রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার মৌগাছি ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামের একটি ওয়াক্তিয়া মসজিদের উন্নতিকল্পে এক ইসলামি জলসার নিলামে ওঠা ৯৫০ টাকার অসময়ের আমটি দেখতে হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে আব্দুর রাজ্জাকের বাড়িতে। উচ্চমূল্যে নিলাম ও অসময়ের আম এই দুই মিলে এলাকায় রটে যাচ্ছে নানান রটনা।
বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) সকাল পর্যন্ত তার বাড়িতে প্রায় হাজার মানুষ ভিড় জমিয়েছেন বলে জানান আব্দুর রাজ্জাক। জানা যায়, মোহনপুর উপজেলার মৌগাছি ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামের একটি ওয়াক্তিয়া মসজিদের উন্নতিকল্পে মসজিদ কমিটি মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে ইসলামি জলসার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম। স্থানীয়রা মসজিদের বার্ষিক এ ওয়াজ মাহফিলে যোগ দিয়ে দান করেন স্বতঃস্ফূর্তভাবে। ওয়াজ চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। ওই সময় একটি আম দান করেন ফাহিমা বেগম নামে স্থানীয় এক নারী। অসময়ে লাল টুকটুকে আমটি নজর কাড়ে এলাকাবাসীর।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সবার নজর পাকা আমটির দিকেই। এক পর্যায়ে আমটি কিনতে দাম হাঁকাতে শুরু করেন স্থানীয় কয়েক যুবক। ২০ টাকা থেকে শুরু হওয়া আমের দাম গিয়ে ঠেকে ৯৫০ টাকায়! কিনে নেন আব্দুর রাজ্জাক নামের এক যুবক। স্থানীয়রা জানান, বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলে দান করা বস্তুগুলো ডাকের মাধ্যমে কিনে নেয়া হয় এবং সেই টাকা দানের মধ্যে গণ্য হয়। আম দেখে গভীর রাত জেগে আমটি ক্রয়ের জন্য দাম হাকান। সবশেষ ৯৫০ টাকয় বিক্রি হয় আমটি। আমটির সঙ্গে অনেককে সেলফিও তুলতে দেখা যায়। এ ঘটনায় এলাকায় বেশ কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে।
স্বপ্নে কীভাবে আমটি পেয়েছেন জানতে চাইলে ফাহিমা বেগম বলেন, পরপর তিনদিন আমাকে স্বপ্নে দেখানো হয় যে, আমার বাড়ির সামনের গোরস্তানে আম গাছের নিচে আম পড়ে আছে। স্বপ্নে দেখে সেখানে যাই এবং আমও দেখতে পাই। তবে ভয় হচ্ছিল আমটি নিতে। একবার ফিরে আসি। তবে অদৃশ্য আওয়াজে আমাকে আবারও সেখানে যেতে বাধ্য করা হয়। বাধ্য হয়ে পরের বার গিয়ে আমটি নিয়ে আসি এবং মসজিদে দান করে দেই। ফাহিমার ছেলে মোহাম্মদ মিঠুন জানান, গোরস্তানের ওই জায়গায় কয়েকটি আমের গাছ রয়েছে। সেখানে প্রচুর আম ধরে। এছাড়া সেই আমগুলো সামান্য টক। তবে আমটির নাম তিনিও বলতে পারেননি।
এ ব্যাপারে মসজিদ কমিটির সদস্য বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সাদেকুল বলেন, পুরো ওয়াজ মাহফিলের অন্যতম আগ্রহের বস্তু ছিল আমটি। এ রকম অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা ঘটতে পারে বলে আমার আগে ধারণা ছিল না। শেষ পর্যন্ত সেটিই হয়েছে। সোনার নাকফুলের দাম ১ হাজার ৫০ টাকা হলেও একটি আমের দামই হাঁকিয়েছেন ৯৫০ টাকা। অবশ্য রাজশাহী ফল গবেষণা ইন্সটিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জিএমএম বারি ডলার অসময়ে রঙিন আমে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, সবেমাত্র গাছে মুকুল ফুটেছে। আর সেই রকম কোনো আম এই অসময়ে হয় তা আমার জানা নেই। তবে কিছুদিন আগেই ‘বারি-১৪’নামের রঙিন আমের জাত জাতীয় নিবন্ধন বোর্ডে অনুমোদন পেয়েছে। এই ‘বারি-১৪’অসময়ে পাওয়া অসম্ভব। ওই রঙিন আম হয়তো বাইরের কোনো দেশের হতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।