সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জে পূর্বশত্রুতার জেরে অসহায় ও দরিদ্রদের মাঝে ভিজিএফ এর চাউল বিতরণের সময় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল মোল্লাকে (৬৫) প্রকাশ্যে পিটিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা।
সোমবার (২৬ জুন) দুপুরে জেলার সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সাতজনকে আসামী করে সোমবার রাতে সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ইউপি চেয়ারম্যান। এরপর এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আহত আব্দুল জলিল মোল্লা ভাড়ারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি ভাড়ারিয়া এলাকার মৃত দলিল উদ্দিনের ছেলে।
অভিযুক্তরা হলেন,একই এলাকার জয়নাল মিয়ার ছেলে মোশারফ হোসেন (৩২), আব্দুল মান্নান (৩৫), আক্তার হোসেন (৪০) একই এলাকার মৃত উমেদ আলীর ছেলে মনির হোসেন ওরফে ছকেল (৫৫), মৃত আইন উদ্দিন মোল্লার ছেলে ফজলু মোল্লা (৩৫), মৃত ওজন মোল্লার ছেলে শামসুল মোল্লা (৬৯) ও মৃত হাসেম আলীর ছেলে আক্তার হোসেন (৩৭)।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,কাবিখা প্রকল্পের আওয়ায় সোমবার সকালে সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের ভাড়ারিয়া পাকারাস্তা হতে শিল্পী আক্তারের বাড়ি পর্যন্ত পায়ে হাটার রাস্তার মাটি ভরাটের কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু ওই রাস্তার জমি নিজেদের দাবি করে চেয়ারম্যানকে মাটি ভরাটের কাজ বন্ধ করে আলোচনা করে মাটি ভরাটের কথা বলেন মনির হোসেন ওরফে ছকেল ও মোশারফ হোসেনসহ অভিযুক্তরা। এরপর দুপুরে ভিজিএফ এর চাউল বিতরণের সময় ইউনিয়ন পরিষদের গিয়ে মাটি ভরাটের বিষয়ে জানতে চায় অভিযুক্তরা। তখন চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদের ভিতরে অপেক্ষা করতে বললে অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে প্রকাশ্যে চেয়ারম্যানের কিল ঘুষি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে আহত হয়ে মাটিতে পরে গেলে স্থানীয়রা চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ভুক্তভোগী আব্দুল জলিল মোল্লা জানান,স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে পায়ে হাটার ওই রাস্তায় সোমবার সকালে মাটি ভরাটের কাজ শুরু করা হয় এবং পায়ে হাটার ওই জায়গা অভিযুক্তদের দাবি করে অভিযোগ করায় প্রেক্ষিতে মাটি ভরাটের কাজ বন্ধ রাখা হয়। এরপর বিকেলে বসে বিষয়টি সমাধানের কথা হয়। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদের এসেই আমার সাথে কথা কাটাকাটি হয় এবং এক পর্যায়ে তারা আমার ওপর হামলা করে। হামলার পর পালিয়ে যাওয়ার সময় একজনকে আটক করে গ্রাম পুলিশ।
তবে ঘটনার পর অভিযুক্তরা পলাতক থাকায় অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয় নি।
মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক বদরুল আলম চৌধুরী জানান, তাকে জরুরী বিভাগের নিয়ে আসা হলে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ও বাম চোখ মারাত্মকভাবে জখম হয়। কিন্তু ডাক্তার না থাকায় তাকে বেসরকারি একটি ক্লিনিকের পরীক্ষা-নিরিক্ষার জন্য পাঠানো হয়। কারণ আঘাতে তার বাম চোখ গুরুত্বরত জখম হয়েছে এবং চির দিনের জন্য চোখ নষ্টও হয়ে যেতে পারে বলেও তিনি জানান।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ সরকার জানান, এঘটনায় জড়িত সন্দেহে মনির হোসেন ওরফে ছকেল নামের এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। ভুক্তভোগী চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা ও তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।