সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জে বেসরকারি ক্লিনিক এ্যাপোলো হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসা সেবা না দিয়েই রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে রোগীর স্বজনদের দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ভয়-ভীতি দেখানোর অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী রোগীর স্বামী। এ নিয়ে ভুক্তভোগী রোগীর স্বামী মো: আব্দুর রহিম বাদি হয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মমতাজ বেগম (৩৪) নামের এক নারী রোগী মুত্রথলীতে পাথর হওয়ার কারণে অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে যান। সেখানকার চিকিৎসক তার অপারেশন করে মূত্রথলীতে একটি পাইপ লাগিয়ে দেয় এবং অপারেশন বাবদ চল্লিশ হাজার টাকা নেয়। অপারেশনের দুই মাস পর পাইপ খোলার কথা থাকলেও চিকিৎসক জানান এক মাস পরই পাইপ খোলা যাবে। এক মাস পর পাইপ খোলা বাবদ এ্যাপোলো হাসপাতালের ম্যানেজার এনাম আলী ছয় হাজার টাকা নেয়। কিন্ত তাকে অপারেশন রুমে ঢুকিয়ে কিছুক্ষণ পরে বাইরে বের করে বলে পাইপ খুলে দেওয়া হয়েছে। এরপর তাকে অ্যাপোলো হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর প্রায় এক মাস পরে মমতাজ বেগমের অসুস্থতা বেড়ে শারিরীক অবস্থা অবনতির হলে তাকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে এক্স-রে করে দেখা যায় মমতাজ বেগমের মুত্রথলীতে থাকা পাইপটি অপসারণ করা হয়নি। এরপর সেই রিপোর্টটি নিয়ে অ্যাপোলো হাসপাতালে গেলে এমডি মোঃ তারিক উল হাসান তাদের ভুলের কথা স্বীকার করে এবং এ নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র দেখিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করেন।
ভুক্তভোগী রোগীর স্বামী মো: আব্দুর রহিম বলেন, আমার স্ত্রীর অপারেশনের প্রায় এক মাস পর পাইপ খুলে দেয়ার কথা বলে এ্যাপোলো হাসপাতালের ম্যানেজার এনাম আলী আমার কাছ থেকে ছয় হাজার টাকা নিয়েছে। কিন্ত আমার স্ত্রীর মূত্রথলীতে থাকা পাইপ খুলে দেয়নি। এ্যাপোলো হাসপাতালের লোকজন আমার সাথে প্রতারণা করে টাকা নিয়েছে। আমি এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে তারা আমাকে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখায়।
চিকিৎসা সেবা না দিয়েই অর্থ নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে মানিকগঞ্জ এ্যাপোলো হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ তারিক উল হাসান বলেন, টাকা নেওয়া হয়েছে সেটা ঠিক আছে। মেশিন ভাড়া বাবদ টাকা নেওয়া হয়েছে। ওই রোগী পরে আবার আসলে আর টাকা লাগবে না। তবে রোগীর স্বজনদের ভয়-ভীতি দেখানোর অভিযোগটি সত্য নয়।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাঃ মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী বলেন, বিষয়টা আমার জানা ছিলনা। আপনার কাছ থেকেই শুনলাম। তারা থানায় অভিযোগ করে আইনি সহায়তা চেয়েছে এটা ভালো। তবে আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে আমাদের যা করণীয় আমরা তা করবো।
এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রউফ বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আইনগত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।