জুমবাংলা ডেস্ক : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে সিঁদ কেটে ঘর থেকে তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের মুজুরদিয়া গ্রামে গত শুক্রবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। বোয়ালমারী থানার জয়নগর ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় ছাত্রীর বাবা রায়হান মাতুব্বর বাদী হয়ে শনিবার রাতে বোয়ালমারী থানায় একই গ্রামের মোসলেম শেখের ছেলে লাভলুকে (৩৮) একক আসামি করে অপহরণ মামলার জন্য এজাহার জমা দিয়েছেন।
সরেজমিন ঘুরে ও এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ওই ছাত্রী দাদপুর ইউনিয়নের কমলেশ্বরদী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সে শুক্রবার রাতে প্রতিদিনের ন্যায় বিছানায় ঘুমিয়েছিল। মেয়ের কক্ষের বাইরে তালা দিয়ে একই ঘরের বারান্দায় ঘুমিয়েছিলেন বাবা-মা। বাবা-মা সকালে ঘুম থেকে উঠে মেয়ের কক্ষের দরজার তালা খুলে দেখতে পায় সে ঘরে নেই। কাঁচা ঘরে দক্ষিণ পাশে সিঁদ কাটা দেখে ধারণা করে দুর্বৃত্তরা এই সিঁদ দিয়ে ঘরে প্রবেশ করে তাদের মেয়েকে তুলে নিয়ে গেছে। চাঞ্চল্যকর এ অপহরণের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে গোটা এলাকাজুড়ে।
রবিবার দুপুরে কথা হয় কিশোরীর বাবা রায়হান মাতুব্বর জানান, স্কুলে যাতায়াতের পথে প্রায় ওই মেয়েকে উত্ত্যক্ত ও অশালীন প্রস্তাব দিত একই গ্রামের মোসলেম শেখের ছেলে দুই সন্তানের জনক ও সৌদিপ্রবাসী স্ত্রীর স্বামী লাভলু শেখ (৩৮)। এ ঘটনায় ছাত্রী তার অভিভাবকদের জানালে; তারা বিষয়টি লাভলুর পরিবারকে অবহিত করেন।
এতে লাভলু আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ছাত্রীসহ পরিবারকে শায়েস্তা করার জন্য। এবার সে কেবল স্কুলে যাওয়া-আসার পথে নয়; সরাসরি ছাত্রীর বাড়ির আশপাশে অবস্থান নিতে থাকে। এমনকি বাড়ির ওপরে গিয়েও তাকে মাঝে মাঝে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। একপর্যায়ে গত দুই মাস আগে রাতে ওই ছাত্রী টয়লেটে গেলে তার হাত ধরে টানাহেঁচড়া করে শ্লীনতাহানির চেষ্টা করে বখাটে লাভলু। ওই সময় ভুক্তভোগী পরিবারটি সোচ্চার হয়েও মান-সম্মানের ভয়ে চেপে যান। এরপর গত ১৬ অক্টোবর গভীর রাতে সে সিঁদ কেটে ওই ছাত্রীর কক্ষে প্রবেশ করে চেতনানাশক দিয়ে অজ্ঞান অবস্থায় ছাত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যায় লাভলু।
সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মো. বাহাউদ্দীন বাহার বলেন, লাবলু খুব দুর্ধর্ষ প্রকৃতির লোক। অনেকদিন ধরেই ওই পরিবারটিকে হেনস্তা করছে লাভলু। আমি একাধিকবার সতর্ক করলেও তাতে কোনো ফল হয়নি। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চান ওই সদস্য।
বোয়ালমারী থানার ওসি মো. আমিনুর রহমান জানান, যখন নারী নির্যাতনবিরোধী আন্দোলন চলছে ঠিক সেই মুহূর্তে এমন অপরাধ মেনে নেওয়া যায় না। সরেজমিন তদন্তপূর্বক ওই ছাত্রীকে উদ্ধারসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জয়নগর পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই নজরুল ইসলামকে।
রবিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী জয়নগর পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ নজরুল ইসলাম জানান, এটা খুবই দূঃখজনক ঘটনা। এজাহার পেয়েছি, তদন্ত চলছে। ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য অভিযান অব্যাহত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।