বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : সাতটি মহাদেশের কথা আমরা সবাই কমবেশি জানলেও জিল্যান্ডিয়া নামে যে আরও একটি মহাদেশ আছে, তা হয়তো অনেকেই জানেন না। অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত ওই মহাদেশের অবস্থানের বিষয়ে প্রায় ৩৭৫ বছরের জল্পনার পর নিশ্চিত হন ভূতাত্ত্বিকেরা।
সমুদ্রতলে ম্যাপিং, পাথরের নমুনা বিশ্লেষণ ও টেকটোনিক প্লেটের ভূতাত্ত্বিক পরীক্ষার পর ২০১৭ সালে আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব জিওগ্রাফার এবং আমেরিকান জিওলজিক্যাল সোসাইটি মহাদেশটির অস্তিত্বের কথা ঘোষণা করে।
এর আগে ডাচ ব্যবসায়ী ও নাবিক আবেল তাসমান ১৬৪২ সালে প্রথম এই মহাদেশের অস্তিত্বের কথা জানান। তখন তিনি ‘দক্ষিণ মহাদেশ’ বা টেরা অস্ট্রালিস আবিষ্কারের নেশায় মরিয়া ছিলেন। তেমন কোনো ভূখণ্ডের খোঁজ না পেয়ে একপর্যায়ে তিনি অবতরণ করেন নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণের এক দ্বীপে। সেখানে স্থানীয় আদিবাসী মাওরিদের সঙ্গে পরিচিত হন।
মাওরিদের সঙ্গে কথা বলেই তিনি দ্বীপটির আশপাশের ভূমি সম্পর্কে অনেক মূল্যবান তথ্য জানতে পারেন। এর মধ্যে দ্বীপটির পূর্বদিকে পানিতে নিমজ্জিত বৃহৎ এই স্থলভাগের কথাও জানতে পারেন। মাওরিদের ভাষায় এটিকে টে-রিউ-এ-মাউয়িই বলা হয়। এ ছাড়া আবেল তাসমানের নামের সঙ্গে মিলিয়ে জিল্যান্ডিয়াকে তাসমান্টিস নামেও ডাকা হয়।
এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপের মতো সুপরিচিত মহাদেশগুলোর মতো সাধারণ নয় প্রায় ১৮ লাখ ৯০ হাজার বর্গমাইল আয়তনের এই মহাদেশ। বেশির ভাগ এলাকা পানিতে ডুবন্ত হলেও এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ছোট দ্বীপ ও সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপরে কিছু স্থলভাগ রয়েছে। যেমন নিউজিল্যান্ড ও নিউ ক্যালেডোনিয়া।
ভূতত্ত্ববিদ নিক মর্টিমারের নেতৃত্বে ২০১৭ সালে জিল্যান্ড ক্রাউন রিসার্চ ইনস্টিটিউট জিএনএস সায়েন্সের ভূতাত্ত্বিকেরা মহাদেশটির অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হন
বিজ্ঞানীদের ধারণা, জিল্যান্ডিয়া ৫০ কোটি বছর আগে গন্ডোয়ানা নামে একটি বৃহৎ মহাদেশের অংশ ছিল, এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকা ও পূর্ব অস্ট্রেলিয়া। গন্ডোয়ানা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ৮৩-৭৯ মিলিয়ন বছর আগে এটি পানিতে তলিয়ে যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।