জুমবাংলা ডেস্ক : খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, দানাদার খাদ্যে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। এখন আমরা নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টি জাতীয় খাদ্যের জন্য সংগ্রাম করছি। সে জন্য এখন ভেজালকে আমরা না বলি, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কাজ করছে, এখন তারা জেলা উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। তবে সচেতনতার বৃদ্ধি জন্য আইন করলে হবে না এটাকে সবার মানতে হবে তাহলেই সচেতনতা বাড়বে।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হওয়া কার্নিভাল ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল কাইউম সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ ইসমাইল হোসেন।
খাদ্য মন্ত্রী বলেন, একসময় বাংলাদেশে খাদ্যের অভাব ছিল। আজকের ভাত পানি দিয়ে রেখে দিতে হয়েছে পরের দিন সেটা যাতে খাওয়া যায় কিন্তু এখন আর সেই অবস্থা নেই, এখন পান্তা ভাত মানুষ সখ করে খায়।
তিনি বলেন, আমাদের প্রচুর রপ্তানি পণ্য আছে। কিন্তু সবকিছু বিদেশিরা নিতে চায়না। কারণ তাদের আমাদের পণ্যের প্রতি আস্থা কম। যে কারণে তারা নিজেরা এসে পণ্য উৎপাদন করে নিয়ে যাচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রচুর আম উৎপাদন হচ্ছে কিন্তু আমরা সেভাবে বিদেশে রপ্তানি করতে পারছি না। চিংড়ি মাছ আগে ভালো রপ্তানি হতো কিন্তু অপদ্রব্য ঢুকিয়ে আমরা রপ্তানি বাজার নষ্ট করে ফেলেছি।
এ সময় মন্ত্রী আরও বলেন, রপ্তানি পণ্যগুলো আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তুলুন। তাদের সে বিশ্বাসটা অর্জন করতে হবে। আমাদের অনেক পণ্য বিদেশে যায় কিন্তু সেটি বিদেশে বাংলাদেশি শপগুলোয় বিক্রি হয়। পণ্য এমনভাবে উৎপাদন করুন যেন বিদেশি চেইন শপে সেগুলোতে পাওয়া যায়।
ভোক্তারা অনেক সময় খরচ বাঁচাতে নিম্নমানের পণ্য কেনেন বলে মন্তব্য করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদেরও দোষ আছে। আমরা আবার সস্তা খুঁজতে যাই। একটু সস্তা পেলে বেশি খাই। চিন্তা করতে হবে, মানসম্মত উৎপাদন করতে গেলে খরচ সেটা দিয়ে আমরা অল্প খাব কিন্তু ভালো জিনিস খাব।’
সচেতনতা বিষয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তকে আমরা নির্দেশিকা দিয়েছি তবে এটা কতজন পড়ছেন? সচেতনতা বৃদ্ধি জন্য প্রতিটি মানুষের কর্তব্য রয়েছে আমরা শিক্ষক, ইমাম, মোয়াজ্জেমকে মূল্যায়ন করি। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, নামাজ শেষে নামাজে যদি এক থেকে ২ মিনিট নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে বলি তাহলে আমরা জনগণকে সচেতন করতে পারব। এনজিও কর্মীরা প্রতি সপ্তাহে সপ্তাহে কিস্তি ওঠাতে উঠান বৈঠক করেন সেখানে যদিও এক মিনিট করে নিরাপদ খাদ্য নিয়ে কথা বলেন তাতেও সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা যদি সচেতনতা আমাদের পরিবারের মধ্যে নিয়ে আসতে পারি তাহলে খুব দ্রুত আমরা নিরাপদ খাদ্য দেশের তালিকা স্থান করে নেব বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
খাদ্য সচিব বলেন, ২০১৩ সালে নিরাপদ খাদ্য আইন হওয়ার পর ২০১৫ সালে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রতিষ্ঠা হয়। তবে যাত্রার শুরুতে কিছুটা প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়। করোনার কারণে কিছুটা সমস্যার পরও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা রেগুলেটরি রিফর্ম করার চেষ্টা করছি, এবং পার্শ্ববর্তী দেশের সহযোগিতা নিচ্ছি। আমাদের কার্যক্রমে সকলে সহযোগিতা করছে, শুরু থেকে খাদ্য ব্যবসায়ীরা সহযোগিতা করে আসছে, সুতরাং নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী খাদ্যের নিরাপত্তা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন, আমরা খাদ্যের নিরাপদতা নিয়ে কাজ করছি বলেও তিনি জানান।
সভাপতির বক্তব্যে আব্দুল কাইউম সরকার বলেন, ৭০টি প্রতিষ্ঠান কার্নিভালে অংশ নিয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য একটা নিরাপদ খাদ্য বার্তাটা সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বিভিন্ন এলাকার খাবার নিয়ে আঞ্চলিক বিতর্ক। গম্ভীরায় সুরে সুরে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক বার্তা দেওয়া হয়। সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হবে প্রথমদিনের কার্যক্রম।
৯ ফেব্রুয়ারি শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা দিয়ে শুরু হবে কার্নিভালের দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম। এরপর দিনব্যাপী পর্যায়ক্রমে ডমিনোজ পিৎজা কর্তৃক লাইভ পিৎজা প্রদর্শনী, আন্তর্জাতিক কুইজিন প্রদর্শনী, ম্যাজিক শো, সাংসদ সদস্য চিত্রনায়ক ফেরদৌসের নিরাপদ খাদ্যবিষয়ক সেলিব্রিটি বার্তা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনায় জিআই পণ্য এবং অর্গানিক ফুডের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।
কার্নিভালের শেষ দিনে ১০ ফেব্রুয়ারি সকালে শুরু হবে পিঠা প্রতিযোগিতা। এরপর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কুইজিন প্রদর্শনী, পুতুল নাচ প্রদর্শনী শেষে শুরু হবে সমাপনী অনুষ্ঠান। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র.আ.ম. উবায়দুল মোক্তাদির।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।