দীপক দেবনাথ: পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতজুড়েই ফের কোভিড-১৯ সংক্রমণ বাড়ছে। তারই মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন। স্বভাবতই আশঙ্কার মেঘ দেখছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি বিবেচনা করে ফের স্কুল-কলেজ বন্ধ করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মমতা।
বুধবার দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার গঙ্গাসাগরে প্রশাসনকি বৈঠকে করোনার গ্রাফ ঊর্দ্বমুখী হওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
স্বাস্থ্য সচিব নারায়ন নিগমের কাছে করোনা পরিস্থিতি জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। এ সময় স্বাস্থ্য সচিব জানান, ‘কলকাতা ও শহরতলি এলাকাগুলিতে সংক্রমণ বাড়ছে।’ যদিও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রস্তুত আছে বলেও জানান তিনি।
মমতার বক্তব্য ‘বাইরে থেকে যে বিমানগুলি আসছে তার মাধ্যমেই কোভিডটা বেশি ছড়িয়েছে। অনেকে ধরাও পড়ছে। কিন্তু অনেকেই সংক্রমণ নিয়েই বাড়ি চলে যাচ্ছে এবং অন্যের মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছে। ফলে সেদিকটাও নজর রাখতে হবে।’
ওই বৈঠকে উপস্থিত রাজ্যের শিক্ষা সচিব মণীশ জৈনকে উদ্দেশে করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘…গোটা দেশজুড়েই কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। সেই সাথে ওমিক্রন হচ্ছে। তাই এই সময়টাতে স্কুল-কলেজ চালু থাকবে কি না সেটা নিয়ে পর্যালোচনা করতে হবে। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা আছে, অতএব গোটা বিষয়টি দেখে নিতে হবে।’
মমতা আরও বলেন, ‘কোভিড পরিস্থিতির দিকে খেয়াল রাখতে হবে। যদি দেখা যায় স্কুলে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হচ্ছে তবে আবার কিছু দিনের জন্য ছুটি দেওয়া হবে। যেহেতু তৃতীয় ঢেউ আসছে।’
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ প্রায় ২০ মাস বন্ধ থাকার পর গত ১৬ নভেম্বর রাজ্যের স্কুল-কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। পুরোদমে স্কুল বা কলেজ খোলা না হলেও আংশিকভাবে অফলাইনে ক্লাস শুরু হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘লোকাল ট্রেনগুলি এখনই সব বন্ধ করাটা ঠিক হবে না। কিন্তু ট্রেনের সংখ্যা কমানো হতে পারে। সাধারণ মানুষের যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেটা খেয়াল রাখতে হবে।’
কলকাতায় নতুন করে কোনো কন্টেনমেন্ট জোন করা যায় কি না সে ব্যাপারটিও খতিয়ে দেখতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেক্ষেত্রে ৩ জানুয়ারি থেকে সেই সম্পর্কিত বিধি জারি করা যায় কি না তাও খতিয়ে দেখতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি প্রয়োজনে অফিসে যাওয়ার পরিবর্তে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ এর ওপর জোর দেওয়ার কথা বলেন তিনি।
মমতা বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ রোধে আগের মতোই মাস্ক, স্যানিটাইজ ব্যবহার করতে হবে। নিয়মিত হাত ধুতে হবে। কারণ ওমিক্রন ছড়াচ্ছে বেশি। তাই আমাদের সকলকেই কোভিড বিধি মেনে চলতে হবে। যদিও ভয় পাওয়ার কারণ নেই।’
উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তরফে জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী-মঙ্গলবার নতুন করে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৭৫২, এর মধ্যে কলকাতা শহরেই আক্রান্ত ৩৮২ জন। সবমিলিয়ে গোটা রাজ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত ১৬ লাখ ৩১ হাজার ৮১৭ জন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।