আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফ্রিকার বুরকিনা ফাসোয় অপহৃত শিশুসহ ৬৬ জন অবশেষে মুক্তি পেয়েছে। গত সপ্তাহে দেশটির উত্তরাঞ্চল থেকে বিদ্রোহীরা তাদের অপহরণ করে। গত ১২ ও ১৩ জানুয়ারি সাহেল অঞ্চলের সাউম প্রদেশের অরবিন্দা জেলার দুটি গ্রাম থেকে তাদের অপহরণ করে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা।
শুক্রবার রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম রেডিওডিফিউশন টেলিভিশন দু বুরকিনা, আরটিপি জানিয়েছে, এ ঘটনার পর দেশটির নিরাপত্তাবাহিনী উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে ৩৯টি শিশু ও ২৭ জন নারীকে উদ্ধার করে। গত আট দিন ধরে তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। এই অপহরণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘ। বুরকিনা ফাসো বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে একটি। দেশটি দীর্ঘদিন ধরেই সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে। ২০১৫ সালে মালিতে ছড়িয়ে পড়া আল কায়েদা ও ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো দেশটিতে একের পর এক সহিংস কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
জানা যায়, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতায় দেশটির কয়েক হাজার বেসামরিক নাগরিক ও নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য নিহত হয়েছেন। তাছাড়া প্রায় ২০ লাখ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে অস্থায়ী শিবিরে বসবাস করছে। সশস্ত্র বিদ্রোহীরা দেশটির শুষ্ক এবং প্রধানত গ্রামীণ উত্তরের অঞ্চল দখলে নিয়েছে। অভিযোগ আছে, শত শত গ্রামবাসীকে তারা হত্যা করেছে। এছাড়া প্রায়ই ঘটছে অপহরণের ঘটনা। মূলত ২০১৬ সাল থেকে বুরকিনা ফাসোয় সংকট শুরু হয়। ২০১১ সালে লিবিয়ার সরকার পতন, মালির ২০১২ সালের গৃহযুদ্ধ, এরপর মৌরিতানিয়া, নাইজার ও চাদের মতো অন্যান্য প্রতিবেশী দেশেও সংঘাত ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এর আগ পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই ছিল বুরকিনা ফাসোর।
তবে দেশটির রাজনীতির পট পরিবর্তন হয় ২০১৬ সালে রাজধানীর একটি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বন্দুকধারীদের হামলায় ৩০ জন নিহত হওয়ার পর। প্রেসিডেন্ট বারোকের ক্ষমতা গ্রহণের পর পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে প্রথম বড় আকারের সন্ত্রাসী হামলা এটি। ২০২১ সালের জুন মাসে দেশটির উত্তরাঞ্চলের সোলহান গ্রামে নির্বিচারে ১৩২ জনকে হত্যা করা হয়। সহিংসতা শুরুর পর এটিই সবচেয়ে বড় হত্যার ঘটনা দেশটিতে। রাষ্ট্রের দুর্বলতার কারণে এরকম হামলা আরো বাড়তে থাকে সম্প্রতি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।