চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে সবচেয়ে মৃত্যু বেশি হয়েছে জুলাই ও আগস্ট মাসে। আক্রান্তের সংখ্যাও বেশি। এই হার সেপ্টেম্বরে বাড়বে। সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাসে আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। তারা বলছেন, সিটি করপোরেশনের ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ঘাটতি। জনসম্পৃক্ততার পাশাপাশি নিতে হবে জোরালো পদক্ষেপ।
বাংলা বর্ষপঞ্জিতে বর্ষা পার হয়ে শরৎ এলেও প্রকৃতিতে এর প্রভাব পড়েনি। প্রায় প্রতিদিনই ঝরছে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি। এখানে সেখানে জমছে পানি, যেখান থেকে বিস্তার করছে এডিস মশা।
বছরজুড়ে ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া রোগী থাকলেও সম্প্রতি হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে এই সংখ্যা। শুরুতে জ্বর, পরে পেট ব্যাথা। বমি ও মাথা ব্যাথা নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন তারা। অনেককে যেতে হচ্ছে আইসিইউ পর্যন্ত।
এদিকে, ডেঙ্গু নিধনে সিটি করপোরেশনের তেমন কোনো কার্যক্রম দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ নগরবাসীর।
তারা বলছেন, সিটি করপোরেশন আগে যেমন মেশিন দিয়ে ওষুধ ছিটাতো। এখন আর তেমন দেয় না। ময়লা পানি জমে থাকে। ডেঙ্গু মশা সেখানেও হতে পারে। নিয়মিত ভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখলে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব এতোটা হতো না।
চলতি বছরে ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে মোট ৬১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আর ঢাকার বাইরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৮ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে।
তবে, ডেঙ্গুর টিকা আমদানি করাসহ ডেঙ্গু প্রতিরোধে সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম বাড়ানোর তাগিদ বিশেষজ্ঞদের।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত ডেঙ্গুর টিকাটি কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীদের জন্য সীমিতভাবে হলেও আমদানি বা প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে দেশে তৈরির একটি উদ্যোগ নেয়া হবে বলে প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু তা হয়নি।
এদিকে, শঙ্কা প্রকাশ করে কীটতত্ত্ববিদরা বলছে, বৃষ্টির পর জমে থাকা পানিতে বাড়ছে এডিস মশার ঘনত্ব। সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে বাড়তে পারে ডেঙ্গুর প্রকোপ।
কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, এ মাসে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার একটা ঝুঁকি তৈরি হবে। কারণ বৃষ্টি যখন থেমে যাবে ছোট বড় পাত্রগুলোতে জমা হওয়া পানিতে এডিস মশার প্রজনন হবে এবং ডেঙ্গু মৌসুম কিন্তু আবার শুরু হবে। আগস্ট মাসে কিছুটা কমে গেলেও আমাদের স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার কোনো সুযোগ নেই। সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে ডেঙ্গুর ঝুঁকি আরও বাড়ার আশঙ্কা আমরা দেখছি।
ডেঙ্গু ঠেকাতে মশক নিধনে জনসম্পৃক্ততার পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম বাড়ানোর বিকল্প নেই বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।