লাইফস্টাইল ডেস্ক : শুধু পেটের ক্ষুধা বা জিবের লোভ মেটাতেই যে আমরা খাবার খাই, এ ধারণা ভুল। শরীরের সুস্থতার জন্যও আমাদের খেতে হয় নানা খাবার। সুস্বাদ বা বিস্বাদ এ খাবার প্রতিদিনের পাতে যুক্ত করতে পারলেই তবে মেলে নানা রোগ থেকে মুক্তি। এমন কিছু পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ খাবার রয়েছে যেগুলোকে বলা হয় সুপারফুড।
দেখে নেয়া যাক কোন কোন খাবারে পেতে পারেন সেরা সব পুষ্টিগুণ–
যে মাছে আছে ওমেগা-৩
ওমেগা-৩ হলো আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট যা মাছের তেলে পাওয়া যায়। তাই কম বেশি মাছ খেলেই ওমেগা-৩ পাওয়া যাবে। কিন্তু কিছু মাছে বেশি পরিমাণে ওমেগা-৩ পাওয়া যায়। বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছকে বলা হয় ওমেগা-৩ এর আধার। বিদেশি মাছ স্যামন, সার্ডিন, টুনা যেমন আমাদের ওমেগা-৩ দিতে পারে, তেমনি দেশি মাছ ইলিশেও পাবেন ওমেগা-৩। তবে নিয়ম হলো, তেলে ভেজে মুচমুচে করে খাওয়া চলবে না। মাছ যদি গ্রিল বা সেদ্ধ করে খাওয়া যায় তাহলে মাছে থাকা ওমেগা-৩ এর সর্বোচ্চটাই আপনি পাবেন। হতাশা বা উদ্বেগও কমায় মাছ। এছাড়াও ত্বক প্রাণবন্ত ও উজ্জ্বল করতে ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ মাছ কার্যকরী।
কাঁচা রসুনে কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণ
রসুন বা রসুন বাটা আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশের রন্ধনশৈলীর এক মূল উপাদান। তবে শুধু রান্না করতেই রসুন ব্যবহার করা চলবে না, প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ২/৩ কোয়া রসুন খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। কাঁচা রসুন বহু শতাব্দী ধরে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এছাড়া কোলন ক্যানসার মোকাবেলায় রসুন খাওয়া যেতে পারে। রসুন আপনার মস্তিষ্কের জন্যও উপকারী।
ক্যালসিয়াম থেকে পটাসিয়াম, সব আছে বাদামে
বাদামকে আমরা কেউই সিরিয়াসলি নেই না। আড্ডার ছলে দুই-তিনটা বাদাম মুখে পুরে দেয়া শুধুই অবসরের অভ্যাস। কিন্তু শুধু বাদামেই পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ই, তামা, ম্যাগনেসিয়াম, রাইবোফ্লাভিন, পটাসিয়াম, সেলেনিয়াম, জিঙ্ক, ভিটামিন বি, নিয়াসিন, থায়ামিন এবং ফলিক অ্যাসিড। যেন এক আদর্শ সুপার ফুড হলো বাদাম। ডায়বেটিস থাকলেও নির্দ্বিধায় বাদাম খেতে পারবেন আপনি, কেননা বাদাম শরীরে চিনির মাত্রা বজায় রাখে। বাদামের মধ্যে আখরোট ও চিনাবাদাম সবচেয়ে বেশি উপকারী।
ব্রাসিকাসিয়া পরিবারের সদস্য সব কপি
খেতে সুস্বাদু আবার দেহের জন্য উপকারী এমন কিছু সবজির নাম বলতে বললে কপি নিঃসন্দেহে আপনার পছন্দের তালিকায় জায়গা পাবে। ফুলকপি-বাধাকপি-ব্রকলি, এ তিন সবজিও সুপারফুড হিসেবে কাজ করে। রক্তকণিকা গঠন, ক্যানসারের ঝুঁকি কমানো, যৌন হরমোন উৎপাদন এরকম নানা গুণ রয়েছে এতে। ফাইবার বেশি কিন্তু ক্যালরি কম থাকায় যে কোনো ডায়েটেই এ সবজিগুলো খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
এনার্জি বুস্টার চিয়া সিড
ক্ষুদ্র দানাদার বীজ, পানিতে ভিজিয়ে রাখলেই ফুলে থকথকে এক আকার লাভ করে। চিয়া সিডের বর্ণনা এভাবেই দেয়া যেতে পারে। স্বাদহীন এ বীজ আপনার শরীরকে পুষ্টিতে ভরপুর করে তুলতে পারে। শুধুতে পানিতে ভিজিয়ে না, দইয়ের সঙ্গেও খাওয়া যায় চিয়া বীজ। এটি ওমেগা-৩, ফ্যাটি এসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবারের ভালো উৎস।
ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে লড়বে দই
সব ব্যাকটেরিয়া আমাদের দেহের জন্য ক্ষতিকারক নয়। দইয়ের প্রোবায়োটিক বৈশিষ্ট্য দেহের ভালো ব্যাকটেরিয়াগুলোর বৃদ্ধি ঘটায় ও খারাপ ব্যাকটেরিয়াগুলোকে হ্রাস করে। তাই বিশেষজ্ঞরা খাবারের সঙ্গে প্রতিদিন দই খাওয়ার পরামর্শ দেন। তবে চিনিযুক্ত দইয়ে লোকসানের পরিমাণই বেশি। চিনিবিহীন দই বা কার্ড আমাদের পেটকে ঠাণ্ডা রাখতেও কাজ করে।
সবুজ শাকসবজি
উপকারী খাবারের তালিকায় সবুজ শাক-সবজি থাকবেই। ভিটামিন সি, কে, এ, আয়রন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ শাক-সবজিগুলো নিয়মিত খেলে শরীরের অনেক জটিলতা রোধ করা যায়। এছাড়াও গবেষণায় দেখা গেছে, সবুজ শাক সবজি শুধু হৃদসমস্যার সমাধান করে না, ক্যানসারের মতো রোগের সঙ্গেও মোকাবেলা করতে সাহায্য করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।