জুমবাংলা ডেস্ক : ঠাকুরগাঁওয়ের হাটবাজারগুলোতে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন জাতের লিচু। থোকা বেঁধে শ’ হিসেবে এসব লিচু ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকে দেশের সর্বত্র। কিন্তু ঠাকুরগাঁওয়ে দেখা যায় এর ভিন্ন চিত্র। এখানে লিচু বিক্রি হচ্ছে প্লেট হিসেবে! লিচুর গ্রাম নামে পরিচিত পৌর শহরের মুন্সীরহাটে রাস্তার পাশে বসছে লিচুর বাজার। নারী-শিশু, যুবক, বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষই এ হাটের ব্যবসায়ী। প্রতি প্লেট লিচু বিক্রি করছেন বিশ থেকে এক শ’ টাকায়।
বৃহস্পতিবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, আশপাশের বিভিন্ন বাগান থেকে লিচু সংগ্রহ করে রাস্তার পাশে প্লেটে প্লেটে লিচু সাজিয়ে বসে আছেন তারা। আকার ও মান ভেদে বিভিন্ন দামে বিক্রি করছেন এসব লিচু। দামে সস্তা হওয়ায় এ বাজারে ক্রেতাদের ভিড় রয়েছে বেশ। নিম্ন আয়ের মানুষরাই এ বাজারের প্রধান ক্রেতা। বিশেষ করে যারা চড়া দামে বাজার থেকে শ’ হিসেবে থোকা ধরে লিচু কিনতে পারেন না, তারাই এখানে লিচু কিনতে ভিড় করেন বেশি।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, পৌর শহরের মুন্সীরহাট এলাকায় বেশ কিছু লিচুর বাগান রয়েছে। এসব বাগানে রয়েছে গোলাপী, চায়না-৩, মাদ্রাজী ও বোম্বেসহ বিভিন্ন জাতের লিচু। লিচু সংগ্রহের সময় বাগানের আশপাশের এলাকার লোকজন বাগানে গিয়ে লিচু সংগ্রহের কাজ করে। মজুরি হিসেবেও তারা লিচুই পেয়ে থাকে। পাশাপাশি বাগান মালিকরা সংগ্রহের পর বাগানে পড়ে থাকা লিচু কুড়িয়ে নেয় তারা। এতে তাদের দৈনিক ৫ থেকে ৭ শ’ লিচু সংগ্রহ হয়। সংগৃহীত এসব লিচু মুন্সীরহাট এলাকার রাস্তার দুই পাশে বিক্রি করছেন তারা। এতে করে নারী, শিশু, যুবক, বৃদ্ধরা লিচুর মৌসুমী ব্যবসা করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
লিচু বিক্রি করতে আসা মুন্সীরহাট গ্রামের শিশু হৃদয় জানায়, ‘বাগানে লিচু ভেঙ্গে দিয়ে ৫ শ’ লিচু পেয়েছি সেগুলো এখানে বিক্রি করছি।’
লিচু কিনতে আসা পৌর শহরের টিকাপাড়া মহল্লার বাসিন্দা হুসনেয়ারা বলেন, এ সময়টাতে প্রতি বছর এখানে আসি প্রতি প্লেট লিচু ২০ টাকা থেকে শুরু করে ১ শ’ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। চাহিদা অনুযায়ী খুব স্বল্প দামে ভালো লিচু পাওয়ায় এখানে কিনতে এসেছি।
মুন্সীরহাট ছাড়াও পৌর শহরের কালিবাড়ী বাজার, বাসস্ট্যান্ড, ঠাকুরগাঁও রোড, মুন্সীরহাট, গোধুলী বাজারসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ইতোমধ্যে বাজারে উঠতে শুরু করেছে লিচু। এর মধ্যে গোলাপী, চায়না-৩, বোম্বে, মাদ্রাজী, কাঠালী জাতের লিচু বিক্রি করতে দেখা যায়। প্রতি ১ শ’ গোলাপী জাতের লিচু বিক্রি হচ্ছে ১ শ’ থেকে দেড়শ টাকায়, এক হাজার লিচু বিক্রি হচ্ছে ৭ শ’ থেকে ৮ শ’ টাকায়। এগুলোর মধ্যে উৎপাদনকৃত চায়না-৩ জাতের লিচুর চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো: আবু হোসেন জানান, এ বছর জেলায় ৮৯৯ হাজার হেক্টর জমিতে লিচুর ফলন হয়েছে। এতে প্রতি হেক্টরে ৪ দশমিক ৫ মেট্রিকটন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে গোলাপী, মাদ্রাজী, চায়না-৩ জাতের লিচু বাজারে বিক্রি হতে শুরু করলেও আর কয়েক দিনের মধ্যেই অন্যান্য জাতের লিচুও বাজারে উঠবে। এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকরা ভালো দাম পাবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।