জুমবাংলা ডেস্ক : সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনকে ‘বৈষম্যমূলক’ আখ্যা দিয়ে তিন দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। আগামী ২৫ মে এর মধ্যে দাবি না মানা হলে ২৬ মে মানববন্ধন, সারাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একযোগে ২৮ মে ২ ঘণ্টা ও ৪ জুন অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন পালনের হুমকি দিয়েছেন শিক্ষকরা। তবে এই কর্মবিরতির মধ্যে পরীক্ষা অন্তর্ভুক্ত থাকবে না।
আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষকরা। তাদের তিন দফা দাবি হলো- সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য সুপার গ্রেড কার্যকর ও স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন করা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া। এ সময় সারাদেশের ৩৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষক নেতারা আগামী ২৫ মে এর মধ্যে দাবি না মানা হলে ২৬ মে সারাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একযোগে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন। এরপর আগামী ২৮ মে সারাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকরা একযোগে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করবেন। তবে পরীক্ষা কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে বলে জানান তারা। এরপরও দাবি না মানা হলে আগামী ৪ জুন সারাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকরা একযোগে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন। তারপরও দাবি না মানা হলে ওই দিনই আন্দোলনের বৃহত্তম কর্মসূচি ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানান তারা।
লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ও সংবিধিবদ্ধ অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রত্যয় স্কিমের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ১ জুলাইয়ের আগে ও পরে চাকরিতে যোগদান করা ব্যক্তিদের মধ্যে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য তৈরি হবে। যেটা সংবিধানের সমতার পরিপন্থী।
তারা বলেন, প্রত্যয় স্কিমে মূল বেতন থেকে ১০ শতাংশ অর্থ কেটে নেওয়া হবে, যেটা আগে কাটা হত না। এ স্কিমে আনুতোষিক শূন্য। বর্তমানে পেনশনার ও নমিনি আজীবন পেনশন প্রাপ্ত হন, কিন্তু নতুন এই স্কিমে পেনশনারেরা ৭৫ বছর পর্যন্ত পেনশন প্রাপ্ত হবেন।
শিক্ষক নেতারা আরও বলেন, বিদ্যমান পেনশন ব্যবস্থায় প্রাপ্ত ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট পেত, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় সেটা সুস্পষ্ট করা হয়নি। সব থেকে বড় বিষয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদকাল ৬৫ বছর থেকে ৬০ বছর করা হয়েছে। মাসিক চিকিৎসাভাতা, উৎসব ভাতা, বৈশাখী ভাতা নতুন প্রত্যয় স্কিমে প্রদান করা হবে না। সর্বজনীন পেনশন স্কিমে আনুতোষিক শূন্যের কোঠায় আনা হয়েছে।
তারা বলেন, ২০১৫ সালে ৮ম জাতীয় বেতন স্কেলে শিক্ষকদের অবনমন করা হয়েছিল। সে সময় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বিষয়টির সুরাহা হয়। সেই আলোচনায় সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের তৎকালীন নেতৃবৃন্দকে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সুপারগ্রেডে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়েছিল। আজ পর্যন্ত সে বিষয়টি কার্যকর করা হয়নি। সেটি অবিলম্বে কার্যকর করার দাবি জানাই। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য একটি স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রদান দীর্ঘদিনের দাবি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশা মেধাবীদের কাছে আকর্ষণীয় করতে পেশাগত সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত একটি স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রবর্তনের দাবি জানান তারা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।