জুমবাংলা ডেস্ক : চাঞ্চল্যকর মেজর সিনহা হত্যা মামলার দশম সাক্ষী হাফেজ জহিরুল ইসলামের সাক্ষ্য জেরা আজ কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সম্পন্ন হয়েছে। জবানবন্দিতে তিনি জানিয়েছেন, সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে টেকনাফ শামলাপুর উত্তর মারিশবুনিয়া এলাকার মুইন্যার পাহাড়ে ডাকাত হিসেবে চিহ্নিত করে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেছিল আসামিরা।
সিনহা হত্যা মামলার আসামি পুলিশের সোর্স নুরুল আমিন মোহাম্মদ আয়াজ ও নিজাম উদ্দিন মারিশবুনিয়া উম্মুল কোরআন মসজিদের মাইকে মুইন্যা পাহাড়ে ডাকাত এসেছে বলে বার বার ঘোষণা দেন। মসজিদের ইমাম হাফেজ জহিরুল ইসলাম ওই সময় তাদের বাধা দেন এবং জানান তারা ডাকাত নয় তারা সেনাবাহিনীর লোক।
মেজর (অব) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যা মামলার স্বাক্ষী দিতে গিয়ে আজ মঙ্গলবার কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলার দশম সাক্ষী হাফেজ জহিরুল ইসলাম জবানবন্দিতে এ কথা জানিয়েছেন।
দীর্ঘ এক ঘণ্টা ১৫ মিনিট পুলিশের সোর্সরা কীভাবে মাইকে সিনহাকে ডাকাত বলে ঘোষণা দিয়েছেন তার বর্ণনাও দেন তিনি। তারপরই তাকে জেরা করেন ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ আসামির আইনজীবীরা।
এর আগে সিনহা হত্যা মামলায় তৃতীয় ধাপে সাক্ষ্য গ্রহণের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ১০টা থেকে শুরু হয়ে বিচারিক কাজ চলে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত। আজকে এ মামলার দুই সাক্ষী হাফেজ জহিরুল ইসলাম ও ডা. রণবীর দেবনাথ সাক্ষ্য দিয়েছেন। মূলত চিকিৎসক রণবীর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের ওপর সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ নিয়ে এই মামলার ১১ জন স্বাক্ষী আদালতে স্বাক্ষী দিয়েছেন।
সকাল সাড়ে ১০টারদিকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহন শুরু হয়। এর আগে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ওসি প্রদীপ সহ সিনহা হত্যা মামলার ১৫ জন আসামীকে আদালতে নিয়ে আসা হয়।
আদালতে ডা রনধীর দেবনাথ জানান, সিনহাকে হত্যার পর তাকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে তাকে ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সিনহাকে হত্যার বিষয়ে আদালতে হুবহু বর্ননা দিয়েছেন।
অপর দিকে, আসামি ওসি প্রদীপের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত জানিয়েছেন, সিনহা হত্যা মামলার চার্জশিটে হত্যার বর্ননা ও ময়নাতদন্তের রিপোর্টে গরমিল রয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তৃতীয় দফায় ১০নম্বর সাক্ষী হাফেজ জহিরুল ইসলামের মধ্যদিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এ ছাড়াও মামলার উপস্থিত অন্য সাক্ষী কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. শাহীন আবদুর রহমান, ডা. রনধীর দেবনাথ ও সেনা সদস্য সার্জেন্ট আয়ুব আলীর সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আদালতে উপস্থাপন করা হয়। আদালতে স্বাক্ষীরা প্রথমে জবানবন্দি দেবেন।
গত বছর ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় গত বছর ৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।