আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বেয়ার গ্রিলসকে চেনে না, এমন মানুষ খুব কমই আছে। স্বাভাবিক দৃষ্টিতে যা আমাদের কাছে অখাদ্য, দুর্গম পরিবেশে বেঁচে থাকতে সেগুলোই খেয়ে থাকেন বিশ্ববিখ্যাত এই অ্যাডভেঞ্চারার।
সম্প্রতি লাইফস্টাইল ম্যাগাজিন জিকিউকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বেয়ার গ্রিলস জানিয়েছেন তিনি নাকি সবজিবিরোধী মানুষ। এই সাক্ষাৎকার নিয়ে বেশ সমালোচনা হচ্ছে এখন।
কখনো সাপ, ব্যাঙ, কখনো–বা নানা জাতের পোকামাকড়—বাদ যায়নি হরিণ বা হাতির বিষ্ঠা, এমনকি নিজের মূত্রও! এসবেরই স্বাদ চেখে দেখেছেন বিশ্বখ্যাত অ্যাডভেঞ্চারার বেয়ার গ্রিলস। কারণ, তাঁর ‘বিশেষ ডায়েট’ এসব থাকেই। এখানে যেসব ‘অখাদ্যের’ কথা বলা হলো, বেয়ার গ্রিলস কিন্তু রোজ এগুলো খান না। শুধু তাঁর অ্যাডভেঞ্চার শো ‘ম্যান ভার্সেস ওয়াইল্ড’-এর বিভিন্ন দুঃসাহসিক অভিযানে, এগুলো খেতে দেখা গিয়েছে। প্রতিকূল পরিবেশে বেঁচে থাকার কৌশল শেখানোর অংশ হিসেবে তিনি এই কাজ করেন।
মজার ব্যাপার কি জানেন? বেয়ার গ্রিলস যতটা না দুর্গম পরিবেশে আটকে পড়লে সেখানে কীভাবে বেঁচে থাকা যায় বা সেখান থেকে কীভাবে ফিরে আসা যায়, তার কলাকৌশল শেখানোর জন্য বিখ্যাত, ততটাই কুখ্যাত তাঁর এই বিচিত্র ‘অখাদ্যতালিকা’র জন্য। বাঁচতে বা ফিরতে কী করলেন, সেই কাহিনির চেয়ে বেশি আলোচনা হয় সেখানে তিনি কী খেলেন তা নিয়ে।
সেই বেয়ার গ্রিলস সম্প্রতি পুরুষদের লাইফস্টাইলবিষয়ক ম্যাগাজিন জিকিউকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, কোভিড-১৯–এ আক্রান্ত হলে তিনি কিছু সময়ের জন্য ভেগান হয়েছিলেন; তবে এখন তিনি সবজি একদমই সহ্য করতে পারেন না। নিজেকে এখন তিনি সবজিবিরোধী মানুষ হিসেবে দাবি করছেন। শুধু তা–ই নয়, সেই সাক্ষাৎকারে তিনি কোনো প্রমাণ ছাড়াই বলেছেন, ‘কাঁচা শাকসবজি সত্যিই কারও জন্য ভালো নয়।’ তিনি বিশ্বাস করেন যে মানবদেহ বিবর্তনের কারণে মাংস খাওয়ার জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। তাঁর এই বেফাঁস মন্তব্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ তোলপাড় শুরু হয়েছে।
স্বাভাবিকভাবেই পুষ্টিবিদেরা বেয়ার গ্রিলসের এই ভিত্তিহীন মন্তব্যের বিরোধিতা করেছেন। ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস ফর সায়েন্স অ্যান্ড সোসাইটির একটি পোস্টে পুষ্টিবিদ হেইডি বেটস বলেন, ‘শাকসবজি খেলে কিডনিতে ব্যথা হতে পারে বা এগুলো শরীরে রোগ সৃষ্টি করে, এর কোনো প্রমাণই নেই। বরং এর উল্টোটা সত্য। শাকসবজি খেলে হৃদ্রোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, স্থূলতা ও নির্দিষ্ট ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি হ্রাস পায়। হাজার হাজার গবেষণায়ও তা প্রমাণিত হয়েছে।’
সেলিব্রিটিদের জীবনযাত্রা নিয়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। অনেক ভক্ত আছে, যারা তাঁর পছন্দের তারকা কী করেন, কী পরেন অথবা কেমন ডায়েট মেনে চলে, তা অনুসরণ করার চেষ্টা করে। তাই বেয়ার গ্রিলসের মতো একজন বিখ্যাত সেলিব্রিটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ‘অযৌক্তিক’ মন্তব্য করলে, তার মন্দ প্রভাব পড়ার বড় আশঙ্কা থাকে। এ জন্য পুষ্টিবিদেরা বেয়ার গ্রিলসের ওপর যথেষ্ট বিরক্তও হয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।