জুমবাংলা ডেস্ক : ঢাকার সাভারে চুরির অপবাদ দিয়ে শিশু গৃহকর্মীকে ছুরি দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নির্যাতনের অভিযোগে এক চিকিৎসক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার বিকেলে সাভার পৌরসভার উত্তর রাজাশন এলাকার একটি বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া চিকিৎসক দম্পতি হলেন বরগুনা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ৪৪তম বিসিএসের গাজী ইসমাইল হোসেন ও তার স্ত্রী মাহমুদা খাতুন পরশ।
স্ত্রীসহ সরকারি কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার পরিদর্শক নয়নকার কারকুন। এর আগে দুপুরে ভুক্তভোগী গৃহকর্মীকে চুরির অপবাদ দিয়ে তার মা-বাবার হাতে তুলে দেওয়ার পর নির্যাতনের বিষয়টি প্রকাশ পায়।
ভুক্তভোগী শিশুটির নাম মিম (১০)। সে সাভারের রাজাশন এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেনের মেয়ে।
মিমের মা কুলসুম বেগম জানান, অভাবের তাড়নায় এক বছর আগে ওই চিকিৎসক দম্পতির বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে নিজের মেয়েকে পাঠানো হয়। সামান্য পান থেকে চুন খসলেই তাকে নির্যাতন করা হয়। ঠিকমতো বেতনও দেওয়া হতো না। সবশেষ চুরির অপবাদ দিয়ে তার ওপর চালানো হয় নির্যাতন।
মিম জানায়, একটি ছুরি দিয়ে তার সারা শরীরে খুঁচিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। এ ছাড়াও ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে পায়ে ও মাথায় আঘাত করা হয়।
মিমের ভাষ্যমতে, ‘চিকিৎসকের স্ত্রী পরস ম্যাডাম আমাকে ডেকে বলেন, তিনি দুই হাজার টাকা খুঁজে পাচ্ছেন না। টাকাটা আমি চুরি করেছি—এমন অপবাদ দিয়ে আমাকে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে চিৎকার করলে আমার মুখে কাপড় গুঁজে দেওয়া হতো। শেষ-মেষ দুপুরে আমার বাবাকে ডেকে তার হাতে আমাকে তুলে দেওয়া হয়।’
শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে চিকিৎসক দম্পতিকে গ্রেপ্তার। ছবি: সংগৃহীত
মিমের বাবা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মেয়ের এমন অবস্থা দেখে আমি দিশেহারা হয়ে পড়ি। এ সময় স্যার ও ম্যাডাম আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন, এ বিষয় নিয়ে কাউকে কিছু বললে বড় ধরনের ক্ষতি হবে।’
তিনি জানান, এমন অবস্থা দেখে স্থানীয়রাই মিমকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। বর্তমানে ওই হাসপাতালেই মিম চিকিৎসাধীন।
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা জানান, ভুক্তভোগীর সারা শরীরে নতুন ও পুরাতন ভোতা এবং ধারালো অস্ত্রের ক্ষত রয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সে হাসপাতালে ভর্তি থাকবে।
সাভার মডেল থানার পরিদর্শক নয়ন কারকুন বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে শিশুটিকে দেখতে গিয়েছি। পরে আমার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ওই চিকিৎসক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে মিমের মা বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা করেন ওই চিকিৎসক দম্পতির বিরুদ্ধে।’
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ জামান জানান, এ বিষয়ে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।