শেরপুরে কর্মহীনদের জন্য ভিক্ষার দশ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া সেই দানবীর ভিক্ষুক নজিম উদ্দিন পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর উপহার। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সরকারি জমিতে একটি ঘর, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি দোকান ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার ভরনপোষণ এবং চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে।
বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষ রজনীগন্ধায় সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব। জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব বলেন, নজিম উদ্দিন ঘর নির্মাণের জন্য ভিক্ষা বৃত্তি করে দুই বছরে পনেরো হাজার টাকা জমায়।
সেখান থেকে দেশের এই ক্লান্তিলগ্নে দশ হাজার টাকা উপজেলা প্রশাসনের করোনা তহবিলে জমা দেয়ায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে এই সংবর্ধনা প্রদান করা হলো। যার দৃষ্টান্ত মাইলফলক হয়ে থাকবে। মহতী কাজটি এই সভ্য সমাজে আলোর পথ দেখিয়েছেন। প্রথমে নজিম উদ্দিনকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন জেলা প্রশাসক এবং ফুলের তোড়া দিয়ে সংবর্ধনা জানান।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এবিএম এহছানুল মামুন, ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবেল মাহমুদ, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারি কমিশনার আশরাফুল আলম রাসেল, শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ খায়রুল কবির সুমনসহ জেলার গণমাধ্যমকর্মীরা।
ভিক্ষুক নজিম উদ্দিন বলেন, আমি আগে দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাতাম। পরে প’ঙ্গু হয়ে যাওয়ার ফলে ভিক্ষা বৃত্তি করে তার সংসার চলায়। আমার স্ত্রী আবেদা খাতুনও প’ঙ্গু। আমার পরিবারে তিন ছেলে তিন মেয়ে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ভিক্ষাবৃত্তি করে নিজের বসত ঘর মেরামতের জন্য দুই বছর ধরে জমানো দশ হাজার টাকা ক’রো’নায় বিপ’র্যস্ত কর্মহীন ও নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ত্রাণ তহবিলে জমা দেন উপজেলার গান্ধিগাঁও এলাকার ভিক্ষুক নাজিমুদ্দিন।
এ ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর হয়। পরে বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে তাকে সংবর্ধনা ও প্রধানমন্ত্রীর এসব উপহার তাকে দেওয়া হয়।
পু’লি’শ মানেই রুক্ষ মুখ, নীল পোশাক আর লা’ঠিপে’টা করার যন্ত্র নয়, পু’লি’শের ক’ঠোর বহিরঙ্গের আড়ালে নরম একটা মন আছে সেই ধারনা শাখা প্রশাখা ছড়াতে শুরু করেছে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে। দেশে ক’রো’না ভা’ইরা’সের প্রাদুর্ভাব দেখা দেবার পর তা আরো স্পস্টই হয়ে উঠছে। মানবিক পু’লি’শের আচরনে পু’লিশের প্রশংসা মানুষের মুখে মুখে।
ক’রো’না ভা’ইরা’সের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে চলছে সাধারণ ছুটি। কিন্তু ছুটি নেই পু’লিশের । দিন রাত কাজ করছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে। শুধু আ’ইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নয়। কাজ করছে সব শ্রেনীর মানুষের জন্য। সব রকম কাজ। সাধারণ মানুষের যাতে ক’ষ্ট না হয় সে জন্য ঘরে ঘরে খাবার পৌছে দিচ্ছেন। এইতো গত সপ্তাহের ঘটনা।
আমেনা বেগমের বাসায় গিয়ে গাজীপুরের পু’লিশ সুপার (এসপি) শামসুন্নাহার খাদ্যসামগ্রী দিয়ে এসেছিলেন। বৃদ্ধা মহিলাতো বাড়িতে পু’লিশ সুপারের আকস্মিক আগমনে অ’বাক হন অনেকে। হঠাৎ খাবার নিয়ে বাড়িতে এসপি আসায় তার মন ভরে গেছে। তিনি মন ভরে এসপি ও পু’লিশের জন্য দোয়া করেন। শুধু পু’লিশ সুপার শামসুন্নাহারই নয় এরকমটা দেশের সব পু’লিশই চেষ্টা করছে।
ক’রো’না ভা’ইরা’সের সং’কটময় মুহূর্তে নড়াইলের লোহাগড়া থা’না পু’লি’শ সদস্যদের বেতনের টাকায় কর্মহীন ১০০ গরিব পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে।
ক’রো’না ভা’ইরা’স এ কেউ মা’রা গেলে স্থানীয় লোকজন পরিবারের লোকজন পর্যন্ত কাছে আসছে না এখানে পু’লি’শ জা’নাযা থেকে দা’ফ’ন পর্যন্ত করছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে দেখা গেছে ক’রো’নার ভ’য়ে ছেলে-মেয়েরা মাকে জঙ্গলে ফেলে দিয়ে গেছে অথবা চরে ফেলে আসা হয়েছে ক’রো’নাক্রা’ন্ত মনে করে।
এমন সব মানুষদের তুলে নিয়ে সেবা দিচ্ছে পু’লিশ। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে বিষয়টি স্পষ্ট আমাদের দেশে এত বড় সং’কট পূর্ণ মুহূর্তে নিজের জীবন বাজি রেখে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে পু’লিশ।
এদিকে, দিন রাত এক করে দেওয়া পু’লিশের মধ্যেও ক’রো’নাতাংক বিরাজ করছে ইতিমধ্যে আ’ক্রা’ন্ত হয়েছে অনেক পু’লিশ। সারাদেশে পু’লিশের ৬৫ এর বেশি সদস্য ক’রো’না আ’ক্রা’ন্ত হয়েছেন। সং’ক্র’মণের ঝুঁ’কি থাকায় ৬ শতাধিক পু’লিশ সদস্যকে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। সং’ক্রম’ক ঠেকাতে চিকিৎসকদের পরই পু’লি’শ অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, সং’ক্রম’ণ ঠেকাতে শুধু লাঠি হাতেই নয়, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে, কখনও কখনও পলায়নকৃত ক’রো’না রোগীকে ধরে আনা, ক’রো’না আ’ক্রা’ন্তের বাসা, ভবন ও এলাকা লকডাউন করা, ত্রাণ বিতরণসহ নানা কাজে দায়িত্ব পালন করছে পু’লি’শ। এসব করতে গিয়েই পু’লি’শ সদস্যরা ক’রো’না সং’ক্র’মিত হচ্ছেন।
পু’লিশের সুরক্ষার বিষয়ে এখন পর্যাপ্ত পরিমাণ সুরক্ষাসামগ্রী সরবরাহ করা যায়নি। আবার দায়িত্ব পালনের সময় ‘অসাবধানতাবশত’ সাধারণ মানুষের সংস্প’র্শে এসেও অনেক পু’লি’শ সদস্য সং’ক্রমি’ত হয়েছেন। এতে ঝুঁ’কিও বাড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পু’লিশ সদস্যদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা জরুরী।
বিশ্বের এমন পরিস্থিতি একসময় বদলে যাবে। বদলে যাবে বাংলাদেশও। শুধু মানুষের চাওয়া পু’লিশের ভাবমুর্তি অক্ষু’ন্ন থাকুক বি’পদ কেটে গেলেও। পুলি’শের জন্য ভালবাসাটুকু লেগে থাকুক জন্ম থেকে জন্মান্তরে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।