জুমবাংলা ডেস্ক : আবদুল মালাবারি ৩০ বছর ধরে বেওয়ারিশ মৃতদেহ দাফন করে আসছেন। তবে তিনি কখনই ভাবেননি যে তাকে এমন মানুষদের দাফন করতে হবে, যাদের পরিবার শেষ বিদায় জানাতে চেয়েও তা করতে পারবে না। জীবনের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও কঠিন এ পরিস্থিতির মধ্যে মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে তিনি এ কাজ করে যাচ্ছেন।
ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের সুরাটে ভাইরাসের কারণে যত মানুষ মারা যায়, কর্মকর্তারা ফোন করে আবদুল মালাবারিকে ডেকে নেন। করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত এ শহরটিতে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ২৪৪ জনকে কভিড-১৯ আক্রান্ত শনাক্ত করা হয়েছে। পুরো গুজরাটে শনাক্তের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজারের ওপরে।
সুরাটের জেলা প্রশাসক আশিস নায়েক বলেন, এমন কঠিন সময়ে আবদুল ভাই অনেক সহায়তা করছেন।
৫১ বছর বয়সী আবদুল বলেন, আমার কাজের নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। ফোন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি গাড়ি নিয়ে চলে আসি। এটা আমার কাজ, তাই ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও আমি এটা করতে রাজি হই। সংক্রমণ থেকে পরিবারকে রক্ষা করতে দল নিয়ে আমি এখন দাতব্য অফিসেই খাওয়া-দাওয়া করি।
এমন পরিস্থিতিতে ঝাঁপিয়ে পড়া আবদুলের এটাই প্রথম নয়। ৩০ বছর আগের এক ঘটনা তাকে এ কাজের প্রতি উৎসাহিত করেছিল। সে সময় সকিনা নামের এক অপরিচিত নারী এইচআইভি ভাইরাসে ভুগে হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। তার স্বামী ও ছেলে তাকে রেখে পালিয়ে গেলে এক মাস ধরে লাশটি মর্গে পড়ে থাকে। এরপর স্থানীয় কর্তৃপক্ষের আহ্বানে মাত্র ২১ বছর বয়সী আবদুল তাকে দাফন করতে এগিয়ে আসেন।
তিনি বলেন, সকিনার শরীর দুর্গন্ধযুক্ত ছিল। ইসলামিক রীতি অনুযায়ী তাকে গোসল করানোরও কেউ ছিল না। কারণ সে সময় ১৯৯০ সালে এইচআইভি সম্পর্কে খুব বেশি না জানায় এটাকে সংক্রামক মনে করা হতো। আর আমি একাও তাকে গোসল করাতে পারতাম না। কোনো উপায় না পেয়ে শেষে লাশের শরীরে এক বালতি পানি ঢেলে দিয়েছিলাম। সেই থেকে আজ পর্যন্ত দাফনের কাজ করে যাচ্ছি।
আবদুল মালাবারি ও তার দল এখন মাস্ক, গ্লাভস ও গাউন পরে কভিড-১৯ আক্রান্ত মৃতদেহ দাফন করেন। এ বিষয়ে তাদের প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।