জুমবাংলা ডেস্ক : বর্তমানে দেশের সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তি ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীর। নিজের উচ্চভিলাসের উদ্দেশ্যে পূরণ করতে নানা সময় নিয়েছেন নানাবিধ অবৈধ পন্থা, অপকৌশল ও প্রতারণার আশ্রয়। তৈরি করেছেন ভুঁইফোড় সংগঠন ও আইপি টেলিভিশন।
বৃহস্পতিবার রাতে হেলেনার বাসায় অভিযান চালিয়ে বেশকিছু অবৈধ দ্রব্য ও পণ্য উদ্ধারসহ তাকে আটক করা হয়। হেলেনার বাসভবন থেকে তখন উদ্ধার করা হয় ১৯ বোতল বিদেশি মদ। পাওয়া যায় হরিণ ও ক্যাঙ্গারুর চামড়া, ক্যাসিনোর ৪৫৬টি চিপস, দুটি ওয়াকিটকি সেট। বিদেশি মুদ্রাও উদ্ধার করা হয়েছে।
এরপর জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে র্যাব।
র্যাব হেলেনা জাহাঙ্গীরকে খুবই উচ্চভিলাসী নারী হিসেবে অভিহিত করেছে। আর নিজের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে সবধরনের পন্থা অবলম্বন করেছেন তিনি।
শুক্রবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গৃহবধূ থেকে ব্যবসায়ী হয়ে সিআইপির (কমার্শিয়ালি ইমপরটেন্ট পার্সন) স্বীকৃতি পাওয়া হেলেনা জাহাঙ্গীর ভুঁইফোড় একটি সংগঠনের প্রচার চালাতে গিয়ে আলোচিত হয়ে উঠেন।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, হেলেনা তার এজেন্ডা বাস্তবায়নে একটি সংঘবদ্ধ চক্রের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন, যারা অর্থের বিনিময়ে বা অবৈধ সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে অনৈতিক কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। এ সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যরা কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত রয়েছে। যারা বিভিন্ন সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মাঠ পর্যায়ে সক্রিয় রয়েছে।
খন্দকার মঈন বলেন, হেলানা জাহাঙ্গীর উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মানহানি ও সুনাম নষ্ট করেছেন। এছাড়া তিনি মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচার করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছেন। তিনি খ্যাতি লাভের আশায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে সম্মানিত ব্যক্তিবর্গদের বিব্রত করতেন।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, অনৈতিক পন্থায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেকে খ্যাতনামা হিসেবে উপস্থাপন করতে চতুরতার আশ্রয় গ্রহণ করতেন। এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে তিনি (হেলেনা) একটি সংঘবদ্ধ চক্র তৈরি করেছেন। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে ফেসবুক লাইভে এসে অযাচিত ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন সম্মানিত ব্যক্তিদের কটাক্ষ ও উত্ত্যক্ত করতেন। পরবর্তীতে ফোন করে তাদের হেয় করতেন। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে তার অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতেন।
র্যাবের পরিচালক বলেন, হেলেনা অপকৌশলের মাধ্যমে নিজেকে ‘মাদার তেরেসা’, ‘পল্লী মাতা’, ‘প্রবাসী মাতা’, হিসেবে পরিচিতি পেতে জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। তার পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘবদ্ধ চক্রটি হেলেনাকে এসব ‘ভুয়া খেতাব’ নামে ডাকতো।
এছাড়া বিভিন্ন দেশি বা বিদেশি সংস্থা ও ব্যক্তি থেকে ‘জয়যাত্রা ফাউন্ডেশন’ নামে অর্থ সংগ্রহ করতেন। যা মানবিক সহায়তায় ব্যবহারের চেয়ে খেতাব প্রচার প্রচারণায় বেশি ব্যবহার করা হতো। তিনি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে নিজের বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেন। তিনি প্রায় ১২ ক্লাবের সদস্য।
র্যাবের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়েছে, হেলেনা জাহাঙ্গীরকে ‘নাতি’ বলে সম্বোধন করেন অনলাইনে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদানকারী অস্ট্রিয়া প্রবাসী সেফুদা। সেফুদার সঙ্গে হেলেনা জাহাঙ্গীরের যোগাযোগ ও লেনদেন রয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে র্যাব।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।