জুমবাংলা ডেস্ক : পরিবার কিংবা সমাজের বিরোধ নিরসনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সমাধানের পথ থাকলেও তার ব্যতিক্রম ঘটনাও ঘটছে। তেমনি অসহায় ও দিনমজুর একটি পরিবারকে নিজেদের বানানো মনগড়া নীতিতে সমাজচ্যুত করার অভিযোগ উঠেছে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায়। পরিবারটির সঙ্গে যে কেউ কথা বললেই গুনতে হবে জরিমানা।
উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার অটোরিকশাচালক মইজ উদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে ঘটছে এই ঘটনা।
পরিবারটির কেউ মসজিদে নামাজ আদায়, বাচ্চাদের মক্তবে আররি পড়তে যাওয়া নিষেধসহ কেউ তাদের সঙ্গে কথা বললে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা হওয়ার বিধান করা হয়েছে।
এমন অবস্থায় গত তিন সপ্তাহ ধরে অসহায় এই পরিবারটি সামাজিক যোগাযোগবিহীন এক অমানবিক জীবন যাপন করছে।
অটোরিকশাচালক মইজ উদ্দিন বলেন, আমাদের স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়াকে ইস্যু করে এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী মানুষ তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য এই অমানবিক নির্যাতন চালাচ্ছে। আমাদের সঙ্গে কেউ কোনো কথা বলে না, আমার বাচ্চাদের মসজিদে যাওয়া নিষেধ করেছে, আমার গাড়িতে কেউ উঠে না, এই সমাজের কেউ আমাদের সঙ্গে কথা বললে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করার নিয়ম করেছে। আমি কিংবা আমার পরিবারের কেউ এই সমাজের কারও সঙ্গে কথা বললে আমাদেরকেও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
মইজ উদ্দিন আরও বলেন, আমার অভাব অনটনের সংসার। প্রায় সময়ই আমাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। পারিবারিক সমস্যা প্রায় প্রতিটি ঘরে। এরচেয়ে জঘন্য নানা ঘটনা সমাজে ঘটে। তাই বলে কাউকে এক ঘরে করে রাখার আইন আছে শুনিনি। আমরা গরিব ও অসহায় বলে এই জুলুম চালানো হচ্ছে।
সমাজের কারা আপনার ওপর এই জুলুমের নিয়ম করছে জানতে চাইলে মইজ উদ্দিন বলেন, যারা সমাজ চালায় ও বিত্তবান তারাই আমাদের এ অবস্থা করে রেখেছে। কোরবানি ঈদের আগে তারা আমাদের এক ঘরে করে দেয়। ঈদের সময় কেউ আমাদের এক টুকরো মাংস দেয়নি। এমনকি গরিব বলে সমাজ থেকে যে একটা ভাগ পাই- তা থেকেও তারা আমাদের বঞ্চিত করেছে। মিজানুর রহমান মিজান নামের একজন লোকের প্ররোচনায় আমার পরিবারকে একঘরে রাখা হয়েছে। আমি এই জুলুমের বিচার চাই।
এদিকে ছেংগারচর পৌরসভার সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বোরহান উদ্দিন জানান, তাদের একঘরে করে রাখা হয়েছে। আমি বলেছি তাদের অন্যায় থাকলে বিচার করা হবে। কিন্তু সমাজ থেকে বিতাড়িত করার কোনো আইন নেই। আমি তাদের এক মাসের সময় দিয়ে এসেছি। কিন্তু সমাজের লোকজন আমার কথা অমান্য করে এ কাজ করেছে।
মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন রনি বলেন, এটা অমানবিক ঘটনা। তারা অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একি মিত্র চাকমা জানান, কোনো ব্যক্তি বা পরিবারকে একঘরে করে রাখা আইন বহির্ভূত কাজ। ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ করলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।