বিনোদন ডেস্ক : কন্নড় ভাষার সিনেমা ‘কানতারা’। গত ৩০ সেপ্টেম্বর মুক্তির পরপরই বক্স অফিসে ঝড় তুলে এটি। এমনকি মুক্তির এক মাস পরেও, বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির আরো অনেক সিনেমাকে ছাপিয়ে ভারত জুড়ে এখনও বক্স অফিস দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কানতারা।
ইতিমধ্যে বহুল ব্যবসাসফল ‘কেজিএফ’ এবং ‘বাহুবলি টু’ সিনেমার রেকর্ড ভেঙেছে দিয়েছে এই সিনেমা। কর্ণাটক রাজ্যে সবচেয়ে বেশি টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে নতুন রেকর্ড গড়ে এটি। কেবল কর্ণাটক রাজ্যে এ পর্যন্ত সিনেমাটির ৭৫ লাখের বেশি টিকিট বিক্রি হয়। এর আগে এই রাজ্যে ‘কেজিএফ’ সিনেমার এত বেশি টিকিট বিক্রি হয়নি।
এছাড়া কানতারা সিনেমাটি ভারতে বাহুবলি টু সিনেমার রেকর্ডও ভেঙেছে। মুক্তির পঞ্চম সপ্তাহে কানতারা সিনেমার আয় ৬৫ কোটি রুপি। ‘বাহুবলি টু’ পঞ্চম সপ্তাহে আয় করেছিল ৪০ কোটি রুপি। এখন পর্যন্ত শুধু ভারতে ‘কানতারা’ সিনেমার মোট আয় দাঁড়িয়েছে ২৭৫ কোটি রুপি। এগিয়ে যাচ্ছে ৩০০ কোটি রুপির দিকে। আর বিশ্বব্যাপী সিনেমাটি আয় করেছে ৩০৩ কোটি রুপি।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর কর্ণাটকের ২৫০টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় কানতারা। একই সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য এবং অস্ট্রেলিয়ায় মুক্তি পায় এটি। কন্নড় ভাষায় সাফল্যের পর গত ১৪ অক্টোবর হিন্দি, ১৫ অক্টোবর তেলেগু ও তামিল ভাষায় মুক্তি পায় এটি। প্রথমে হিন্দি সংস্করণটি ভারতের ৮০০টির বেশি স্ক্রিনে মুক্তির ঘোষণা করা হয়েছিল; পরে এটি ২ হাজার ৫০০ স্ক্রিনে মুক্তি পায়।
কানতারা মাত্র ১৬ কোটি রুপি বাজেটের একটি আঞ্চলিক সিনেমা। অথচ ভারত জুড়ে বক্স অফিসে সাফল্যের পাশাপাশি, সমালোচকরা প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন এই সিনেমাটিকে। আইএমডিবিতে এর রেটিং ৯ দশমিক ১।
কিন্তু স্বল্প বাজেটের সিনেমাটি কী এমন বিশেষ উপহার নিয়ে হাজির হলো দর্শক-সমালোচকদের জন্য? ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিনেমাটির চিত্রনাট্য, প্রোডাকশন ডিজাইন, অ্যাকশন দৃশ্য, সিনেমাটোগ্রাফি থেকে সংগীত—সবকিছুই নজর কেড়েছে দর্শক-সমালোচকদের।
কানতারা’ শব্দের অর্থ গহিন জঙ্গল। সিনেমাটিতে মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির যোগসূত্রের কথা বলা হয়েছে। এর গল্প দুই ভাগে বিভক্ত। প্রথম ভাগের প্লট ২০০ বছর আগের। ১৮৪৭ সালে একজন রাজা তার মানসিক শান্তির খোঁজে বের হন এবং শেষ পর্যন্ত একটি বনে গিয়ে পৌঁছেন। সেখানে পানজুরলির সঙ্গে তার দেখা হয়। এ পৌরাণিক সত্তাটি বন, বনে বসবাসকারী মানুষ ও অন্য প্রাণীদের সুরক্ষা দেয়। রাজা এ পানজুরলিকে নিয়ে আসতে চান নিজের সঙ্গে। বদলে বনের অধিবাসীদের ওই বনের অধিকার প্রদান করেন। এর পরের গল্পটি ১৯৯০ সালে চলে আসে। ফরেস্ট অফিসাররা এ সময় বনটিকে রিজার্ভ ফরেস্ট করার সিদ্ধান্ত নেন। সে সময় ওই রাজার উত্তরপুরুষ বনের অধিকার লাভ করে।
সিনেমাটি ‘ভূত কলা’ নামের একটি আচারের উপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছে। স্থানীয়দের বিশ্বাস হলো, যিনি এ আচার পালন করেন, তিনি খোদ ঈশ্বরে পরিণত হন। ফলে এ আচার পালনকারীকে একদিকে জনতা ভয় করে এবং সে ভয়ের সঙ্গে যুক্ত হয় সম্মান। মানুষ বিশ্বাস করে ওই ব্যক্তি তার আশপাশের মানুষের সব সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম। বাস্তবে ভারতের বেশ কিছু রাজ্যে এ ধরনের আচার প্রচলিত আছে
অর্থাৎ এই সিনেমা স্থানীয় সংস্কৃতি এবং তার প্রতি মানুষের বিশ্বাস ঘিরে। পাশাপশি ক্ষমতার দ্বন্দ্ব দেখানো হয়েছে। সঙ্গে ভরপুর অ্যাকশন তো রয়েছেই। কানতারা সিনেমার অলরাউন্ডার কন্নড় তারকা ঋষভ শেঠি। তিনিই সিনেমাটির চিত্রনাট্যকার, পরিচালক ও অভিনেতা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।