বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : পনের’শ কোটি বছর আগে এই মহাবিশ্বের কোনো অস্তিত্ব ছিল না। এক মহাজাগতিক বিস্ফোরণের মাধ্যমে সৃষ্টি হয় সব কণা, প্রতিকণা ও পদার্থ। সৃষ্টি হয় ছায়াপথ, নক্ষত্র, গ্রহ ও উপগ্রহ। মহাজগৎ সৃষ্টির এই তত্ত্বকে বলা হয় ‘দ্য বিগ ব্যাং থিওরি’।
এরপর স্ফীতি তত্ত্ব অনুযায়ী মহাবিশ্ব নাটকীয়ভাবে বিগব্যাং পরবর্তী সেকেন্ডের অতিক্ষুদ্রাংশের মধ্যে বিপুলভাবে সম্প্রসারিত হয়। বলা হয়, মাত্র এক সেকেন্ডের ব্যবধানে শূন্য থেকে ২ বিলিয়ন বিলিয়ন কিলোমিটার বিস্তৃত হয়। এখনও পর্যন্ত এটি সম্প্রসারিত হচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা এখন খুঁজছে ‘বিগ ব্যাং’ কেন হয়েছিল? এর পূর্বে কি ছিল? আমরা দেখব বিগ ব্যাং বিস্ফোরণের প্রথম কয়েক মুহুর্তে কি ঘটেছিল? মহাবিশ্বে কত হাজার কোটি গ্যালাক্সি বা ছায়াপথ আছে তার কোন হিসাব নাই। আবার এসব ছায়াপথে আছে হাজার কোটি নক্ষত্র। ছায়াপথ সাধারণত গুচ্ছ বা ঝাঁকে ঝাঁকে থাকে। আমাদের ছায়াপথটি প্রায় ৩০ টি ছায়াপথের গুচ্ছের একটি। যেটি স্থানীয় গ্রুপ হিসেবে পরিচিত। আমাদের সবচেয়ে কাছের ছায়াপথ অ্যানড্রোমেডার সঙ্গে আমাদের দূরত্ব ২২ লাখ আলোকবর্ষ।
মহাজাগতিক বিস্ফোরণের মাত্র এক সেকেন্ডের মধ্যে সব কিছু তৈরির উপাদান সৃষ্টি হয়। কিন্তু এরপর আরো দুশ কোটি বছর লাগে প্রথম নক্ষত্র ও ছায়াপথ গঠন শুরু হতে। কেন এমনটি হয়েছিল? কারণ বিষ্ফোরণের এক সেকেন্ডের এক ট্রিলিয়ন ভাগের এক ভাগ, সেখান থেকে এক ট্রিলিয়ন ভাগের একভাগ, সেখান থেকে এক মিলিয়ন ভাগের এক ভাগ (১০-৪৩ সেকেন্ড) পর শিশু মহাবিশ্বের তাপমাত্রা হয়ে যায় এক লাখ বিলিয়ন বিলিয়ন বিলিয়ন সেলসিয়াস। এটি দ্রুত বিস্তৃত হতে শুরু করে এবং তাপ বিকিরণে ভরে যায়। বিশেষকরে আলো ও তাপের সমন্বয়ে। এতে মধ্যাকর্ষণ শক্তি স্বতন্ত্র একটি শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়।
তারপর এক সেকেন্ডের এক ট্রিলিয়ন ভাগের এক ভাগ, সেখান থেকে ১০ হাজার ট্রিলিয়ন ভাগের একভাগ (১০-৩২ সেকেন্ড) পর সম্প্রসারণ কমে আসে। এরপর সবচেয়ে ক্ষুদ্র কণাটি দেখা যায়, যা আস্তে আস্তে অতিপারমাণবিক কণা তৈরি করে। এর এক সেকেন্ডের ১০ মিলিয়ন ভাগের এক ভাগ পর (১০-৫ সেকেন্ড) অতিপারমাণবিক কণা থেকে গঠিত হয় প্রোটন ও নিউট্রোন। যা পরমাণুর নিউক্লিয়াসের দুই উপাদান।
তার ১০০ সেকেন্ড পর তাপমাত্রা কমে হয় ১ বিলিয়ন সেলসিয়াস। মহাবিশ্বের শূন্যস্থান এবার প্রোটন, নিউট্রন এবং ইলেকট্রনে ভরে উঠে। যা পরমাণু তৈরির তিনটি উপাদান। এর পরবর্তী ৩২ হাজার বছর সময়ে তাপমাত্রার বিকিরণে প্রোটন ও নিউট্রোনে যে প্রতিক্রিয়া হয় তা থেকে গঠন হয় হাইড্রোজেন ও হেলিয়ামের নিউক্লিয়াস। দুটি সাধারণ রাসায়নিক উপাদান।
তারও একশত বছর পর মহাবিশ্ব স্বচ্ছ হয়ে উঠে এবং তাপমাত্রা আরো কমে হয় প্রায় ৪ হাজার সেলসিয়াস। পরামণু তৈরির জন্য যা যথেষ্ট। এরপর মধ্যাকর্ষণ শক্তি এগুলোকে একসাথ করে পদার্থের গুচ্ছ তৈরি করে। এর দুইশত বছর পর হাইড্রোজেন ও হেলিয়াম গ্যাসের ধোঁয়া থেকে মহাবিশ্বের প্রথম নক্ষণ ও ছায়াপথ গঠন হতে শুরু করে।
সূত্র: রিডার্সডাইজেস্ট
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।