জুমবাংলা ডেস্ক: বাংলাদেশের সংসদে গতকাল (মঙ্গলবার) ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিল-২০২১’ পাস হয়েছে। এপ্রিল মাসের শুরুতে এটি সংসদে উপস্থাপন করা হয়। খবর বিবিসি বাংলার।
এরপর ধর্ম মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় কমিটিকে দায়িত্ব দেয়া হয় বিলটির খুঁটিনাটি বিস্তারিত দেখার জন্য। গতকাল সেটি সংসদে পাশের প্রস্তাব করেন ধর্মপ্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান।
হজে যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের জন্য যা বলা আছে
আইনটিতে বলা হয়েছে হজে যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে শারীরিক ও মানসিকভাবে যোগ্য হতে হবে। যোগ্যতা ঘোষিত হতে হবে নির্ধারিত মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে।
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক খান বলেছেন, এক্ষেত্রে জেলার সিভিল সার্জনের কাছে যেতে হবে। তারাই বুঝতে পারবেন কোন ব্যক্তি শারীরিক ও মনস্তাত্ত্বিকভাবে সুস্থ কিনা। আজকাল মানুষের গড় আয়ু অনেক বেড়েছে। চিকিৎসা সেবার উন্নতির কারণে অনেক বয়স পর্যন্ত মানুষ অ্যাক্টিভ থাকতে পারে।
যদিও হজের সময় দেখা যায় বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অনেক বয়স্ক ব্যক্তিকে শারীরিকভাবে খুব দুর্বল হওয়ায় তাদের হুইলচেয়ারে বহন করা হয়।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সৌদি আরব এ বছরও শুধুমাত্র সেদেশের নাগরিক ও সেখানে অবস্থানরতদের মধ্যেই হজের সুযোগ সীমিত রেখেছে। তাই এবছরও বাংলাদেশিরা হজে যেতে পারছেন না।
হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিল-২০২১’ বিলে আরও বলা হয়েছে, ইচ্ছুক ব্যক্তির আর্থিক সচ্ছলতা থাকতে হবে। কিন্তু কীভাবে তা যাচাই হবে সেটি পরিষ্কার নয়।
এ ছাড়াও বলা হয়, সরকার নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিবন্ধন করতে হবে এবং ইচ্ছুক ব্যক্তিকে নির্ধারিত অর্থ পরিশোধ করতে হবে। সরকারে হজ সম্পর্কে যখন যেসব নির্দেশনা ও শর্ত দেবে – তা সঠিকভাবে পালন করতে হবে।
এজেন্সির ব্যাপারে যা আছে এই বিলে
সৌদি আরব গিয়ে হজ ও ওমরাহ এজেন্সি কোন অপরাধ করলেও বাংলাদেশে সেই অপরাধের বিচার করার বিধান রাখা হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, হজের সময় সরকারের লোকজন যায় সবকিছু মনিটর করার জন্য। তারা কোন অনিয়ম দেখলে ব্যবস্থা নেবে। ফৌজদারি কিছু হলে মামলা বাংলাদেশে হবে। অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় প্রমাণ সাপেক্ষে সবকিছু করা হবে।
কিন্তু দেশের মাটিতেই প্রায়শ নানা অনিয়মের জন্য এজেন্সিগুলোকে শাস্তির আওতায় আনা যায় না। সেক্ষেত্রে বিদেশে অপরাধ করলে সেটি প্রমাণ করার জটিলতা থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়ে যায়।
এছাড়া নিবন্ধন করতে হলে হজ এজেন্সির ক্ষেত্রে চার বছর এবং ওমরাহ এজেন্সির ক্ষেত্রে তিন বছর ট্রাভেল এজেন্সি পরিচালনার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে বলে বিধান রাখা হয়েছে। শুধুমাত্র একটি এজেন্সির নিবন্ধন নেয়া যাবে। কোন ধরনের অনিয়ম করলে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
কোনও এজেন্সির দায়িত্বে অবহেলার কারণে হজ বা ওমরাহ যাত্রীর কোনও আর্থিক ক্ষতি হলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি যদি অভিযোগ আনেন এবং তা প্রমাণিত হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
এই নির্দেশনা পালন না করলে এজেন্সির জামানত থেকে জরিমানার অর্থ ক্ষতিপূরণ হিসাবে দেয়া যাবে। যা আইনে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা আদায় করে দেবে।
হজ ব্যবস্থাপনার জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করে এসংক্রান্ত জাতীয় কমিটি গঠন করবে সরকার। হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত একটি নির্বাহী কমিটিও তৈরি করা হবে।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত বছর মাত্র ১০০০ ব্যক্তি হজ পালনের সুযোগ পেয়েছিলেন। এবছরও বাংলাদেশ থেকে কেউ হজে যেতে পারছে না।
তবে স্বাভাবিক সময়ে প্রতি বছর প্রায় বিশ লাখ মুসলিম হজ পালনের জন্য সৌদি আরবে সমবেত হতেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।