৩৩৯ রানের বিশাল লক্ষ্য। এই লক্ষ্য পাড়ি দিতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারানোতে মনে হচ্ছিল আজ বুঝি লঙ্কানদের সামনে দাঁড়াতেই পারবে না ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২২ রানে দুই উইকেট এবং ৮৪ রানে ৪ উইকেট পড়ার পর এমন ভাবাটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু ক্রিকেট তো গৌরবময় অনিশ্চয়তারই খেলা। মিডল অর্ডারে নিকোলাস পুরানের ব্যাটে ভর করে শেষ পর্যন্ত দারুণ লড়াই করলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যদিও হেরে গেছে তারা। তবে ব্যবধানটা মাত্র ২৩ রানের।
চেস্টার লি স্ট্রিটে দ্বাদশ বিশ্বকাপের ৩৯তম ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে অভিষকা ফার্নান্দোর শতকে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারান লঙ্কানদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৩৮ রান।
শ্রীলঙ্কাকে এদিন দারুণ শুরু এনে দেন দুই ওপেনার দিমুথ করুনারত্নে ও কুশাল পেরেরা। অধিনায়ক করুনারত্নে ৩২ রান করে সাজঘরে ফিরলেও কুশাল পেরেরা তুলে নেন অর্ধ-শতক। রানআউট হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ৫১ বলের মোকাবেলায় করেন ৬৪ রান।
তার বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন অভিষকা। কুশাল মেন্ডিস, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ও লাহিরু থিরিমান্নের সাথে ছোট ছোট জুটি গড়ে একপ্রান্ত আগলে রাখছিলেন দৃঢ়তার সাথে। ইনিংসের শেষদিকে সাজঘরে ফেরার আগে পূর্ণ করেন শতক। ১০৩ বলের মোকাবেলায় ৯টি চার ও ২টি ছক্কা হাঁকিয়ে তার ব্যাট থেকে আসে ১০৪ রান।
অন্যান্যদের মধ্যে থিরিমান্নে অপরাজিত ৪৫, কুশাল মেন্ডিস ৩৯ ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ২৬ রান করেন। নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে লঙ্কানদের দলীয় সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৩৮ রান।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ক্যারিবীয় দুই ওপেনার ক্রিস গেইল ও সুনীল অ্যামব্রিসকে চেপে ধরেন লঙ্কান বোলাররা। যার ফলে উদ্বোধনী জুটিতে এগোতেই পারেননি এ দুই ব্যাটসম্যান। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই দলীয় ১২ রানে লাসিথ মালিঙ্গার বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দেন উইন্ডিজ ওপেনার অ্যামব্রিস।
নিজের পরের ওভারেই আবারও উইন্ডিজ দুর্গে আঘাত হানেন মালিঙ্গা। দলীয় ২২ রানে দুর্দান্ত এক স্লোয়ার ডেলিভারিতে শাই হোপের স্ট্যাম্প উড়িয়ে দেন এই পেসার। ফলে বিপদে পরে ক্যারিবীয়রা।
শুরুর এই বিপর্যয় ধীরে সুস্থে কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করেন ক্রিস গেইল ও শিমরন হেটমায়ার। বিপর্যয় সামলে বড় রানের জুটি গড়তে থাকেন তারা। কিন্তু খুব বেশি আর এগোতে পারেননি।
ইনিংসের ১৫ তম ওভারে লঙ্কান বোলার কসুন রাজিথাকে ছক্কা মারার পরের বলেই হাওয়ায় ক্যাচ তুলে দেন গেইল। সহজ এই ক্যাচ ধরতে ভুল করেননি জেফরি ভেন্ডারসে। ফলে ভেঙে যায় ৪৯ রানের এই জুটি।
মালিঙ্গার মতোই রাজিথার পরের ওভারে আবারো উইকেটের দেখা পায় লঙ্কানরা। দুর্দান্ত এক থ্রোতে রান আউট করে ব্যক্তিগত ২৯ রানে শিমরন হেটমায়ারকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান ডি সিলভা। ফলে ৮৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে আবারো ব্যাটিং বিপর্যয়ে পরে ক্যারিবিয়ানরা।
লড়াই করে গেলেও শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩১৫ রানে থেমে যায় উইন্ডিজ। যদিও দুই দলই ইতোমধ্যে সেমিফাইনালের দৌড় থেকে বাদ পড়ায় এটি হয়ে পড়েছে নিয়ম রক্ষার ম্যাচ।
এ ম্যাচে জয়ের মাধ্যমে পয়েন্ট টেবিলে বাংলাদেশের থেকে উপরে চলে এসেছে শ্রীলঙ্কা। ৮ ম্যাচ খেলে শ্রীলঙ্কার পয়েন্ট ৮। অন্যদিকে ৭ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের পয়েন্ট ৭। আজ মঙ্গলবার (২ জুলাই) ভারতের বিশ্বসেরা ব্যাটিং লাইনআপের বিপক্ষে মাঠে নামবে টাইগাররা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।