জুমবাংলা ডেস্ক : কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে স্বর্ণের গহনা ভেসে আসছে এমন খবরে সৈকতে ভিড় করেছেন উৎসুক মানুষ। তবে স্বর্ণের গহনা ভেসে আসার খবরটি সম্পূর্ণ গুজব বলে দাবি করেছে টুরিস্ট পুলিশ। মানুষকে গুজবে কান না দেয়ার অনুরোধও করেছে টুরিস্ট পুলিশ।
টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, সৈকতে স্বর্ণের গহনা ভেসে আসছে-এটি সম্পূর্ণ বিব্রতকর একটি খবর। সৈকতে স্বর্ণের খনি থাকলে তো স্বর্ণ ভেসে আসবে। এটি সম্পূর্ণ গুজব। তাই মানুষকে এমন গুজবে কান না দেয়ার অনুরোধ করছি।
মঙ্গলবার (৭ জুলাই) সরেজমিনে সৈকতে গিয়ে দেখা যায়, সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা, শৈবাল ও কলাতলী পয়েন্টে কিছু উৎসুক মানুষ ভিড় করছেন। আর কিছু মানুষ সৈকতের হাঁটু পরিমাণ পানিতে কিছু খোঁজ করছেন। টুরিস্ট পুলিশ প্রতিটি পয়েন্টে গিয়ে এসব মানুষকে সরিয়ে দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে সৈকতে স্বর্ণ খুঁজতে আসা শহরের ঘোনারপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, আমি সৈকতে ওয়াটার বাইকের চাকরি করি গত ৩০ বছর ধরে। এখানে সৈকতে পর্যটকদের কানের দুল ও আংটি পড়ে, এগুলো পাওয়া যায়। কিন্তু আমি পাইনি; তবে ৪ বছর আগে এক পর্যটকের একটি কানের দুল পেয়েছিলাম। পরে যে পর্যটকের কানের দুলটি পড়ে গিয়েছিল তাকে দিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না। আজকে দিনভর খাবার-দাবার না খেয়ে সৈকতে অনেক খোঁজাখুঁজি করে চারটা পয়সা পেয়েছি। তবে স্বর্ণের কোনো দেখা মেলেনি সৈকতে।
সৈকতের ফটোগ্রাফার নাসির বলেন, সৈকতে নাকি স্বর্ণ পাওয়া যায়, তাই আমি সৈকতে এসেছি স্বর্ণ খোঁজার জন্য। কিন্তু আমি ২০১৮ সাল থেকে সৈকতে পর্যটকদের ছবি তুলি; কিন্তু কোনোদিন শুনিনি যে, এখানে স্বর্ণ পাওয়া যায়। এখন শোনা যাচ্ছে সৈকতে নাকি স্বর্ণ পাওয়া যায়, তাই আসলে ঘটনাটি সত্য কিনা তা যাচাইয়ের জন্য আসা।
এদিকে গত ১৯ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত করোনা পরিস্থিতির কারণে সমুদ্র সৈকতসহ কক্সবাজারের পর্যটন স্পটগুলো বন্ধ রয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে মানুষের আনাগোনাও দীর্ঘদিন ধরে একটানা বন্ধ রয়েছে। গত কয়েকদিন আগে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমুদ্র সৈকতে স্বর্ণের গহনা কুড়িয়ে পেয়েছেন বলে খবর বিভিন্নজনের কাছে প্রচার করেন। এটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হলে উৎসুক মানুষ স্বর্ণের গহনার সন্ধানে সৈকতে আসতে শুরু করেন।
তবে পুলিশ করোনাকালে সৈকতের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নানাভাবে চেষ্টা করছে। এতে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ টুরিস্ট পুলিশের।
সৈকতে লাবণী পয়েন্টে দায়িত্বপালনকারী টুরিস্ট পুলিশের সদস্য ইসফাকুল হাবিব বলেন, সকাল থেকে সৈকতে দায়িত্বপালন করছি, কিন্তু এ পর্যন্ত শুনিনি কেউ সৈকতে স্বর্ণ পেয়েছে। এখানে কিছু মানুষ সৈকতে ঘুরছে তাদেরতুলে দিচ্ছি। তাদের কাছে জিজ্ঞেসও করেছি তারা কিছু পেয়েছে কিনা। কিন্তু তারা বলছেন, সৈকতে কিছুই পাওয়া যায়নি। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সৈকতে অনেক খোঁজাখুঁজির পর সর্বোচ্চ একটা কয়েন পেয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, স্বর্ণ ভেসে আসার খবরটি সম্পূর্ণ গুজব। এ গুজবে কান দিয়ে এখানকার অনেক মানুষ সৈকতে ভিড় করেছে। এটা আসলে কিছুই না। এ গুজবে যারা সৈকতে ছুটে আসছে তাদের আমরা সৈকত থেকে সরিয়ে দিচ্ছি।
এ ব্যাপার পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে গত সাড়ে ৩ মাস ধরে কক্সবাজার সৈকত পর্যটক শূন্য। তাই করোনা পরিস্থিতিতে এমন খবরে মানুষকে সৈকতে ভিড় না করারও আহ্বান জানাচ্ছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।