ধর্ম ডেস্ক : ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীতে জীবন-জীবিকার স্বার্থে অনেক সময় ঋণ বা ধার করতে হয়। তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্যই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কারও কাছ থেকে নেয়া ঋণ পরিশোধ করতে হবে। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের আদেশ দিচ্ছেন আমানতসমূহ তার হকদারদের কাছে পৌঁছে দিতে। আর যখন মানুষের মধ্যে ফয়সালা করবে, তখন ন্যায়ভিত্তিক ফয়সালা করবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের কতইনা সুন্দর উপদেশ দিচ্ছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা। (সুরা নিসা, আয়াত: ৫৮)
অন্যদিকে, কারও কাছ থেকে ঋণ নিলে তা আদায়ের ক্ষেত্রে গড়িমসিতেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। হাদিসে এসেছে, আবূ হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ধনী ব্যক্তির (ঋণ আদায়ে) টালবাহানা করা জুলুম। (সহিহ বুখারি, ২২৪২)
এমনকি আল্লাহর রাস্তায় শহিদের সব গুনাহ মাফ হলে ঋণের বিষয়ে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনু আস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ঋণ ছাড়া শহিদের সব গুনাহই মাফ করে দেয়া হবে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪৭৩০)
আবার ঋণ আদায় না করে মারা গেলে যতক্ষণ না ওই ব্যক্তির পক্ষে কেউ ঋণ পরিশোধ না করে কিংবা এর জিম্মা না নেয়, ততক্ষণ ওই ব্যক্তির জানাজায় রাসুল (সা.) অংশ নিতেন না। অন্যদের সেই ব্যক্তির জানাজা পড়তে বলতেন।
হাদিস অনুযায়ী, আবদুল্লাহ ইবনু আবী কাতাদা তার বাবা আবূ কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, একবার রাসুল (সা.) এর কাছে জনৈক ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিকে সালাতুল জানাজার জন্য আনা হলো। তখন রাসুল (সা.) বললেন, তোমরা তোমাদের সাথীর সালাতুল জানাজা আদায় করে নাও। (আমি এতে শরিক হচ্ছি না) কারণ, তার জিম্মায় ঋণ রয়ে গেছে। তখন আবূ কাতাদা বললেন, এর ঋণ আমার জিম্মায়। তখন রাসুল (সা.) বললেন, তা আদায়ের অঙ্গীকারের সঙ্গে তো? এরপর তিনি নিজে ওই ব্যক্তির সালাতুল জানাজা আদায় করলেন। (তিরমিজী, হাদিস: ১০৬৯)
অন্যদিকে, ঋণ আদায় না করে মারা যাওয়া ব্যক্তির ঋণ যতক্ষণ পর্যন্ত না তার হয়ে কেউ আদায় করে, ততক্ষণ তার রুহ ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে। হাদিসে এসেছে, আবূ হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ঋণ পরিশোধ না করা পর্যন্ত মুমিনের রুহ ঋণের সঙ্গে লটকানো থাকে। (তিরমিজী, হাদিস: ১০৭৮; মেশকাত হাদিস: ২৯১৫)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।