আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে দেশের বাইরে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশিরা আক্রান্ত হয়েছেন সিঙ্গাপুরে। এখন পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি দেশটিতে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।রোববার (২৬ এপ্রিল) সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানা গেছে, দেশটির নিজস্ব নাগরিক বাদেও প্রবাসীরা করোনাভাইরাস সংক্রমিত কোভিড-১৯ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৯৩১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মাত্র ১৫ জন দেশের নাগরিক। প্রায় ৬০ শতাংশ বাংলাদেশি আক্রান্ত হয়েছেন। সে হিসেবে প্রায় ৬ হাজার বাংলাদেশি আক্রান্ত হয়েছেন দেশটিতে, তবে মৃত্যুর সংখ্যা শূন্য।
মোট ১৩ হাজার ৬২৪ জন আক্রান্তের মধ্যে হাসপাতালে বর্তমানে ভালো অবস্থানে রয়েছেন ১ হাজার ১৯০ জন। তবে গুরুত্বর অবস্থায় ভর্তি আছেন ২৪ জন। ১ হাজার ২ জন সুস্থ হওয়ায় তাদের বাড়ি ফেরত পাঠানো হয়েছে। হাসপতালে আইসোলেশনে আছেন ১০ হাজার ৪৬৫ জন। পুরো দেশে মৃত্যু মাত্র ১২।
গত ১০ মার্চ সিঙ্গাপুরে প্রথম করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। এ সময় এক বাংলাদেশির শরীরেও এ ভাইরাস পাওয়া যায়। এরপর থেকে দেশটিতে বাংলাদেশিদের আক্রান্তের পরিমান বাড়তে থাকে। গত ১৯ এপ্রিল ৩ হাজারের বেশি বাংলাদেশি আক্রান্ত হন বলে জানায় দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ।
যে সব প্রবাসী মূলত ডরমেটরিতে বসবাস করছেন, তারাই আক্রান্ত বেশি হচ্ছেন বলে জানিয়েছে সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য বিভাগ। কর্মকর্তারা বলছেন, প্রায় ৫৬টি ডরমেটরিতে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেছে। আক্রান্তরা বেশিভাগেই এ ডরমেটরিগুলোতে বসবাস করছেন। ৩২টি ডরমেটরি লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. আরিফ উল্লাহ বলেন, ‘এ সময় আমাদের কারও শারীরিক অসুস্থতা গোপন করা উচিত নয়। অসুস্থ হলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার দেখানো উচিত। নিয়ম মেনে চললে ভাইরাসটি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।’
সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ হাই কমিশনের তথ্যমতে, সিঙ্গাপুরের প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার বাংলাদেশি বসবাস করছে। যে ছয় হাজার বাংলাদেশি আক্রান্তের কথা বলা হচ্ছে, এ ব্যাপরে জানতে সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোস্তাফিজুর রহমানের মোবাইলে কল দেওয়া হলে সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
কিছুদিন আগে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশিরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি। এখানে এক ডরমেটরিতে অনেকে একসঙ্গে থাকেন। ফলে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যায়। তবে আশার কথা, এখন পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশি করোনায় মারা যাননি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবকিছু দেখভাল সিঙ্গাপুর সরকারই করছে। সিঙ্গাপুরের চিকিৎসাসেবা বিশ্বমানের। আমরা তাদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যোগাযোগ রাখছি। এর বাইরে কেউ কোনো সমস্যায় আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা সমাধান করব। আমাদের হটলাইন নম্বর চালু আছে। সিঙ্গাপুর সরকার শ্রমিক নিয়োগকারী প্রত্যেক কোম্পানির সাথে আমাদের কথা হচ্ছে। আমরা এই বিষয়টিতেও কাজ করছি।’
এদিকে, করোনাভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় সিঙ্গাপুরে লকডাউনের সময় বাড়ছে আগামী ১ জুন পর্যন্ত। সব ধরনের শিল্প-কারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ ও প্রয়োজনীয় কাজ বাদে জনগণকে ঘর থেকে বের হওয়ার জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।