আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দাগী আসামীর জন্য সশস্ত্র প্রহরার ব্যবস্থা থাকে। আবার নামকরা কোনও ব্যক্তিত্বের জন্যও কড়া নিরাপত্তার আয়োজন করা হয়। অনেক সময় দামী কোনও জিনিস নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও একই ধরনের ব্যবস্থা দেখা হয়। তবে মধ্যপ্রদেশের এক জেলায় স্রেফ একটা গাছকে পাহারা দেয় চার বন্দুকধারী। এক বছরে ওই গাছের পরিচর্যা করতে প্রায় ১২ লক্ষ টাকা খরচ করে সরকার।
কথা বলছি, মধ্যপ্রদেশের সালামতপুর এলাকার বিখ্যাত বোধিবৃক্ষ সম্পর্কে। এই গাছটির জন্যই ২৪ ঘন্টা পুলিশি প্রহরার ব্যবস্থা রেখেছে মধ্যপ্রদেশ সরকার। শুধু তাই নয়, প্রতি বছর গাছটির পরিচর্যা করতে ১২ লক্ষ টাকা খরচ করে সে রাজ্যের সরকার। কিন্ত কী এমন মাহাত্ম্য আছে ওই গাছের?
আসলে, এই গাছটি ভগবান গৌতম বুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত বোধিবৃক্ষের অংশবিশেষ। কথিত আছে, প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে ভগবান বুদ্ধ উত্তরভারতের একটি স্থানে একটি গাছের নীচে বসেই মোক্ষ লাভ করেছিলেন। সেই থেকেই প্রচলিত হয়ে যায়, ওই গাছের নীচে বসে একমনে প্রার্থনা করলে অবশ্যই ফলাফল মিলবে। ধীরে ধীরে গাছটির নামই হয়ে যায় ‘বোধিবৃক্ষ’। সম্রাট অশোক তাঁর রাজত্বকালে এই পবিত্র বোধিবৃক্ষের পাশে একটি মন্দিরও তৈরি করে দেন। একইসঙ্গে তখন তিনি বিশ্ব জুড়ে বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার করছেন। সেই সূত্রেই এই বোধিবৃক্ষের একটি শাখা শ্রীলঙ্কার তৎকালীন রাজাকে উপহার হিসেবে পাঠিয়ে ছিলেন অশোক। ভক্তিভরে শ্রীলঙ্কার রাজধানীতে সেই গাছের ডালটিকে স্থাপন করেছিলেন তিনি। তারপর কেটেছে অনেকটা সময়। বছর দশেক আগে, অর্থাৎ ২০১২ সালের মঝামাঝি শ্রীলঙ্কা থেকে বোধিবৃক্ষের একটি শাখা নিয়ে ভারতে আসেন শ্রীলঙ্কার তৎকালীন রাষ্ট্রপতি। তিনিই মধ্যপ্রদেশের সালামতপুরের কাছে বোধিবৃক্ষের শাখাটি রোপন করেন। সেইসময় সে-রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
একে তো ভগবান বুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত গাছ। তার উপর প্রতিবেশী দেশের দেওয়া উপহার। সব মিলিয়ে বোধিবৃক্ষ রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক দুদিক দিয়েই গুরুত্বপূর্ণ। এর পরিচর্যার কথা তো সরকারকে ভাবতেই হবে। তাই এই পাহারার ব্যবস্থা। গাছটির যেন কোনোভাবেই ক্ষতি না হয় সে ব্যাপারে কড়া নজর রাখে সে রাজ্যের সরকার। দুবেলা নিয়ম করে গাছটিতে জল দেওয়া হয়। তবে বর্তমানে গাছটি থেকে নাকি ক্রমশ পাতা ঝরে যাচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, পরিচর্যার গাফিলতির জেরেই এমনটা হয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে সরকারের তরফে এখনও তেমন কিছুই কিছু জানানো হয়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।