স্পোর্টস ডেস্ক : নির্বাচক হিসেবে কাজ করছেন অনেক দিন। সব শেষ তিন বছর তো মিনহাজুল আবেদীন প্রধান নির্বাচকই ছিলেন। সেই মেয়াদ আর বাড়ে কি না, তা নিয়ে সংশয়ও উচ্চারিত হচ্ছিল। নির্বাচক কমিটিতে আরেক সাবেক অধিনায়কের সুযোগ পাওয়া নিয়ে গুঞ্জন থাকলেও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পর্ষদের সভায় অন্য কারো নামই ওঠেনি। বরং হাবিবুল বাশারসহ মিনহাজুলের নেতৃত্বাধীন কমিটির ওপরই আস্থা রেখেছে দেশের সর্বোচ্চ ক্রিকেট প্রশাসন। ২০২০ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে তাঁদের মেয়াদকাল। এক বিশ্বকাপ শেষে আরেক বিশ্বকাপ পর্যন্ত থাকছেন তাঁরা।
কিন্তু সেটি আবার এমন ফরম্যাটের বিশ্বকাপ, যেটিতে নিজেদের সামর্থ্য নিয়ে বাংলাদেশই খুব একটা আস্থাশীল নয়। সে জন্যই মেয়াদ বাড়ার পরদিনই মিনহাজুলকে বলতে হলো, ‘নতুন চ্যালেঞ্জ। একই সঙ্গে কঠিন, খুব কঠিন চ্যালেঞ্জও।’ এটি খুব কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে যাওয়ার কারণ, ‘টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আমরা ম্যাচই খেলি কম। ঘরোয়া ক্রিকেটও খুব গুরুত্বপূর্ণ। এখান থেকে খেলোয়াড় বাছাই করা তাই জরুরি। আবার আমাদের খেলোয়াড়ও তো কম।’ সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটের খেলোয়াড় সংকট সমাধানে ডিসেম্বরে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) অপেক্ষাও আছে প্রধান নির্বাচকের, ‘ডিসেম্বরে একটি টুর্নামেন্ট হবে, বিসিবি তো বলেই দিয়েছে। এ টুর্নামেন্ট থেকে আমরা খেলোয়াড় পাব।’ যদিও ৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া আসরটি বিপিএলের সপ্তম। প্রতিবছরই নিয়ম করে ছয়টি আসর হয়ে গেলেও এ ফরম্যাটের জন্য মানানসই খেলোয়াড় খুঁজে পেতে আরেকটির অপেক্ষাও বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য খুব সৌভাগ্যের নয়।
তা ছাড়া আরেকটি অপেক্ষাও আছে মিনহাজুলের, ‘নতুন টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে বসে আমরা একসঙ্গেই পরিকল্পনা করব। টিম ওয়ার্ক করে কাজ করতে হবে।’ অর্থাৎ নতুন হেড কোচ নিয়োগ হওয়ার পরই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় বসতে চান তিনি। সেটি আরো জরুরি মনে করার কারণ, ‘নতুন খেলোয়াড় তো অবশ্যই দেখতে হবে। কারণ এ ফরম্যাট তো একটু ভিন্ন ধরনের। টেস্ট বা ওয়ানডের সঙ্গে মেলে না। সুতরাং এখানে অবশ্যই পরিকল্পনা করে এগোতে হবে।’ ২০২০ সালের অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ায় বসবে টি-টোয়েন্টির পরবর্তী আসর। এর আগে পরিকল্পনা করে এগোনোর যথেষ্ট সময় আছে বলেও মনে করেন প্রধান নির্বাচক।
অবশ্য এই একটি ফরম্যাট নিয়ে ভাবলেই তো আর চলছে না তাঁর। টেস্ট আর ওয়ানডে নিয়েও বিস্তর ভাবনার ব্যাপার আছে। বিশেষ করে বিশ্বকাপের পর শ্রীলঙ্কায় জাতীয় দলের পারফরম্যান্সও খুব আশাব্যঞ্জক কিছু নয়। যদিও একটি যুক্তি দাঁড় করাতে চাইলেন এ সাবেক অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপ শেষ করে আমরা এক কন্ডিশন থেকে আরেক কন্ডিশনে খেলতে গিয়েছি। অনুশীলন করারও খুব বেশি সুযোগ পায়নি। ঠাণ্ডা থেকে এসে গরমে খেলছে।’ তাই বলে ত্রুটি-বিচ্যুতিও তাঁর চোখ এড়িয়ে যাচ্ছে না, ‘তার পরও পর্যালোচনা করার সুযোগ আছে। ফিটনেস নিয়েও কিছু প্রশ্ন আছে। কারণ ফিল্ডিং তো খারাপ হচ্ছে। এটি নিয়েও কাজ করতে হবে। কারণ ফিটনেস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওটা ঠিক না থাকলে তো ফিল্ডিং খারাপ হবেই।’
খেলোয়াড় সংকট নিয়ে দুর্ভাবনার মধ্যেও মিনহাজুল আশার ঝিলিক দেখতে পাচ্ছেন এখানে, ‘এর মধ্যেও একটি ভালো দিক হলো, এ মাসের মধ্যেই কিন্তু আমাদের ৬০ জন ক্রিকেটার খেলছে। বেঙ্গালুরুতে একটি দল খেলছে। অনূর্ধ্ব-১৯ দল ইংল্যান্ডে খেলছে। ‘এ’ দল দেশে খেলছে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। এই মাস শেষে আমরা একটি জায়গায় কিন্তু যেতে পারব। বুঝতে পারব কাকে কোন জায়গায় খেলানো যায়। প্ল্যাটফর্মে এখন ৬০ জন খেলোয়াড় আছে। পারফরম্যান্স পর্যালোচনা করে একটি জায়গায় আমরা যেতে পারব।’ সেই সঙ্গে এও যোগ করেছেন, ‘কিছু প্রতিভা তো অবশ্যই আছে। ছয়-সাতজন খেলোয়াড় অন্তত একটি জায়গায় এসেছে।’ যদিও সাম্প্রতিক ম্যাচ পরিসংখ্যান সে আশার আলো দেখাচ্ছে সামান্যই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।