আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ট্রাম্পের ব্যক্তিত্ব, করোনো মহামারি ইত্যাদি নানা কারণে চলতি বছর অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে অভূতপূর্ব অনিশ্চয়তা দেখা যাচ্ছে৷ ফলাফল প্রকাশের পথে একাধিক বাধার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ খবর ডয়চে ভেলে’র।
আধুনিক যুগে বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন গণতন্ত্র যে এমন অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে পারে, কয়েক বছর আগেও এমনটা কল্পনা করা যেত না৷ অথচ ২০২০ সালের ৩রা নভেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কোন প্রার্থীর জয় হবে, সেই প্রশ্ন পেছনে ফলে মাথাচাড়া দিচ্ছে অন্য এক সংশয় – গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া কি এবার আদৌ নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হবে? সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন, বাধাহীন ভোটগণনা এবং শেষে জয়-পরাজয়ের ফয়সালা কি সম্ভব হবে? নাকি অশান্তি, হিংসা, কুৎসা ও বিচার বিভাগের হস্তক্ষেপের বেড়াজালে নির্বাচনের প্রকৃত ফলাফল জানতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে?
এমন আশঙ্কার পেছনে যথেষ্ট কারণ রয়েছে৷ প্রেসিডেন্ট হিসেবে খোদ ডনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনি প্রক্রিয়ার বিভিন্ন দিক নিয়ে ঘোর সংশয় প্রকাশ করে এসেছেন৷ বিশেষ করে ডাকযোগে ভোটের সুযোগ তার মোটেই পছন্দ ছিল না৷ অথচ করোনা মহামারির ফলে সোমবার পর্যন্ত দশ কোটি ভোটার সেই প্রক্রিয়ায় নিজেদের অধিকার প্রয়োগ করে ফেলেছেন, যা মোট নথিভুক্ত ভোটার তালিকার প্রায় অর্ধেক৷ মঙ্গলবারও বিশাল সংখ্যক মানুষ সশরীরে ভোট দিয়ে ভোটগ্রহণের রেকর্ড ভাঙতে পারেন, এমন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে৷
এমন পরিস্থিতিতে ৩রা নভেম্বর ভোটগ্রহণ পর্ব শেষ হবার পরেই সার্বিক ফলাফলের পূর্বাভাষ পাওয়া কঠিন৷ কারণ বেশ কিছু রাজ্যে ডাকযোগে দেওয়া ভোট গণনা প্রক্রিয়া কিছুটা এগিয়ে রাখলেও পেনসিলভেনিয়ার মতো রাজ্যগুলি নিজস্ব আইনের কারণে ৩রা নভেম্বর সেই কাজে হাত দেবার সুযোগ পাবে৷ ফলে প্রাথমিক ফলাফল বড়জোর একটা খণ্ডচিত্র তুলে ধরতে পারে৷ বিশেষ করে ‘ব্যাটেলগ্রাউন্ড’ বলে পরিচিত রাজ্যগুলিতে ট্রাম্প ও বাইডেনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পরিণতি জানতে কিছুটা সময় লাগতে পারে৷
‘পপুলার ভোট’ বা ভোটারদের রায়ের পাশাপাশি অ্যামেরিকার ইলেকটোরাল কলেজের বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশাও অনিশ্চয়তার আরেকটি কারণ হতে পারে৷ চলতি বছরে কয়েকটি রাজ্যে ইলেকটোরাল ভোট নিয়ে বিভ্রান্তির আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে৷ সে ক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত আদালতের হস্তক্ষেপ ছাড়া স্পষ্ট ফলাফল নাও সম্ভব হতে পারে৷ উল্লেখ্য, ২০০০ সালে এমন সংকটের জের ধরে অনেক অপেক্ষার পর ডিসেম্বর মাসে জর্জ ডাব্লিউ বুশ জয়ের দাবি করতে পেরেছিলেন৷
নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় বিবাদ আদালত, বিশেষ করে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ালে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে পড়তে পারে৷ ট্রাম্প তাঁর কার্যকালে সফলভাবে তিনজন বিচারপতি নিয়োগের সুযোগের সদ্ব্যবহার করে সুপ্রিম কোর্টে রক্ষণশীল শিবিরের আধিপত্য নিশ্চিত করেছেন৷ সর্বোচ্চ আদালত সংবিধানের তুলনায় ট্রাম্পের প্রতি আনুগত্যকে প্রাধান্য দিলে দেশজুড়ে প্রবল অসন্তোষের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না৷ বেগতিক দেখলে ট্রাম্পও মরিয়া হয়ে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে সুপ্রিম কোর্টসহ যে কোনো পথে হোয়াইট হাউসে ফেরার চেষ্টা করতে পারেন৷
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।