জুমবাংলা ডেস্ক : একদিকে যেমন বেসরকারি কোম্পানিগুলোর ব্যবসা প্রতিনিয়ত বাড়ছে, তারই সাথে যেন পাল্লা দিয়ে কমছে রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি টেলিটকের বাণিজ্য। পাঁচ বছর আগে একবার লাভের মুখ দেখলেও গত ৫ বছর ধরে লোকসানেই রয়েছে। তাছাড়া গ্রাহক আকর্ষণেও পিছিয়ে রয়েছে এই কোম্পানি।
টেলিটক সূত্রে জানা গেছে, অন্য অপারেটরগুলোর গ্রাহক অনেক বছর আগেই কয়েক কোটি পার হলেও টেলিটক আটকে আছে ৪০ লাখের নিচে।তবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে অন্তত আয়ের দিক থেকে খানিকটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত অপারেটরটি। যদিও এখনও লোকসানে রয়েছে তারা। এর আগের দুই আর্থিক বছরে টেলিটকের মোট আয় কমেছিল। ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের তথ্য বলছে, শেষ হওয়া অর্থবছরে অপারেটরটি আগের বছরের তুলনায় ২২ দশমিক শূণ্য ৯ শতাংশ বেশি আয় করেছে। এতে অর্থবছরের শেষে তাদের রাজস্ব দাঁড়িয়েছে ৬০৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
২০১২ সালের আগস্টে টেলিটক ‘পরীক্ষামূলকভাবে’ থ্রিজি সেবা চালু করে। যেখানে অন্য অপারেটরগুলো থ্রিজির লাইসেন্স পায় ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে। তাদের সেবা চালু করতে লেগে যায় আরও কয়েক মাস।ফলে এই এক বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে টেলিটকের গ্রাহক হঠাৎ করেই অনেকটা বেড়ে যায়।
থ্রিজি ব্যবহারের সুযোগের কারণে ডেটা থেকে তাদের আয়ও বেশ বাড়ে।থ্রিজি’র ওই বৃদ্ধির ওপর দাঁড়িয়ে টেলিটক ওই বছরে ৯৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা লাভ করে। তারপর পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও বছর বছর কেবল লোকসানের অংক ভারি হয়েছে দেশীয় অপারেটরটির।তবে টেলিটক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে টেলিটক তাদের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের দিকে কিছুটা মনোযোগ দিয়েছে। নিজেদের অর্থায়নের পাশাপাশি তারা সরকার কাছে থেকে প্রকল্পও পাচ্ছে।এর মধ্যে অন্যদের চেয়ে ছয় মাস পরে হলেও গত ডিসেম্বরে তারা ফোরজি সেবা চালু করতে পেরেছেন এবং আয় কিছুটা হলেও বেড়েছে।টেলিটক আশা করছে, তাদের হাতে এখন যে কয়েকটি প্রকল্প রয়েছে সেগুলোর কাজ শেষ হয়ে গেলে তারা আবারো লাভে ফিরতে পারবে।তাছাড়া বর্তমানে সৌদি আরব এবং দক্ষিণ কোরিয়ার দুটি বিনিয়োগ প্রস্তাবও তাদের কাছে রয়েছে। যেগুলো অগ্রগতিও হচ্ছে বলে জানিয়েছেন টেলিটকের এক শীর্ষ কর্মকর্তা।কর্মকর্তারা বলছেন, এ দুই দেশের বিনিয়োগ প্রস্তাবের যে কোনো একটি যদি সফলতার মুখ দেখে তাহলে বড় তিন অপারেটরের সঙ্গে সমান তালে লড়াই করতে পারবেন তারা।বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) পরিসংখ্যান অনুযাযী, চলতি বছরের জুন শেষে টেলিটকের কার্যকর সংযোগ ছিল ৩৮ লাখ ৮৬ হাজার। অর্থ বছরের শুরুতে যা ছিল ৩৭ লাখ ৬৪ হাজার। এক বছরে যুক্ত হয়েছে এক লাখ ২২ হাজার।
উল্লেখ্য, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে যা ছিল ৪৯৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ওই অর্থবছরে দেশের সবচেয়ে কম গ্রাহকের অপারেটরটির মোট লোকসান হয়েছিল ২৭৭ কোটি তিন লাখ টাকা। আয় বাড়ায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এটি অবশ্য নেমে এসেছে ১৯০ কোটি ৫৭ লাখ টাকায়।টেলিটকের হিসেব বলছে, পাঁচ বছর আগে তারা একবার লাভ করেছিল। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে নিট মুনাফা করার পেছনে দেশে এককভাবে থ্রিজি সেবা দিতে পারার সুযোগ পাওয়া মূল কারণ ছিল বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।