লাইফস্টাইল ডেস্ক : কলা খেলে কি সর্দি লাগার আশঙ্কা বাড়ে? বর্ষায় কি কলা খাওয়া ছেড়ে দেওয়া উচিত? আসুন জেনে নেওয়া যাক চিকিৎসকের পরামর্শ।
সকাল-বিকেল, দিনের যে কোনও সময়ই হঠাৎ করে নামছে বৃষ্টি। আর এমন অচকিত বৃষ্টিমুখর আবহাওয়াতেই সক্রিয় হয়ে উঠছে একাধিক ভাইরাস। আর এইসব ভাইরাসের কবলে পড়েই সর্দি, কাশির ফাঁদে পড়ছেন অনেকে। তাই তো এই ঋতুতে সকলকেই সাবধান হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
মুশকিল হল, বিশেষজ্ঞদের এমন সাবধানবাণী শোনার পর অনেকেই কলার মতো একটি উপকারী ফলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছেন। তাঁদের কথায়, বর্ষায় কলা খেলেই নাকি ‘কমন কোল্ডের’ ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা বাড়বে! তাই এই ঋতুতে এই ফল এড়িয়ে চলাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
তবে সাধারণ জনগণের মনে উঁকি দেওয়া এই ধারণার কি আদৌ কোনও সত্যতা রয়েছে? নাকি গোটা বিষয়টাই ভুয়ো চিন্তাধারা? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে আমরা যোগাযোগ করেছিলাম কলকাতা শহরের বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ মীনাক্ষী মজুমদারের কাছে। তিনিই আমাদের এই বিষয়ে বিশদে জানালেন।
কলা খেলে কি ঠান্ডা লাগে?
এই প্রশ্ন শুনে মীনাক্ষী মজুমদার হেসে উত্তর দিলেন, না, কলা খাওয়ার সঙ্গে ঠান্ডা লাগার কোনও সম্পর্ক নেই। তাই কমন কোল্ড থেকে বাঁচতে গিয়ে কলার থেকে দূরত্ব তৈরি করবেন না। এই কাজটা করলেই আপনার শরীরে একাধিক ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি তৈরি হতে পারে।
তবে যাঁদের ইতিমধ্যেই ঠান্ডা লেগে রয়েছে, তাঁরা কলা খাবেন না। কারণ কলা খেলে মিউকাস সিক্রেশন বাড়তে পারে। ফলে সর্দি, কাশিতে কলা খেলে বুকে কফ জমার আশঙ্কা বাড়ে।
গুণবতী কলা
কলায় রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে কার্ব, ফাইবার, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়ামের মতো একাধিক উপকারী উপাদান। তাই তো একাধিক রোগের ফাঁদ এড়িয়ে চলতে চাইলে কলার শরণাপন্ন হতেই হবে।
আর সবথেকে বড় কথা, একটি কলা থেকে মেলে প্রায় ৮৯ ক্যালোরি। ফলে দেহে এনার্জির ঘাটতি মেটাতে চাইলে নিয়মিত কলা খান। এতেই আপনার শরীরের ব্যাটারি ফুল চার্জ হয়ে যাবে।
হার্টের রোগে মহৌষধি
কলায় রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম। আর এই খনিজ কিন্তু হাই প্রেশারকে বাগে আনতে পারে। ফলে সুস্থ থাকে হার্ট। এমনকী এড়ানো যায় হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেলিওরের মতো অসুখ।
শুধু তাই নয়, ব্লাড প্রেশারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে স্ট্রোকের মতো ভয়াবহ রোগের ফাঁদও এড়িয়ে চলা সম্ভব হবে। তাই তো সুস্থ-সবল জীবন কাটানোর ইচ্ছে থাকলে নিয়মিত কলা খান।
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা মিটবে
আমাদের মধ্যে অনেকেই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় নিত্যদিন ভোগেন। তবে কী ভাবে এই সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি মিলবে তা ঠাওর করতে পারেন না! কিন্তু চিন্তা নেই, আপনার এহেন সমস্যার সমাধান করে দিতে একটা কলা। কারণ কলায় রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার। আর এই উপাদান মলকে নরম করার কাজে সিদ্ধহস্ত। তাই তো কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীরা রোজ একটা করে কলা খেতে ভুলবেন না যেন!
সাবধান, যারা ভুলেও কলা খাবেন না!
মুশকিল হল, কলার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কিছুটা বেশি। তাই তো কলা খাওয়ার পর রক্তে সুগার বাড়তে পারে। এই কারণেই হাই ব্লাড সুগারের রোগীদের কলা খাওয়ায় বারণ থাকে। এছাড়া কিডনির রোগীরাও পটাশিয়াম সমৃদ্ধ কলা খাবেন না। তাতে সমস্যা আরও বাড়বে বৈকি! তাই সাবধান হন।
Disclaimer: প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।