জুমবাংলা ডেস্ক : দেখে মনে হবে যে কোন সাধারণ দম্পতি। অথচ নারী ও শিশু পাচার ও দেহ ব্যবসার মতো লোমহর্ষক ব্যবসার হোতা তারা। টার্গেট করে নারী ও শিশুদের আস্থা অর্জনের পর ভুলিয়ে ভালিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ভারতে। তারপর শুরু হয় ধর্ষণের মতো অমানবিক নির্যাতন। রাজধানীর কিশোরীকে সীমান্ত থেকে উদ্ধারের পর এ চক্রের ২৬ বছর বয়সী মূল হোতাকে গ্রেফতার করে সিআইডি।
প্রতীক খন্দকার নামে নারী পাচারকারী চক্রের এই তরুণ, জান্নাতুল ওরফে জেরিন নামে এক তরুণীকে নিজের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে রাজধানীর পশ্চিম মাদারটেক এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে সাবলেট থাকতেন। সেই ফ্ল্যাটেই ১৪ বছরের কিশোরী মেয়েকে নিয়ে বসবাস করতেন এক নারী। মূলত পাচারের উদ্দেশ্য নিয়েই প্রতারক প্রতীক ও জেরিন ওই বাসা ভাড়া নেন এবং কিশোরীর সঙ্গে ঘনিষ্টতা গড়ে তোলেন।
এক পর্যায়ে তাকে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে ভুলিয়ে ভালিয়ে বেনাপোল নিয়ে গিয়ে একটি বাড়িতে আটকে রাখেন। বেনাপোলে গণধর্ষণের শিকার হয় ঐ কিশোরী। এই কিশোরীকে মালয়েশিয়ায় ভালো চাকরি ও উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে ভারতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের করে নিয়ে যান প্রতারক প্রতীক ও জেরিন। ভারতে পাচার হওয়ার আগে পুলিশ বেনাপোল থেকে উদ্ধার করে তাকে।
চক্রটির বিরুদ্ধে আরেক নারীকে ভারতে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ এসেছে। ভুক্তভোগী দেশে ফিরে এসে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে তার ওপর চালানো পৈশাচিক নির্যাতনের কাহিনী তুলে ধরেন। ওই নারীকেও সৌদি আরবে ভালো চাকরি দেয়ার কথা বলে প্রথমে ভারতে পাচার করে চক্রটি।
এভাবে এই প্রতারক চক্রটি বেশ কয়েক বছর ধরে দেশ থেকে নারীদের বিদেশে নিয়ে গিয়ে ভালো চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে দেহ ব্যবসার উদ্দেশ্যে বিক্রি করে দিতো।
মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) রাজধানীর মালিবাগে নিজেদের কার্যালয়ে ব্রিফিং-এ সিআইডি জানায়, সংঘবদ্ধ এই চক্রের মূল হোতা প্রতীককে তারা চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করেন। এর আগে প্রতীকের সহযোগী জেরিন গ্রেফতার হলেও এখন জামিনে মুক্ত। এই চক্রের আরো দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের মূল হোতাসহ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হলেও পুরো চক্রটির সব সদস্যকে তারা গ্রেফতারের চেষ্টা করছেন।
ব্রিফিং এ সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ রেজাউল হায়দার আরো জানান, এই চক্রটি প্রথমে নারী ও শিশুদের টার্গেট করে। এরপর তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করে পাচার ও দেহ ব্যবসায় বাধ্য করে থাকে।
চক্রটি মালয়েশিয়া, সৌদি আরব ও দুবাই এ ভালো চাকরী দেয়ার কথা বলে নারী ও তরুণীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে যখন তাদেরকে বিশ্বাস করতে শুরু করে তখন তারা বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যায়। চক্রটি দেহ ব্যবসা করানোর উদ্দেশ্যে তাদেরকে মূলত বিক্রি করে দিতো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।