মো. আবদুল মজিদ মোল্লা : বিশ্বের সর্ববৃহৎ জুবাইলের অবস্থান সৌদি আরবের পশ্চিম প্রদেশে। এখানেই মধ্যপ্রাচ্যের সর্ববৃহৎ এবং বিশ্বের চতুর্থ বৃহৎ পেট্রোকেমিক্যাল কম্পানি ‘সাবিক’ অবস্থিত। বিশ্বের সর্ববৃহৎ ‘ইন্ডিপেনডেন্ট ওয়াটার অ্যান্ড পাওয়ার প্রজেক্ট’ (আইডাব্লিউপিপি)-এর অবস্থানও এখানে। যা প্রতিদিন দুই হাজার ৭৪৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এবং আট লাখ লিটার পানি উৎপাদনে সক্ষম।
জুবাইল শিল্পনগরকে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ‘সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রজেক্ট’ও বলা হয়। সৌদি আরবের জিডিপিতে এই শিল্পনগরের অবদান প্রায় ৭ শতাংশ।
ইতিহাস : পারস্য উপসাগরের তীরে অবস্থিত এই অঞ্চলে খ্রিস্টপূর্ব সাত হাজার বছর আগে ‘দিলমুন’ বা ‘তিলমুন’ সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিল। পারস্য উপসাগর ও আরব উপসাগরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে তাদের বসবাস ছিল। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন দ্বারা জানা যায়, ‘দিলমুন’ সভ্যতার লোকেরা নৌবাণিজ্য ও মাছ শিকারে অভ্যস্ত ছিল। ১৯৭৫ সালে শিল্পনগর প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়ার আগ পর্যন্ত জুবিল মৎস্যজীবীদের শহর হিসেবেই পরিচিত ছিল।
১৯২৮ সালে জুবাইলে ক্রিজ টাওয়ার স্থাপন করা হয়। এটা ছিল জুবাইলের প্রধান পানির উৎস। ১৯৩৩ সালে সৌদি আরবের তেল অনুসন্ধানকারী দল তাদের ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ জুবাইল থেকেই শুরু করেছিল। সৌদি রাজপরিবারের অনুরোধে মার্কিন নির্মাণ প্রতিষ্ঠান বেচটেল ১৯৭০ সালে জুবাইল শিল্পনগরের নকশা প্রণয়নের কাজ আরম্ভ হয়। ১৯৭৫ সালে সৌদি সরকার জুবাইল আস-সিনাইয়্যাহ বা জুবাইল শিল্পনগর হিসেবে গড়ে তোলার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। শিল্পনগরী হলেও জুবাইলে আছে আদর্শ আবাসিক এলাকা। ২০০৫ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী জুবাইলের বসবাসকারীদের সংখ্যা দুই লাখ ২৪ হাজার ৪৩০ জন।
আয়তন ও সুবিধাগুলো : জুবাইল শিল্পনগরের আয়তন এক হাজার ১৬ বর্গ কিলোমিটার। এই জুবাইলের আছে নিজস্ব সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর, রেল ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। এ ছাড়া জুবাইলে বসবাসকারীদের জন্য আছে ২০টি স্কুল, তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় ও ৩০টির মতো হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্র।
৫০ বছরে শেষ হয়নি কাজ : প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে নির্মাণকাজ শুরু হলেও এখনো তা শেষ হয়নি; বরং পৃথিবীর সর্ববৃহৎ এই শিল্পনগরের আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণের কাজ প্রতিনিয়ত বাড়ছেই। ২০০৪ সালে ‘রয়েল কমিশন ফর জুবাইল অ্যান্ড ইয়ানবু’ দ্বিতীয় জুবাইল প্রকল্পের প্রস্তাব দিয়েছে এবং সম্প্রসারিত প্রকল্পের জন্য ৩.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেট ঘোষণা করেছে। আধুনিক এই শিল্পনগরের নির্মাণ ও সম্প্রসারণের কাজে নিযুক্ত আছে মার্কিন নির্মাণ প্রতিষ্ঠান বেচটেল।
তথ্যসূত্র : বেচটেল ডটকম
ওয়ার্ল্ড আটলাস ডটকম ও ইনসাইক্লোপিডিয়া অব ব্রিটানিকা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।