জুমবাংলা ডেস্ক : রাজধানীতে বর্তমানে রাইডশেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ‘উবার’ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এর সেবা নিতে হলে ব্যবহার করতে হয় ‘উবার’ অ্যাপ। তবে অনেক উবার চালক এই অ্যাপের ব্যাবহার না করে খ্যাপেই সেবা দিয়ে থাকেন। আর এতে করে চালক এবং সেবাপ্রত্যাশীর কোনো তথ্য জমা থাকছে না অ্যাপটিতে। এর মধ্যে ঘটে যাচ্ছে হত্যা, ছিনতাইসহ নানান অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা! এমনই এক ঘটনার শিকার হন এক উবার চালক।
উবার চালক মো. মাঈনুদ্দিন অন্যান্য দিনের মতো বের হন রাইড শেয়ারিং সেবা দিতে। গত ১৯ মে রাত আনুমানিক ১২টা ৪০মিনিটে ভাড়ার কল পান তিনি। তাকে বলা হয় মিরপুর-১২ সিরামিকনের গেইেটের সামনে আসতে। কল পাওয়া মাত্রই তিনি সেখানে যান। গাড়িতে অজ্ঞাতনাম ৩ জন যাত্রী উঠে গাজীপুর চন্দ্রার উদ্দেশে রওনা করেন। এই যাত্রায় তিনি অ্যাপের ব্যাবহার না করে চুক্তিতে গন্তব্য নির্ধারণ করেন। গাড়িটি চন্দ্রায় পৌঁছালে তারা সেখানে আধা ঘণ্টার মতো অপেক্ষা করেন এবং পুনরায় সেই গাড়িতেই ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।
তবে রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টায় গাড়িটি যখন তুরাগ থানাধীন দিয়াবাড়ী মেট্রোরেল ২নং স্টেশনে পৌঁছায়, তখন তারা পেছন থেকে মাঈনুদ্দিননের চোখ, মুখ কাপড় দিয়ে বেধে বাম কাঁধে চাকু ধরে বাঁদিকে জোর করে গাড়ি থেকে ফেলে দেয়। পরে তার প্রাইভেটকার ও ১টি মোবাইল ফোন জোর করে ছিনিয়ে নেয়া হয়।
পরবর্তীকালে মো. মাঈনুদ্দিন বাদী হয়ে সেদিনই তুরাগ থানায় মামলা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ মামলাটির তদন্তে নামে। মামলাটির তদন্তভার গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগের উত্তরা জোনাল টিমের ওপর ন্যস্ত হয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগের উত্তরা জোনাল টিমের টিম লিডার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার বদরজ্জামান জিন্তুর নেতৃত্বে মামলাটি তদন্তকালে প্রযুক্তিগত কৌশলের মাধ্যমে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার ও লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
ঢাকার পল্লবী ও রূপনগর থানা এলাকা হতে ছিনতাইকারী চক্রের ৩ সদস্যকেই গ্রেফতার করা হয়। ছিনতাইকৃত প্রাইভেটকার ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- আবু ছালেক জুয়েল (৩৩), মো. মিজানুর রহমান (৩৫), সোহাগ হাওলাদার (৩৬)।
রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) এ সংক্রান্ত এক ব্রিফিংয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন,
ঢাকা শহরে উবার অনেক জনপ্রিয় একটি প্ল্যাটফর্ম। কিন্তু কিছু ছিনতাইকারী উবারের সেবা নেয়ার কথা বলে কল করে। পরে তারা গাড়িটা ছিনতাই করে। এমনই এক চক্রের তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যারা উবার ছিনতাই করে, তারা সেই উবার দিয়ে আবারও ছিনতাই করে। উবার চালকের গাড়ি এবং মোবাইল দুটোই ফিরে পাওয়া গেছে। তবে অ্যাপে না গিয়ে চুক্তিতে যাওয়ার কারণে কোনো তথ্য ছিল না। তাই যাত্রীদের এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
গাড়ি এবং মোবাইল দুটোই ফিরে পেয়ে মাঈনুদ্দিন সেদিনের ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, ‘আমি থানায় সঙ্গে সঙ্গেই মামলা করি। পুলিশের প্রতি আমরা বিশ্বাস ছিল। আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া গাড়ি এবং মোবাইল ফিরে পেয়েছি। আজ আমি অত্যন্ত আনন্দিত।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।