লাইফস্টাইল ডেস্ক : এখন শীতকাল। এ সময় অনেকেই সর্দি-কাশি জ্বরে আক্রান্ত হন।সর্দি তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে গেলেও কাশি কিন্তু সহজে ভালো হতে চায় না। আবার জ্বর ভালো হলেও কফ বের হচ্ছে না। বুকে খুকখুক কাশি।বিরক্তিকর ও যন্ত্রণাদায়ক একটি ব্যাপার হয় এই মৌসুমে।
এখন যে সর্দিজ্বর হচ্ছে এটি মূলত ভাইরাসজনিত একটি সাধারণ সংক্রামক রোগ।বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শ্বাসনালিতে ‘রাইনো ভাইরাস’-এর সংক্রমণের ফলে সর্দিজ্বর হয়। এ ছাড়া ‘কোরোনা ভাইরাস’, ‘প্যারা-ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস’, ‘রেসপিরেটরি সিনসাইটিয়াল ভাইরাস’-এর সংক্রমণেও সর্দিজ্বর হতে পারে।
এ বিষয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোস্তফা কামাল রউফ বলেন, আমাদের দেশে সাধারণত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, প্রটোজোয়া, ফাঙ্গাস ও আরও কিছু কারণে সাধারণত রোগ হয়ে থাকে। এদের মাঝে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে শুধুমাত্র ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগের ক্ষেত্রে। ভাইরাস, ছত্রাক বা ফাঙ্গাসজনিত রোগের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক কোনো কাজ করে না। এটি ব্যবহার করলে রোগীর অপকার ছাড়া কিছুই হবে না।
শীতে ঠান্ডা লাগলে এবং ভালো হতে দেরি হলে অনেকেই অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই অনেকে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করেন।এই প্রবণতা গ্রামগঞ্জে খুবই বেশি।অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় ওষুধের দোকানিরাও রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে থাকেন।
এ সম্পর্কে ডা. মোস্তফা কামাল রউফ বলেন, ভাইরাসজনিত সর্দিকাশি ও জ্বরের ক্ষেত্রে যদি রোগী কোনো ওষুধ ব্যবহার না করে সেক্ষেত্রেও অসুবিধা নেই। কারণ ভাইরাসজনিত রোগ ছয় থেকে সাতদিনের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই ভালো হয়ে যায়। তবে রোগীর উচিত হবে রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া। কারণ কোনটি ভাইরাসজনিত আর কোনটি অন্যকিছুতে হয়েছে সেটি চিকিৎসক ছাড়া বুঝা যাবে না।
ঠান্ডাজনিত সর্দিকাশি ও জ্বরের সময় যা করা যাবে না-
যেখানে-সেখানে নাক ঝাড়া যাবে না। হাঁচি দেয়ার সময় রুমাল বা কনুই বাঁকা করে জামার আস্তিনে নাক-মুখ ঢেকে নিতে হবে। হাতে সর্দি বা হাঁচি লাগলে দ্রুত ধুয়ে ফেলতে হবে। হাত দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে হাঁচি দিলে, সেই হাত দিয়ে কোনো কিছু ধরার আগে অবশ্যই তা ভালোভাবে সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। ব্যবহৃত টিস্যু পেপার যেখানে-সেখানে না ফেলে ডাস্টবিনে ফেলতে হবে। ভাইরাসজনিত সর্দিজ্বরে আক্রান্ত হলে স্কুল-কলেজ বা অফিসে না যাওয়াই ভালো। এতে এ রোগের ছড়িয়ে পড়া অনেকাংশেই প্রতিরোধ করা সম্ভব।
সর্দি, কাশি ও গলাব্যথায় কী করবেন?
সর্দি, কাশি বা সামান্য গলাব্যথা এমন কোনো বড় ব্যাপার নয়। তবে একবার ঠান্ডা লাগলে, তা সারতে সপ্তাহ লাগবেই। আর কাশি ভালো হতে আরও বেশ কয়েকদিন লাগবে। এতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। এ ধরনের কাশি একটি নির্দিষ্ট সময় পর আপনাআপনি ভালো হয়ে যায়। তবে কাশির সঙ্গে যদি জ্বর হয়, তাহলে কিন্তু গুরুত্ব দিতে হবে। এই ক্ষেত্রে চিকিৎসকের কাছে যাওয়াই শ্রেয়। মাথায় টুপি বা মাফলার পরতে ভুলবেন না। ধুলোবালি এড়িয়ে চলুন। বাইরে গেলে মাস্ক পরে নিন। কুসুমগরম পানি দিয়ে গোসল করুন। খুব ভোরে বা বেলা পড়ে গেলে গোসল করা থেকে বিরত থাকুন। ফ্রিজের ঠান্ডা খাবার খাবেন না। কুসুমগরম পানি পান করতে পারলে ভালো হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।