বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক যতই ঘনিষ্ঠ হোক, সীমান্ত হত্যা বন্ধ না হওয়ার বাস্তবতা স্পষ্ট উল্লেখ করলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, সম্পর্কের ‘স্বর্ণযুগের’ ঢাক-ঢোল পেটানো সত্ত্বেও এসব ঘটনা কমেনি; ভারত নিজেদের নীতি নিজেই পরিচালনা করে, বাংলাদেশ তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের সাম্প্রতিক টানাপোড়েন প্রসঙ্গে স্পষ্ট ও দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। রোববার বিকেলে নীলফামারীতে এক হাজার শয্যার চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,
“যখন খুব ঢাক-ঢোল পেটানো হচ্ছিল যে সম্পর্কের স্বর্ণযুগ চলছে, তখন কি সীমান্ত হত্যা বন্ধ হয়েছিল? হয়নি। ভারতীয় নীতি বা কার্যক্রমকে বাংলাদেশ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। সম্পর্ক যতই ভালো হোক—এই বাস্তবতা থেকে পালানো যাবে না।”
তিনি আরও জানান, সীমান্তে যেকোনো হতাহতের ঘটনা বাংলাদেশ নিয়মিতভাবে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। প্রতিবাদ নোট পাঠানো হয়, ভারতকে অনুরোধ করা হয় এসব ঘটনা বন্ধ করতে।
“তারপরও ঘটনা ঘটে, জোর করে বা বল প্রয়োগ করে আমরা এই ঘটনা বন্ধ করতে পারব না। তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, যেন এমন ঘটনার মুখোমুখি না হতে হয়।”—বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের বর্তমান অবস্থান এবং সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে তার এই মন্তব্য নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বাংলাদেশ ভারত সীমান্ত নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত হচ্ছে পৃথিবীর একমাত্র সীমান্ত যেখানে যুদ্ধাবস্থা নেই অথচ মানুষকে গুলি করে মারা হয়। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং আমরা এটার নিন্দা করে যাব, সব সময়। তারা (বিএসএফ) যদি আমাদের এলাকায় ঢুকে কাজটা করত তাহলে আমরা সেটার ব্যবস্থা নিতাম। এমনকি বিজিবিকে বলতাম এই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে তোমরা অ্যাকশন নিবা। যেহেতু এটা ভারতের সীমান্তের ভেতরে ঘটছে। আমাদের জোর করে এটা বন্ধ করার কোনো উপায় নেই। আমরা যা করছি এটুকুই। এর বেশি করতে পারবো না।
ভারতের চিকেন নেক নিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, চিকেন নেক হল ইন্ডিয়ার, আমাদের না। আমরা তো ইন্ডিয়ার চিকেন নেক দখল করতে যাবনা। তাহলে তারা চিকেন নেক নিয়ে যা ইচ্ছা করুক তাতে আমাদের কি। আমরা এখানে কোনো পক্ষ হতে যাব না। ভারতের সাথে চীনের বিভিন্ন সম্পর্ক আছে। তারা সেটা নিয়ে হয়ত চিন্তিত হবে। এটা আমাদের বিষয় না। আমরা সেখান থেকে দূরে থাকব। কারণ আমাদের সাথে এই দেশগুলোর যে সম্পর্ক, তার সাথে এই চিকেন নেকের কোনো সম্পর্ক আছে বলে আমি মনে করি না।
চীন-মৈত্রী হাসপাতাল নিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, চমৎকার একটা জায়গা। সরকারের অধীনেই জমি আছে খাস সেখানে আমরা করতে পারছি। আমার আশা যে খুব তাড়াতাড়ি হবে। চাইনিজরা বলেছে তিন বছর লাগবে এটা কনস্ট্রাকশন করতে। আমি যতটুকু জানি তারা তাদের কনট্রাক্টর বা কারা কাজ করবে সেগুলোও তারা নির্ধারণ করে দিয়েছে। এই হাসপাতালটা একটা রেফারাল হসপিটাল হবে, যেখানে উচ্চ চিকিৎসা দেয়া হবে। প্রাথমিকভাবে চীনারা এটা দেখাশোনা করবে, ম্যানেজ করবে। পরে আস্তে আস্তে আমাদের কাছে হস্তান্তর করবে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টার দায়িত্ব শেষ হলে আবারও পুরোনো জীবনে ফিরে যাবেন এবং তার কোনো ধরনের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা নেই বলেও জানান তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



