জুমবাংলা ডেস্ক : বর্তমান সরকার ভারতে ইলিশ রফতানি বন্ধ ঘোষণা করলেও এখনও ফরিদপুরের বাজারগুলোতে এর প্রভাব পড়েনি। জেলার অভ্যন্তরীণ বাজার নিয়ন্ত্রক সিন্ডিকেট এখনও ইলিশের চড়া মূল্য ধরে রেখেছে। কৃত্রিম উপায়ে মজুদের মাধ্যমে বাজারে সরবরাহ কমিয়ে রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ ভোক্তাদের। এতে ভোক্তারা ভরা মৌসুমেও কাঙ্ক্ষিত মূল্যে ইলিশ মাছ না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
জেলা শহরের হাজী শরিয়তুল্লাহ মাছ বাজারে গিয়ে দেখা মেলে, অধিকাংশ খুচরা মাছ ব্যবসায়ীর কাছে রয়েছে ছোট বড় নানা রকমের ইলিশ। তবে দর আগের মতো চড়া।
টেপাখোলা বাজার, হেলিপ্যাড মাছ বাজারেরও একই চিত্র। এসব বাজারের বরিশাল, ভোলা বা পটুয়াখালীর ইলিশ ১ কেজি সাইজের বিক্রয় হচ্ছে এক হাজার ৫০০ থেকে এক হাজার ৭০০ টাকায়। আর কেজির উপরে গেলে তার দর এক হাজার ৯০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায়। তবে চট্টগ্রাম কিংবা কক্সবাজারের ইলিশের দর কিছুটা কম। আর কেজিতে ৪ থেকে ৫টি সাইজের ইলিশ বিক্রয় হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায়।
জানা যায়, ফরিদপুরে ইলিশ মাছের বড় আড়তদার রয়েছে সাত জন ব্যবসায়ী। তারা হলো-মনোজ রায়, মজিবুর রহমান, এম এম মুশা, মনিরুল ইসলাম মনা, হারান সরকার, শ্যামল দাস, অজিত সরকার। এদের হাতেই নির্ভর করে ইলিশের দর কম-বেশি- এমন অভিযোগ ক্রেতাদের।
বাজারে ইলিশ কিনতে আসা ক্রেতা রেজাউল করিম, রোকেয়া বেগম, সাইদা আক্তার ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, শুনেছি ইন্ডিয়ায় ইলিশ যাচ্ছে না। তবে কেনো ইলিশের মৌসুমে এতো দর হবে।
তারা জানান, বাজারে এসে দেখি দাম আগের মতই আছে। বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি ইলিশ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে যেন যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
এ বিষয়ে মাছ ব্যবসায়ী পরিমল কুমার দাস বলেন, সাগর বা নদীতে ইলিশ ধরা পড়ছে কম, তাই বাজার দরও একটু বেশি আর এই কারণে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহও তেমন নেই।
তবে, ইলিশের আড়তদাররা জানিয়েছেন ভিন্ন কথা। হাজী শরীয়তুল্লাহ বাজারের রুপালী ফিসের সত্ত্বাধিকারী হারান সরকার বলেন, ইলিশের মৌসুমে গড়ে প্রতিদিন ফরিদপুর সদর উপজেলায় বাজার গুলোতে একশ থেকে একশ দশ মণ ইলিশ আনা হয়। তবে মৌসুম ব্যতীত এর হার ৪০ থেকে ৬০ মনের মধ্যে বা তারও কিছু কম বেশি থাকে।
এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, শুধু ফরিদপুর পৌর এলাকাতেই প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ মণ ইলিশের চাহিদা রয়েছে।
অতিরিক্ত দাম বেশির কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা যে দরে মাছ ক্রয় করি তাতে ফরিদপুর পর্যন্ত আনার খরচ কেজিতে পড়ে যায় ৩০ থেকে ৪০ টাকা, তারপর আবার প্রতি কেজিতে বাজারের খাজনা দিতে হয় ৫০ টাকার বেশি। স্বাভাবিক ভাবেই আমার যে দরে মাছ ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রয় করি তার থেকে একটু বেশি দরে খুচরা পর্যায়ে বিক্রয় করা হয়। এছাড়াও নদী বা সাগরের মাছ ধরার ওপর দর অনেকটা নির্ভর করে।
তবে দ্রুতই বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো. সোহেল শেখ। তিনি বলেন, বিষয়টি আমাদেরও নজরে এসেছে। দ্রুতই জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে বাজার তদারকি করা হবে এবং সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রয়েজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।