন্ত ৫ লাখ টাকার লাউ বিক্রি করেছেন এবং আরো ১৫ লাখ টাকার লাউ বিক্রি হবে বলে আশা করছেন।
লাউ শেষ হলে সেই মাচায় শশা চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন কৃষক আক্তারুজ্জামান। বিষমুক্ত সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে জৈবসার ব্যবহার করে তিনি লাউ চাষ করেন। প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে পোকা মাকড় দমন করেন তিনি।
তিনি আরো জানান, এ কাজে তাকে তার স্ত্রী মরজিনা সার্বিক সহযোগিতা করছেন। তার পুকুরপাড় এবং খোলা জায়গায় লাউ চাষে সাফল্য দেখে এলাকার কৃষকরা প্রতিনিয়ত তার কাছে পরামর্শ নিতে আসেন।আগে প্লাম্বারের কাজ করতেন।গত দুই বছর ধরে লাউ চাষ করেছেন। এখন তার আর তেমন কোনো অভাব নেই।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুমাইয়া সুলতানা বন্যা জানান, সবজি চাষিদের যে কোনো সমস্যা দ্রুত সমাধানে পরামর্শ প্রদান করা হয়ে থাকে।
তিনি জানান, বৃষ্টি বেশি হলে লাউসহ অন্যান্য সবজি ফসলের ক্ষতি হয়। এ ক্ষতি পোষানো যায় না। তাই সবজি জাতীয় ফসলের বিমা করা প্রয়োজন। কৃষকদের অধুনিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। কৃষি উন্নয়নে সহজ শর্তে কৃষি ঋণের ব্যবস্থা কারা প্রয়োজন। টেংরা গ্রামের আক্তারুজ্জামান এখন সফল সবজি চাষি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। -ডেইলি-বাংলাদেশ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।