সোহাগ হাওলাদার : শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতার ব্যানারে এক আওয়ামী পরিবারের সদস্যরা টেংগুরি মাদ্রাসা মাঠে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করেছে। যে মাহফিলে প্রধান অতিথি করা হয়েছে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ডা: দেওয়ান মো: সালাউদ্দিন বাবুকে। তবে এলাকাবাসি ও স্থানীয় ওলামা পরিষদের নেতা-কর্মীরা মাদ্রাসা মাঠে ওয়াজ মাহফিল বন্ধের দাবী জানিয়ে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
বুধবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে উলামা পরিষদ শিমুলিয়া ইউনিয়ন শাখার সভাপতি হাফেজ মাওলানা মিজানুর রহমান ও সাধারন সম্পাদক মুফতি আবু বকর বিন আ: মজিদ সাক্ষরিত এ অভিযোগ দেওয়া হয়।
এলাকাবাসি জানায়, ওয়াজ মাহফিলের প্রথম ব্যানারে জামিয়াতুস সাকিনা আল ইসলামিয়া মাদ্রাসারা নাম দিয়ে ব্যানার ফেস্টুন করে প্রচার করতে থাকে। যে ব্যানারে সভাপতিত্বের জায়গায় নাম লেখেন শিমুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারন সম্পাদক মোবারক হোসেনের। পরবর্তীতে দ্বিতীয় ব্যানারে শিমুলিয়া ইউনিয়ন ছাত্র-জনতা ও জামিয়াতুস সাকিনা আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার নামে ব্যানার করে প্রচার করতে থাকেন।
যেখানে সভাপতিত্বের স্থানে নাম লেখেন কোনাপাড়া দারুল উলুম আলিম মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ও আওয়ামী পন্থী মাওলানা মাহবুবুল হাসান। যার এক ছেলে আসাদুজ্জামান আসাদ শিমুলিয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও পূর্বে ইউনিয়ন ছাত্র লীগের সহ-সভাপতি ছিল, বড় ছেলে আক্তারোজ্জামান (আক্কাস) গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতিতে আওয়ামী লীগের ব্যানারে সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছিল। এরপরেও আওয়ামী প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক টেংগুরি মাদ্রাসা মাঠে ওয়াজ মাহফিল করার জন্য সকল আয়োজন করে যাচ্ছে।
স্থানীয় হাজী রাসেল জানান, ওয়াজ মাহফিল করার নামে আবু জাফর নামের এক ব্যক্তি সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ধর্মীয় অনুভূতিকে পুজি করে প্রতি বছর দুই তিনটা ওয়াজ মাহফিল করে থাকে এবং লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এছাড়া ওই ওয়াজের প্রথম ব্যনারে সভাপতির নাম দেন এক বিএনপি নেতার। পরবর্তীতে নাম পরিবর্তন করে ছাত্র জনতার ব্যানারে সভাপতিত্বের নাম দেন এক আওয়ামী পন্থী মাওলানা মাহবুবুল হাসানকে। যে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে মোনাজাত করায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত হয়েছিল। তার এক ছেলে স্বেচ্ছাসেবক লীগের পদধারী নেতা।
কোনাপাড়া টেংগুরি ক্বওমী মাদ্রাসা ও এতিমখানার প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা মো: মুজিবুর রহমান জানান, এ অঞ্চলটি শিল্প এলাকা হওয়ায় জামিয়াতুস সাকিনা আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার মালিক পরিচয়ে আবু জাফর নামের এক ব্যক্তি প্রতি বছর শিমুলিয়া অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ২/৩ বার ওয়াজ মাহফিলের মাধ্যমে মানুষকে ধোকা দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এমনকি মাদ্রাসার বই বানিয়ে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে টাকা কালেকশন করে থাকে।
তিনি আরো জানান, এদিকে টেংগুরি মাদ্রাসাকে ঘিরে ৫টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং এখানে কমিটি রয়েছে। প্রতিষ্ঠান থেকে বা কমিটি থেকে কোন অনুমতি না নিয়ে এক আওয়ামী পন্থী প্রিন্সিপালকে সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে জোরপূর্বক মাদ্রাসা মাঠে ওয়াজ মাহফিল করবে। যা আগামী ১৫ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে। আমরা সহ স্থানীয় ওলামা পরিষদের দাবী এখানে যেন কোন আওয়ামী পন্থীর ওয়াজ মাহফিল না হয়। ওয়াজ মাহফিল বন্ধে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এব্যাপারে জামিয়াতুস সাকিনা আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার মালিক পরিচয়দানকারী আবু জাফরের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু বকর সরকার জানান, এলাকাবাসি এবং ওলামা পরিষদের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। তবে ওই মাঠে ওয়াজ মাহফিল করার কোন অনুমতি দেয়া হয়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।