স্পোর্টস ডেস্ক : সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আইসিসি তাঁকে নিষিদ্ধ করার খবর জানানোর ঘণ্টাখানেক পর শেষবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এসেছিলেন গত বছরের ২৯ অক্টোবর রাতে। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর নিজের চেনা আঙিনায় সাকিব আল হাসানের ফেরার অপেক্ষাই ছিল শুধু। সেটি কাল ফুরাল। তাঁর ফিটনেস পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত সময় ছিল সকাল ১০টা। তবে এর অনেক আগেই, সকাল সাড়ে ৮টায় ‘হোম অব ক্রিকেট’-এ ঢুকে পড়লেন নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়া মাত্রই আইসিসি ওয়ানডের র্যাংকিংয়ে শীর্ষাসন ফিরে পাওয়া এই অলরাউন্ডার। এক বছর পর এসেই ঢুঁ মারলেন ইনডোরে। বিসিবি একাডেমি ভবনের জিমেও কিছুক্ষণ সময় কাটালেন। তবে যে ফিটনেস পরীক্ষাটি তাঁর দেওয়ার কথা ছিল, সেটি আর দিলেন না। তা দেবেন বুধবারে।
প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন অবশ্য সাকিব দেশে ফেরার আগেই জানিয়ে রেখেছিলেন যে এই ক্রিকেটার চাইলে তাঁর ফিটনেস পরীক্ষা পেছাতেও পারেন। তখন যুক্তরাষ্ট্র থেকে লম্বা ভ্রমণক্লান্তির বিষয়টিও মাথায় ছিল নির্বাচকদের। যদিও সে ক্লান্তি উপেক্ষা করে গত শুক্রবার ভোররাতে দেশে ফিরে দুপুরেই গুলশানে একটি সুপারশপ উদ্বোধন করতে গিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন সাকিব। সেখানকার জনসমাগমে যেন রীতিমতো হারিয়েই যেতে বসেছিলেন তিনি!
সে কারণেই হয়তো এবার জনসমাগম এড়ানোর ভাবনা থাকতে পারে তাঁর। ফিটনেস পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত দুই দিনের কোনো দিনই তা না দিয়ে পরে দেওয়ার দুটি কারণের একটি যে এটিও। বিসিবির ফিটনেস ট্রেনার তুষার কান্তি হাওলাদার একাডেমি মাঠে দাঁড়িয়ে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন তেমনটাই, ‘যাদের সঙ্গে সাকিবের বিপ টেস্ট দেওয়ার কথা ছিল, তাদের কারোরই কভিড পরীক্ষা করানো হয়নি। এটিও ভাবনার বিষয়। এই মুহূর্তে জনসমাগমে আসতে না চাওয়াও আজ ওর ফিটনেস পরীক্ষা না দেওয়ার একটি কারণ।’ তবে একমাত্র কারণ নয়, ‘তা ছাড়া ফিজিও-ট্রেনারদের সঙ্গেও সাকিবের দেখা হলো অনেক দিন পর। তাঁরা ওর শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে দেখবেন যে কোন অবস্থায় আছে। এতেও একটু সময় লাগবে।’
মিনহাজুলও সাকিবের ফিটনেস পরীক্ষা নিয়ে তাড়াহুড়ার কিছু দেখেন না, ‘মাত্রই তো এলো। সব কিছু কেটে যেতে একটু সময় তো দিতে হবে। ট্রেনারের সঙ্গে শলাপরামর্শ করে সব কিছু ঠিক করে নিয়েছে, বুধবার দেবে ফিটনেস পরীক্ষা। তাড়াতাড়ি কোনো কিছুই পাওয়া যায় না। সে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। আমি নিশ্চিত, দ্রুতই মানিয়ে নেবে এবং এই টুর্নামেন্টে (বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি) ভালোই খেলবে।’
এই আসরকে সামনে রেখেই সাকিবসহ মোট ১১৩ জন ক্রিকেটারকে ফিটনেস পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ডাকা হয়েছে। কাল প্রথম দিনে বিপ টেস্ট দিয়েছেন ৭৩ জন খেলোয়াড়। পাস মার্ক ধরে দেওয়া হয়েছিল ১১। তাতে বেশির ভাগই উতরে গেয়েন। যাঁদের মধ্যে আছেন মোহাম্মদ আশরাফুল, শাহরিয়ার নাফীস থেকে শুরু করে আব্দুর রাজ্জাকের মতো ক্রিকেটাররা। জাতীয় দল, হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) ও অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বাইরের ক্রিকেটারদের ফিটনেসের অবস্থা দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেন বিসিবির হেড অব ফিজিক্যাল পারফরম্যান্স নিকোলাস ট্রেভর লি’ও, ‘ওদের চেষ্টা এবং মানসিকতা দেখে আমার মনে হয়েছে ওরা শারীরিকভাবে ফিট হতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। পেশাদার পর্যায়ে সবচেয়ে পরিশ্রমী যে দলগুলো আমি দেখেছি, ওরা তার মধ্যে থাকবে। মাত্র ছয় মাস হলো এখানে এসেছি। এই সময়ে দেখেছি, ক্রিকেটাররা ওদের ফিটনেস নিয়ে খুব খাটছে।’ বিপ টেস্টের ফল নিয়ে খুশি প্রধান নির্বাচকও, ‘বিপ টেস্ট ভালোই দিয়েছে সবাই। যে গ্রুপের পরীক্ষা শেষ হয়েছে, ওদের প্রায় ৯০ শতাংশই ভালো দিয়েছে। এত দিন ওরা ফিটনেসের বাইরে ছিল, তার পরও খারাপ করেনি। কাল (আজ) আরেকটি গ্রুপের পরীক্ষা আছে। সবাই ভালো অবস্থানে আছে বলেই আশা করছি।’ বেশির ভাগই কালকের পরীক্ষায় উতরে গেলেও ৭৩ জনের মধ্যে আটজন পারেননি। ১১ পাস মার্ক তুলতে না পারাদের মধ্যে আছেন জাতীয় দলের সাবেক দুই স্পিনার সোহাগ গাজী ও আরাফাত সানি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।