অবশেষে শিশুকন্যার বাবার জিডি ও একটি ফোন কলের সূত্র ধরে পুলিশ এক নারীসহ ওই চক্রের তিনজনকে আটক করেছে। উদ্ধার করা হয়েছে অপহৃত শিশুকন্যাকে।
বৃহস্পতিবার রাতভর অভিযান চালিয়ে কৌশলে গোয়াইনঘাট থানার সালুটিকর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সদস্যরা শিশুকন্যাকে উদ্ধার ও চক্রের তিন সদস্যকে আটক করেন।
সালুটিকর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. শফিকুল ইসলাম খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
পুলিশ জানায়, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দীরগাঁও ইউনিয়নে ৯ বছর বয়সী এক শিশুকন্যা নিখোঁজ হয়েছিল গত ঈদুল আজহার ৩ দিন আগে। এ বিষয়ে শিশুকন্যার পিতা গোয়াইনঘাট থানায় প্রথমে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও পরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। প্রায় এক বছর পর অবশেষে ওই শিশু কন্যাটিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় উপজেলার তোয়াকুল ইউনিয়নের পূর্ব পেকেরখাল গ্রামের বটাই মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেনকে অভিযুক্ত করে গোয়াইনঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন নিখোঁজ শিশুকন্যার পিতা। অভিযোগ ও জিডির সূত্র ধরে গোয়াইনঘাট থানার সালুটিকর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. শফিকুল ইসলাম খান শিশু কন্যাটির সন্ধানে দীর্ঘদিন ধরে নানা কৌশল অবলম্বন করেন।
এক পর্যায়ে পুলিশ জানতে পারে শিশুটি কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার লাকসাম গ্রামের হালিমা বেগম নামের এক দেহ ব্যবসায়ীর হাতে রয়েছে। সে বর্তমানে সিলেট আবহাওয়া অফিস সংলগ্ন অনামিকা ৬২ নম্বর বাসায় বসবাসরত। হালিমা অপহরণকারীর কাছ থেকে শিশুকন্যাকে নিয়ে নিজের কাছে রেখে দেহব্যবসা করান।
সম্প্রতি তুলে দেন খদ্দের বিয়ানীবাজার উপজেলার বাড়ইগ্রামের সুরুজ আলীর ছেলে জসিম উদ্দিনের হাতে। জসিম উদ্দিন ওই শিশুকন্যাকে নিয়ে সিলেটের উপশহর এলাকার গুলবাহার হোটেলের ৫ম তলার ৫০৫ নাম্বার কক্ষে রেখে জোরপূর্বক একাধিকবার ধর্ষণ করে। ওই দিন কৌশলে শিশুকন্যাটি তার পিতার মোবাইলে ফোন করে।
মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে গোয়াইনঘাট থানার সালুটিকর তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে সিলেট শহর ও বিয়ানীবাজার উপজেলায় অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশের সহযোগিতায় জসিম উদ্দিনকে আটক করেন।
জসিম উদ্দীনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সিলেট শহরের উপশহরস্থ গুলবাহার হোটেলের ম্যানেজার জকিগঞ্জ উপজেলার দরিয়াপুর গ্রামের মৃত মদরিছ আলীর ছেলে ওয়াজিদ আলীকে আটক করেন। জসিম উদ্দিন ও ওয়াজেদ আলীকে আটকের পর শিশুকন্যাকে না পেয়ে তারা উভয়ের সহযোগিতা নিয়ে দেহ ব্যবসায়ী হালিমা বেগমকে মোবাইলে ওই শিশুকন্যাকে ৫ হাজার টাকায় চুক্তি করেন।
হালিমা বেগম ৫ হাজার টাকার চুক্তিমতো শিশুকন্যাকে নিয়ে হোটেল গুলবাহারে যান। এ সময় ওতপেতে থাকা পুলিশ হালিমাকে আটক করে এবং শিশুকন্যাকে উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট থানার ওসি আব্দুল আহাদ বলেন, ৯ বছরের একটি শিশু নিখোঁজ হয়েছিল। শিশুটির পিতা প্রথমে গোয়াইনঘাট থানায় একটি জিডি ও পরে লিখিত অভিযোগ করেন। এরই সূত্র ধরে গোয়াইনঘাট থানার সালুটিকর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মো. শফিকুল ইসলাম খান শিশুটিকে উদ্ধার করেন।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় জড়িত এক নারীসহ তিনজনকে আটক করা হয়। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। উদ্ধার শিশুকন্যাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে পাঠানো হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।