করোনার একটি উপসর্গ হলো খাবারের গন্ধ বা স্বাদ কিছুই বুঝতে না পারা। অথচ সুস্থ অবস্থায় সে পোলাও–কোরমা খুব মজা করে খায়। তাহলে করোনা হলে এই স্বাদ কোথায় যায়? আসলে স্বাদ থাকে, কিন্তু জিহ্বা সেটা টের পায় না। কারণ, স্বাদ গ্রহণের সূক্ষ্ম স্নায়ুকোষগুলো থাকে জিহ্বায়।
করোনায় আক্রান্ত হলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ওগুলো সাময়িকভাবে অকার্যকর হয়ে যায়। কয়েক সপ্তাহ পর অবশ্য স্বাদ আবার ফিরে আসে। জিহ্বার স্বাদ গ্রহণের সক্ষমতার বিষয়টি খুব মজার। অনেক সময় জিহ্বা আমাদের বিভ্রান্ত করে। যেমন ডায়াবেটিসের রোগীদের অনেকে ডায়েট সোডা পান করেন, কারণ ওই পানীয়তে চিনি থাকে না। তাহলে মিষ্টি হয় কীভাবে?
আর মিষ্টিই যদি হবে, তাহলে চিনি বা ওই জাতীয় কিছু ছাড়াই কীভাবে মিষ্টি হয়? আসলে ডায়েট সোডায় এমন একধরনের রাসায়নিক উপাদান থাকে, যাকে বলা যায় ‘কৃত্রিম চিনি’। এটা ডায়াবেটিসের জন্য ক্ষতিকর নয়, কিন্তু জিহ্বার স্বাদ গ্রহণের স্নায়ুকোষগুলোকে উজ্জীবিত করে। তখন জিহ্বা থেকে মস্তিষ্কে খবর যায়, পানীয়টা মিষ্টি।
আমরাও নির্ভয়ে ডায়েট সোডা পান করি। বিশ্বজোড়া এর চাহিদা। আজকাল আমরা অনেকেই ডায়াবেটিস না থাকলেও ডায়েট পানীয় বেশি পছন্দ করি। চিনিযুক্ত পানীয় ও ডায়েট সোডার মধ্যে পার্থক্য মানুষের জিহ্বা ধরতে পারে না। কিন্তু কিছু প্রাণী ঠিকই ধরতে পারে। যেমন ইঁদুর। মিষ্টিজাতীয় পানীয় ইঁদুর খুব পছন্দ করে।
কিন্তু অবাক ব্যাপার, ওরা ডায়েট পানীয় পছন্দ করে না। একটু চেখে স্বাদ নেয়, তারপরই চলে যায়। তার মানে শুধু অপছন্দ করে, তা–ই নয়, খাওয়ার অযোগ্য মনে করে। এ তো অভাবনীয়। যে ইঁদুর কাগজ–কাপড় কুচি কুচি করে কাটতে ওস্তাদ, যেকোনো খাবার খেতে যার জুড়ি নেই, সে কেন মিষ্টি ডায়েট পানীয় খেতে চায় না? এর কারণ কী?
সাধারণ চিনি মেশানো পানীয় ও ডায়েট পানীয়—দুটিই তো সমান মিষ্টি, তাহলে ডায়েটে ইঁদুরের বিতৃষ্ণা কেন? বিষয়টি বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, ইঁদুরের মুখে চিনির মিষ্টির স্বাদ গ্রহণের উপযুক্ত স্নায়ুকোষ রয়েছে। কিন্তু ডায়েট সোডায় ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থের স্বাদ গ্রহণের সক্ষমতা তো নেই–ই, উপরন্তু ওই সোডা ইঁদুরের মুখে বিস্বাদ লাগে। তাই ডায়েট সোডা মানুষকে ফাঁকি দিতে পারলেও ইঁদুরকে ফাঁকি দিতে পারে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।