আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পৃথিবীজুড়ে গির্জাগুলো বড়দিনের সজ্জায় আলোকিত হলেও প্যারিসের নটরডেম ক্যাথেড্রাল যেন অন্ধকার। গত ২০০ বছরেরও বেশি সময়ের পর এবার ঐতিহ্যবাহী গির্জাটিতে বড়দিন পালন হচ্ছে না।
দ্য ন্যাশনাল জানায়, চলতি বছরের এপ্রিলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যায় ৮৫০ বছরের পুরোনো ক্যাথেড্রালটি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এত বেশি যে, সেটি সংস্কার করতে লেগে যাবে কয়েক বছর।
বড়দিন উদ্যাপন করতে না পারার ভাঙা মন নিয়ে ক্যাথেড্রালের ধর্মীয় প্রতিনিধি ও কর্মীরা পার্শ্ববর্তী একটি চার্চে জমায়েত হয়েছেন। গত বছরও নটরডেমে বড়দিন উদ্যাপন করেছিলেন ড্যানিয়েল নামে প্যারিসের একজন বাসিন্দা। তিনি বলেন, এপ্রিল থেকে আমাদের চোখের পানি ঝরছে। আজকে আরও বেশি।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ নটরডেম সংস্কারের জন্য ৫ বছরের একটি সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। এর মধ্যে আবার চালু হবে ক্যাথেড্রালটি। অক্টোবরের ফ্রান্সের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছে, ঐতিহ্যবাহী এই ধর্মীয় নিদর্শনটিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে অন্তত ১ বিলিয়ন ইউরোর একটি ফান্ড গঠন করা হবে।
প্রসঙ্গত, ১১৬৩ খ্রিস্টাব্দে রাজা লুইয়ের আমলে শুরু হয়েছিল নটর ডেম গির্জা তৈরির কাজ। ১৮২ বছর ধরে ধরে বানানো এই বিশাল ঐতিহ্যমণ্ডিত গির্জাটি প্রকৃত অর্থেই পৃথিবীর স্থাপত্যের ইতিহাসের এক অনিবার্য দলিল হিসেবে চিহ্নিত হয়। তবে শতকের পর শতক ধরে বহু বিপদেরও সম্মুখীন হতে হয়েছে ৬৯ মিটার অর্থাৎ ২২৬ ফুট উচ্চতার এই গির্জাকে।
ভিক্টর হুগোর বিখ্যাত উপন্যাস ‘দ্য হাঞ্চব্যাক অব নটর ডেম’ ফরাসিদের কাছে নটর ডেম ডি প্যারিস হিসেবে পরিচিতি এনে দিয়েছিল। ১৭৯০ সালে ফরাসি বিপ্লবের সময় এই গির্জার ভেতরে থাকা বহু স্থাপত্য ও চারুকলা একেবারে ধ্বংস করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে এর সংস্কার করা হয়।
ক্যাথেড্রালটির ভেতরে অসংখ্য ভাস্কর্য, মূর্তি এবং বহু মূল্যবান ও ঐতিহাসিক চিত্রকর্ম রয়েছে। যিশুখ্রিস্টকে যে পেরেক দিয়ে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়, নটরডেমেই তা সংরক্ষিত করা হয়েছে বলা হয়ে থাকে। ক্রুশবিদ্ধের সময় যিশুর মাথায় থাকা ‘ক্রাউন অব থর্নস’ও এখানে আছে। প্রতি বছর অন্তত ১.৩ কোটি মানুষ এই গির্জা দেখতে আসতেন।
![](https://inews.zoombangla.com/wp-content/uploads/2024/03/34-5.jpg)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।