জুমবাংলা ডেস্ক : ময়মনসিংহের ভালুকায় খোকন মিয়া (৪৫) নামে এক রিকশাচালককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গোপনে দাফন করার উদ্দেশ্য গোসল করানোর সময় শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতে চিহ্ন দেখতে পেয়ে নিহতের পরিবারের লোকজন পুলিশে খবর দেয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ ৩ জনকে আটক করেছে।
বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার জামিরদিয়া গ্রামের কড়ইতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত খোকন গফরগাঁও উপজেলার খারুয়ামোকন্দ গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খোকন মিয়া গত দুই বছর যাবত জামিরদিয়া এলাকার মাইন উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া থেকে রিকশা চালাতেন। তার স্ত্রী দেলোয়ারা খাতুন (৪০) রিদিশা টেক্সাটাইল মিল ও ছেলে রাসেল মিয়া (২০) আরিফ কম্পোজিট মিলে চাকরি করতো। তাদের সংসারে প্রায় সময় ঝগড়া গেলে থাকতো।
ভোরে ছেলে রাসেল ডিউটির জন্য বাসা থেকে বের হয়ে দেখেন তার বাবা কাঁঠাল গাছে ঝুলছে। বাবার লাশ দেখতে পেয়ে রাসেল মিয়া বাসার মালিককে ডেকে আনেন। ঘটনাটি দেখালে তিনি (মাইন উদ্দিন) লাশটি দাফনের জন্য গফরগাঁও এ তাদের নিজ বাড়িতে নিয়ে যেতে বলেন।
সকালে রিকশায় লাশ বসিয়ে মা দেলোয়ারা খাতুন লাশ ধরে রাখে আর ছেলে রাসেল রিকশা চালিয়ে লাশ গফরগাঁও-এ গ্রামের বাড়িতে দাফনের জন্য যান। খোকন মিয়ার বাড়িতে লাশের গোসল দেয়ার সময় খোকনের অন্ডকোষ থেঁতলানো, পিঠ ও হাঁটুতে আঘাতের চিহ্ন দেখে ছেলে ও স্ত্রীকে স্থানীয় লোকজন আটক করে। পরে গফরগাঁও থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয় তাদের।
গফরগাঁও থানার ওসি (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন মৃতের গায়ে আঘাতের চিহ্ন দেখে ভালুকা মডেল থানা পুলিশকে খবর দেন। ভালুকা মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাসার মালিক মাইন উদ্দিনকে তার বাসা থেকে থানায় নিয়ে যান।
মৃত্যুর ঘটনা সন্দেহ হওয়ায় ভালুকা থানার এসআই ইকবাল হোসেন নিহতের বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন।
পুলিশ ধারণা করছে, খোকনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রেখা হয়েছিল।
বাসার মালিক মাইন উদ্দিন বলেন, ভোরে নিহতের ছেলে আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে জানায় তার বাবা ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। আমি তাদেরকে বলি লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যেতে। তারা রিকশা দিয়ে লাশ গফরগাঁও-এ নিয়ে যায়।
গফরগাঁও এর রাওনা ইউপি’র চেয়ারম্যান সহাবোল আহম্মেদ জানান, মা ও ছেলে মিলে রিকশায় করে ভালুকা থেকে লাশ আনে। গায়ে আঘাতের চিহ্ন দেখে এ মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ হচ্ছে।
লাশের সুরতহাল প্রস্তুতকারী ভালুকা মডেল থানার এসআই ইকবাল হোসেন জানান, নিহতের পায়ে, পিঠে ও অন্ডকোষে আঘাতের চিহ্ন দেখে মনে হয় এটা আত্মহত্যা নয়। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্ত্রী ও ছেলেকে থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ভালুকা মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন জানান, এটা আত্মহত্যা নয়। ধারণা করা হচ্ছে এটা হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ জনকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।