জুমবাংলা ডেস্ক : সরকারিভাবে আমন ধান সংগ্রহে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায়। টাকার বিনিময়ে কৃষকদের কার্ড কিনে আমন চাষী হিসেবে তালিকায় অন্তর্ভুক্তির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। অনিয়মের মাধ্যমে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া ১৫০ জন কৃষকের কার্ড এরই মধ্যে জব্দ করেছে কৃষি বিভাগ। একই সঙ্গে আগের তালিকা যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত কৃষকদের নাম অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
এদিকে প্রকৃত কৃষকদের বাদ দিয়ে মূল তালিকা প্রস্তুত করায় বঞ্চিত হয়েছেন আমন চাষীরা। একই সঙ্গে এ তালিকা বাদ দিয়ে নতুন করে পুরো প্রক্রিয়া শুরুর দাবি জানিয়েছেন তারা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর সরকারিভাবে রাজনগর উপজেলা থেকে ১ হাজার ৪১৭ টন আমন ধান ক্রয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। এজন্য উপজেলার সাড়ে নয় হাজার কৃষকের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ তালিকাটি প্রস্তুত করেন ইউনিয়ন কৃষি কর্মকর্তারা। ওই তালিকা থেকে লটারি করে ১ হাজার ৪১৭ জন কৃষক মনোনীত হন। গতকাল পর্যন্ত ১৩৬ কৃষকের কাছ থেকে ১৩৬ টন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে।
প্রান্তিক কৃষকদের অভিযোগ, মূল তালিকায় প্রকৃত আমন চাষীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। মাঠপর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের যোগসাজশে একটি চক্র গড়ে উঠেছে। ওই চক্রটি আমন চাষীর বাইরে বোরো ও সবজি চাষীদের কৃষি কার্ড টাকার বিনিময়ে সংগ্রহ করে তাদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।
ইউনিয়ন কৃষি কর্মকর্তাদের প্রস্তুত করা তালিকা যাচাই করে দেখা যায়, তালিকায় একজন কৃষকের নাম এসছে একাধিকবার। একই সেলফোন নাম্বার ব্যবহার করা হয়েছে একাধিক কৃষকের ক্ষেত্রে। এর মধ্যে একটি নাম্বার ব্যবহার করেছেন ৫৭ জন। ঘটনাটি অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নে লটারিতে অংশ নেন ২২৫ কৃষক। এর মধ্যে মনোনীত হন ৩৬ জন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তালিকা যাচাই করে দেখা যায়, মনোনীত ৩৬ জনের মধ্যে ২০ জনই ভুয়া কৃষক। যাদের আমন চাষ নেই, আবার কেউ কেউ বিদেশে থাকেন। একই চিত্র উপজেলার বাকি সাতটি ইউনিয়নেও।
ফতেহপুর ইউনিয়নের ছোয়াব আলী গ্রামের কৃষক জালাল মিয়া বলেন, যারা মনোনীত হয়েছেন তাদের অধিকাংশের কৃষি কার্ড অল্প টাকার বিনিময়ে কিনে নিয়েছে একটি চক্র। কোনো কোনো কৃষক ৪০০-৫০০ টাকার বিনিময়ে কৃষি কার্ড বিক্রি করেছেন। এসব কার্ড লটারিতে মনোনীত হওয়ার পর সাধারণ কৃষকদের কাছ থেকে অল্প টাকায় ধান কিনে সরকারের কাছে বেশি দামে বিক্রি করছে চক্রটি।
গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক বদরুল আলম ও আয়াছ মিয়া বলেন, তালিকা তৈরির বিষয়ে আমরা কিছুই জানতাম না। ইউনিয়ন কৃষি কর্মকর্তারা গোপনে ওই তালিকা তৈরি করেছেন। এতে সরকারের কাছে ধান বিক্রির সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত আমন চাষীরা।
রাজনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহাদুল ইসলাম তালিকায় অনিয়মের অভিযোগ স্বীকার করে বণিক বার্তাকে বলেন, লটারিতে মনোনীত কৃষকদের তালিকা অধিকতর যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। প্রকৃত আমন চাষী না হলে কার্ড জব্দ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ১৫০টি কার্ড জব্দ করা হয়েছে।
তথ্যসূত্র : বণিক বার্তা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।